নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৯ জানুয়ারি, ২০১৮

শিশুদের শীতজনিত রোগ বাড়ছে

শীতের তীব্রতা বাড়ছে, তার সঙ্গে বাড়ছে শিশুদের শীতজনিত রোগ। এক বছরের মেয়ে মৌসুমিকে নিয়ে আশুলিয়া থেকে ঢাকা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে অপেক্ষা করছিলেন মা আমেনা খাতুন। একটু পরপর মেয়ের নাক মুছিয়ে দিচ্ছিলেন। তিন দিন ধরে মেয়ের ঠান্ডা লেগেছে। আমেনা বলেন, ‘বাড়ির কাছের হাসপাতালের ওষুধ খাওয়াইছিলাম, কিন্তু ঠান্ডা কমে না। নিউমোনিয়া হয়ে যায় কি না, সেই ভয় লাগতাছে। তাই নিয়া আসছি।’

আমেনা খাতুনের মতো অনেকেই শিশুর ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভিড় করছেন। চার মাসের রাসেল হোসেনের পুরো শরীর গরম কাপড়ে জড়ানো। জ্বর-কাশি কমছে না। দুই দিন থেকে ডায়রিয়াও। চিকিৎসক ভর্তি করাতে বলেছেন। রাসেলের মা-ও ঠান্ডায় অসুস্থ। বাবা মোসাদ্দেক হোসেন ছেলেকে নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘এই শীত বড়-ছোট মানে না। এমন হইতে থাকলে সবাই অসুখে পড়ব।’

গত কয়েক দিনের ঠান্ডাটা এমনই যে, বাইরে বের হলে মনে হচ্ছে কনকনে বাতাস যেন শরীরে আঁচড় কাটছে। শীত নেই শীত নেই বলে কিছুটা আক্ষেপ ছিল অনেকের। কিন্তু শীত আসতেই বয়ে যাচ্ছে শৈত্যপ্রবাহ। ঘর থেকে বের হতে গেলেই গায়ে কয়েক পরতে কাপড় জড়াতে হচ্ছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে শীতজনিত নানা ধরনের রোগ। এর মধ্যে শিশুদের অবস্থা বেশ নাজুক। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে ঠান্ডাজনিত রোগও বাড়বে।

ঢাকা শিশু হাসপাতালে গত সাত দিনে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছে প্রায় ১০০ শিশু। হাসপাতালের পরিচালক মো. আবদুল আজিজ বলেন, ‘এখন যেই শীত পড়ছে তার প্রভাব পড়বে তিন-চার দিন পর। তখন ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে।’ তিনি বলেন, যারা মূলত শীতকে ভালোভাবে নিবারণ করতে পারে না, সে ধরনের পরিবারের শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। এ সময়ে অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়ে যায়। শীত থেকে শিশুদের বাঁচাতে পরিবারের সচেতনতার কথা বলেন তিনি।

সতর্ক থাকতে এ পরিচালক কিছু পরামর্শ দেন : সূর্য ডোবার আগে ও পরে ঘর যথাসম্ভব গরম রাখতে হবে। ধুলাবালি-ধোঁয়া থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে। হালকা কুসুম গরম পানি খাওয়াতে হবে এবং কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে হবে। বিশুদ্ধ খাবারের পাশাপাশি তরলজাতীয় খাবার গরম করে খাওয়াতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া যাবে না।

* জ্বর হলে শরীর মুছে দিতে হবে। অ্যালার্জি থেকে রক্ষা পেতে পরিষ্কার কাপড় পরাতে হবে এবং ঘর পরিষ্কার রাখতে হবে।

বারডেম হাসপাতালের শিশু বিভাগের সাবেক প্রধান ও শিশুবিশেষজ্ঞ তাহমিনা বেগম শিশুদের নিউমোনিয়ার লক্ষণ সম্পর্কে বলেন, শিশু ঘন ঘন শ্বাস নেবে। বুকের পাঁজর দেবে যায়। সমস্যা বেশি হলে শিশু নিস্তেজ হয়ে পড়বে এবং খাওয়া ছেড়ে দেবে। হাত-পা, আঙুল, ঠোঁট নীল বর্ণ ধারণ করবে। তিনি বলেন, এখন যত রোগী আসছে, তার ৭০ ভাগই ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে আসছে। শিশুদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist