ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

  ২০ অক্টোবর, ২০২১

বছর পেরোতেই হেলে গেল সেতু

ময়মনসিংহ সদরের সিরতা এলাকার দীর্ঘদিনের দাবির পর কাটা খালের ওপর ৬০ ফুটের একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। তবে নির্মাণের পরপরই ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ের সেতুটি পানির তোড়ে হেলে যায়। এরপর কেটে গেছে চার বছর। তবে মেরামত বা নতুন করে কোনো সেতু নির্মাণ হয়নি। ফলে এই হেলে পড়া সেতু এখন কেবল গ্রামের মানুষের একটি স্বপ্নভঙ্গের সাক্ষী।

ময়মনসিংহ সদরের খাগডহর ফেরিঘাট থেকে সিরতা বাজার পর্যন্ত বয়ে চলা কাটাখাল গ্রীষ্মে শুষ্ক থাকলেও বর্ষাকালে থাকে পানিতে টইটম্বুর। ওই অঞ্চলের মানুষ ময়মনসিংহ বিজিবি ক্যাম্পের সামনে দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদ এবং কাটাখাল পাড় হয়ে সিরতাসহ চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করেন। ব্রহ্মপুত্র নদে ইঞ্চিনচালিত নৌকা দিয়ে পার হওয়ার পর কাটাখাল পারাবারের জন্য সেতু আবশ্যক হয়ে ওঠে।

জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু কালভার্ট কর্মসূচির আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উপজেলার খাগডহর ইউনিয়নের খাগডহর কাটা খালের ওপর সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। যার দৈর্ঘ্য ছিল ৬০ ফুট। এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা। ২০১৭ সালের ২০ এপ্রিল সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। বরিশালের মেসার্স মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির নির্মাণকাজ করে।

সরেজমিনে স্থানীয়রা জানান, ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বাড়লে কাটাখালি খাল দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। দাবির মুখে সেতুটি নির্মিত হলেও বন্যায় সেতুটি হেলে পড়ে এবং ভেঙে যায় রাস্তা। এরপর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও আর কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

আবু সাঈদ নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ‘আমরা ভাবছিলাম বিরিজের উরফে দিয়া চলতে পারমু। কিন্তু আংগর কোনো উপকারই অইল না। অহন নিচ দিয়া আউয়া-যাউয়া করুন লাগে। পরায় পরায়ই মোটরসাইকেলের চাক্কা পাংচার অইয়া যায়। এইরুম কষ্টের মধ্যে আমরা আছি।’

মিলন মিয়া নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য অনেক দূর ঘুরে তারপর যেতে হয়।

খাগডহর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান বলেন, বর্তমানে সেতুটি এলাকার কোনো কাজেই আসেনি। এতে দুর্ভোগ নিয়ে মানুষকে চলাচল করতে হয়। ব্রহ্মপুত্র নদে একটি এবং ওই স্থানটিতে আরো একটি সেতু নির্মাণ করে সিরতা পর্যন্ত মানুষের চলাচলের সহজ রাস্তা করে দেওয়া হোক এটাই এখানকার মানুষের চাওয়া।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক রেজা বলেন, সেতুটি নির্মাণের পরপর বন্যা আসায় মাটি সরে গিয়ে সেতুটি হেলে যায়। ফলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানও পুরো বিল পায়নি। ১৮ লাখ টাকার মতো পেয়েছিল। সেতুটি নির্মাণের সময় রাস্তা থাকলেও বন্যার পর অনেক দৈর্ঘ্য দেখা যায়। এই সেতুটিকে ঘিরে তাদের আর কোনো ধরনের কাজ করার সুযোগ নেই।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন বলেন, সেতুটি মেরামতের কোনো সুযোগ নেই। একই স্থানে আরেকটি সেতু নির্মাণ করতে হবে। জনদুর্ভোগ লাঘবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে শিগগিরই আবারও প্রস্তাবনা পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close