নিজস্ব প্রতিবেদক
শ্রমিকের বেতনের টাকা হাতিয়ে নেন তারা!
রাজধানীর আশুলিয়া থানার বাইপাইল এলাকা থেকে সংঘবদ্ধ অজ্ঞান পার্টির ১০ সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাব-১। আটকরা শসা, বরই, গাজর, আচার, রুমাল, গামছা ইত্যাদি বিক্রি করে। তবে এ ব্যবসার আড়ালে তারা প্রত্যেকেই চেতনানাশক ওষুধ, মলম ও ¯েপ্র মিশ্রণ ব্যবহার করে কৌশলে যাত্রীদের মূল্যবান সামগ্রী হাতিয়ে নেয়। এ চক্রের টার্গেট বেশির ভাগ পোশাক কারখানার শ্রমিক। গতকাল বুধবার বিকালে র্যাব-১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে আশুলিয়া থেকে চন্দ্রা মহাসড়কের রাস্তার ওপর অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি মলম, পাঁচটি স্পেয়ার, একটি চাকু, ছয়টি মোবাইল ফোন এবং টাকা জব্দ করা হয়। আটকরা হলোÑ মো. লিটন সরকার (২৭), মো. খলিলুর রহমান (৩৬), মো. রিপন মিয়া (১৮), মো. রাকিব (১৫), মো. আরমান আলী (২৫), মো. মোমিন হোসেন (২৫), মো. সবুজ খান (৩৫), মো. বাবুল হোসেন বাদল (৪২), মো. মাসুদ রানা (৪০) এবং মো. হাবিবুর রহমান (২৩)।
র্যাবের সারওয়ার-বিন-কাশেম জানান, রাজধানীর আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকায় অজ্ঞান ও মলম পার্টির দৌরাত্ম্য প্রায়ই লক্ষ করা যায়। ইতোমধ্যে ওইসব এলাকায় র্যাব বেশ কয়েকটি অভিযানও পরিচালনা করেছে। তার পরও অজ্ঞান ও মলম পার্টি এখনো সক্রিয় রয়েছে বলে জানা যায়। তারা পথচারী, চলন্ত বাসের যাত্রী এবং ট্রেনের যাত্রীদের কাছ থেকে কৌশলে মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। এ ছাড়া তারা বিভিন্ন যাত্রীবাহী বাস ও ট্রেনে উঠে সাধারণ যাত্রীদের কৌশলে অজ্ঞান করে তাদের কাছ থেকে মোবাইল, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান সামগ্রীসহ সর্বস্ব লুটে নিয়ে যায়।।
র্যাব জানায়, এই দলের মূলহোতা মাসুদ রানা, বাবুল হোসেন বাদল ও রাকিব। চক্রটি সাভার, আশুলিয়া, চন্দ্রা, বাইপাইল এলাকায় বাসস্ট্যান্ডে শসা, বরই, গাজর, আচার ও রুমাল, গামছা ইত্যাদি বিক্রি করে থাকে। তারা ওই ব্যবসার আড়ালে পরস্পর সংঘবদ্ধ হয়ে শসা, বরই ও আচার বিক্রেতা হিসেবে যাত্রীবাহী বাসে ওঠে। একই বাসে তাদের দলের সদস্যরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে যাত্রীদের টার্গেট করে পাশের সিটে বসে। এরপর চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে শসা, বরই, আচার টার্গেট করা ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে। ওষুধ মিশ্রিত এসব খাবার খেয়ে ২ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে বাসের যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়লেও অন্য যাত্রীরা সেটা বুঝতে পারে না। কেননা তারা মনে করেন যে, তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন। এ সময় পাশের সিটে বসা ওই দলের সদস্যরা যাত্রীর মোবাইল, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান সামগ্রীসহ সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে সুবিধামতো স্থানে নেমে যায়।
র্যাব আরো জানায়, ওই এলাকায় প্রতি মাসের প্রথম দিকে বিশেষ করে ১ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে এই সংঘবদ্ধ চক্রের উৎপাত বেশি লক্ষ করা যায়। কারণ, ওই এলাকায় অবস্থিত গার্মেন্ট কর্মীরা বেতন পেয়ে বাসায় ফেরার পথে তারা তাদের টার্গেটের শিকার হয়।
"