মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ১১ অক্টোবর, ২০২১

উদ্বোধনের চার মাসেই দুই কোটি টাকার ভবনে ফাটল

আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত নতুন ভবন উদ্বোধনের চার মাসের মধ্যেই ফাটল দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে ভবনের বিভিন্ন কক্ষের ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে। ফলে যেকোনো সময় স্কুল ভবন কাম সাইক্লোন শেল্টারটি বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছে বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষসহ এলাকাবাসী।

জানা গেছে, উপজেলার চৈতা গ্রামসহ আশপাশের গ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী বারেকগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষের শিক্ষার কথা চিন্তা করে ১৯৯৯ সালে স্থাপিত হয় বিদ্যালয়টি। কিন্তু দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত স্কুল ভবনটি উদ্বোধনের চার মাসের মধ্যেই বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির পানিতে শ্রেণিকক্ষের ভেতরের ছাদে সবুজ শ্যাওলা জমেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের উদ্যোগে দায়সারাভাবে কিছু মেরামত করেছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণকাজ শুরু হলে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ভবনের কাজ শেষ হয়। চলতি বছরের গত ২৩ মে বিদ্যালয়টি উদ্বোধনের কিছুদিন পর ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দেয়। এতে আতঙ্কের মধ্যে পাঠদান করান শিক্ষকরা।

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত কুদবারচর আদর্শ বালিকা নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়টিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় প্রধান শিক্ষক মো. তৈবুর রহমান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ে অভিযোগ করলে পিআইও অফিস থেকে বিদ্যালয়ের ফাটল মেরামত করে দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।

আবু ইউসুফ আলী মোল্লা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, সামান্য বৃষ্টিতে ছাদ দিয়ে শ্রেণিকক্ষের ভেতরে পানি পড়ে। এতে ক্লাস করতে কষ্ট হয়। পানি পড়ে শ্যাওলা ধরেছে ছাদের কিছু অংশে। আর ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখে আমাদের আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোতাহার উদ্দিন গাজী বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর ২৩ মে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভবনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু ভবনের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় কিছুদিন পরই এটি মেরামতের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু ভারী বৃষ্টিতে ভবনের ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৮টি কক্ষ ও ২টি চিলেকোঠার দ্বিতল ভবনটি নির্মাণে বরাদ্দ ছিল ২ কোটি ১৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। এটি বাস্তবায়ন করে বরগুনার বেতাগীর মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

ঠিকাদার মো. খলিলুর রহমান বলেন, আমার লাইসেন্স নিয়ে এক ব্যক্তি কাজ করেছে। পিআইও কর্মকর্তা এ ব্যাপাপরে আমার সাথে কথা হয়েছে। আমি এর বেশি কিছু জানি না।

লাইসেন্সের সাব-ঠিকাদার মো. মামুন বলেন, বিদ্যালয়ের যে স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে সেসব স্থানে দ্রুত মেরামত করে দেওয়া হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনে যে ফাটল দেখা দিয়েছে তাতে ভয়ের কিছু নেই। নির্মাণের সময় ভালো কিউরিং না হওয়ায় এ ধরনের ফাটল দেখা দিতে পারে। সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ভবন মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close