সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযোগ

রেলের জায়গায় শ্রমিক নেতার রেস্টুরেন্ট

৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতির সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত আশরাফ * আশরাফ কথিত পত্রিকার প্রকাশক দাবি করেন। পত্রিকাটি বন্ধ রয়েছে * অবৈধ সম্পদ টিকিয়ে রাখতেই বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে আশরাফ, অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে রেলওয়ের জায়গা দখল করে হোটেল ও রেস্টুরেন্ট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন গোদনাইল মেঘনা ডিপো শাখার সভাপতি আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে।

গত বুধবার নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এসও রোড গোদনাইল এলাকায় সরেজমিনে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

জানা যায়, টার্মিনালের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নেন গোদনাইল মেঘনা পেট্রোলিয়াম ডিপো শাখা কর্তৃপক্ষ। যার মূল পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেন দুদকের করা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি আশরাফ উদ্দিন। মেঘনা ডিপো শাখার নামে লিজ দিলেও প্রতিষ্ঠানটির মূল অংশজুড়েই নির্মাণ করা হয়েছে ‘টু কুইন’ রেস্টুরেন্ট ও একাধিক দোকান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন আগে উদ্বোধন করা রেস্টুরেন্টটি শ্রমিক নেতা আশরাফ উদ্দিনের মালিকানায় থাকলেও দোকানগুলো ভাড়া দেওয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা অগ্রিম নিয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত আশরাফ উদ্দিন। সরকারি জায়গা দখল, তেল চোর চক্রের নিয়ন্ত্রণসহ বেশ কয়েকটি অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। নিজেকে একটি কথিত পত্রিকার প্রকাশক দাবি করলেও সেই পত্রিকাটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে বলেও জানা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পত্রিকার মালিকানা নিয়ে ঝামেলার কারণে বর্তমানে পত্রিকাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর এই কথিত পত্রিকার নাম বিক্রি করে সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে রেখেছেন তিনি। এই আশরাফ এক সময়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির রাজনীতি করতেন বলে জানান স্থানীয়রা। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নিজের অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ সম্পদ টিকিয়ে রাখতেই তিনি বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আশরাফের এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। তার এসব অপকর্ম আড়াল করতেই মূলত তিনি (আশরাফ) নিজেকে কথিত সাংবাদিক দাবি করেন। ওই এলাকায় যেকোনো অপরাধের ঘটনা ঘটলে নিজের লোকদের বাঁচাতে দৌড়ে চলে আসেন স্থানীয় থানায়।

বিষয়টি জানতে চাইলে ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন গোদনাইল মেঘনা ডিপো শাখার সভাপতি আশরাফ উদ্দিন মোবাইলে বলেন, এখানে ৮৫ শতাংশ জমি সরকার থেকে লিজ নিয়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম কর্তৃপক্ষ। এর সব কিছুই আমি (আশরাফ উদ্দিন) দৌড়ঝাঁপ করে নিয়ে এসেছি।

সরকারি জায়গায় আপনি কীভাবে রেস্টুরেন্ট নির্মাণ করেছেন এমন প্রশের জবাবে আশরাফ উদ্দিন বলেন, এটা আমি আপনাকে বলব না। আপনি অবজেকশন (বাধা) দেওয়ার কে? অবজেকশন দিলে মেঘনা ডিপো কর্তৃপক্ষ দেবে। আপনি নিউজ করেন। এটা আমাদের ইন্টার্নাল বিষয় বলে ফোন রেখে দেন তিনি।

গোদনাইল মেঘনা ডিপো শাখার কর্মকর্তা লুৎফর রহমান মোবাইলে জানান, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে আমরা টার্মিনালের জন্য প্রায় এক একর জমি লিজ নিয়েছি।

রেস্টুরেন্ট নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে লুৎফর রহমান বলেন, এটা আমি জবাব দিতে পারব না। কারণ তারা প্রভাবশালী।আমার মন্তব্য এখানে নিষ্প্রয়োজন। তিনি (আশরাফ উদ্দিন) তো পুরো অংশটাই দখল করে নিয়েছেন। তিনি রেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নিয়েছে কি না জানি না। আমাদের এমডি স্যার এ বিষয়ে রেলওয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছেন। বাকিটা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলতে পারবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close