আদালত প্রতিবেদক

  ২৪ মে, ২০১৮

বেসিক কেলেঙ্কারির সব তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব

রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ৫৬ মামলার তদন্ত আড়াই বছরেও শেষ করতে না পারায় তদন্ত কর্মকর্তার সবাইকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩০ মে তদন্তের সব নথি নিয়ে তাদের আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ। গতকাল বুধবার মামলার কয়েকজন আসামির জামিন শুনানিতে নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ করতে না পারার বিষয়টি উঠে এলে হাইকোর্ট এই নির্দেশ দেন। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, বেসিক ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি ফজলুস সোবহান, সাবেক ডিজিএম শিপার আহমেদসহ কয়েকজনের জামিন শুনানি ছিল এদিন। শুনানিতে আদালতের কাছে প্রতিভাত হয় যে, তদন্ত আড়াই বছরেও শেষ হয়নি। অথচ দুদক আইনে আছেÑ১৮০ দিনে তদন্ত শেষ করতে হবে। এ কারণে আদালত ওই ৫৬ মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনসহ সব মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান এই আইনজীবী।

২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ ওঠার পর তদন্তে নামে দুদক। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়া, জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণদানসহ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে।

প্রায় চার বছর অনুসন্ধান শেষে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে রাজধানীর গুলশান, পল্টন ও মতিঝিল থানায় ৫৬টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় মোট দুই হাজার ৩৬ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় ১৫৬ জন আসামির বিরুদ্ধে। আসামিদের মধ্যে ২৬ জন ওই ব্যাংকের কর্মকর্তা ছিলেন; বাকিরা ঋণ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক জরিপ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত।

এসব মামলার আসামির তালিকায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু বা ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের কেউ না থাকায় দুদকের অনুসন্ধান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ বিষয়ে দুদকের বক্তব্য ছিল, ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতা তারা পায়নি। তাই তার নাম আসামির তালিকায় রাখা হয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালে সংসদে এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংকের নিয়োগ করা নিরীক্ষকের প্রতিবেদনে অনিয়মিত ঋণ মঞ্জুর, নিয়োগ ও পদোন্নতিতে পরিচালনা পর্ষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর সংশ্লিষ্টতার কথা ছিল।

আর গত বছর আগস্টে এক মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় বাচ্চু ও পরিচালনা পর্ষদকে আসামি না করায় উষ্মা প্রকাশ করে। এ নিয়ে সমালোচনার মধ্যে বাচ্চুকে দুদকে ডেকে বেশ কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। ৩০ মে তাকে আরো জিজ্ঞাসাবাদের তারিখ রয়েছে। বেসিক ব্যাংকের সাবেক ১০ পরিচালককেও দুদক ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। কিন্তু দুদক অভিযোগপত্র দাখিল না করায় কোনো মামলারই বিচার শুরু হয়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist