নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ আগস্ট, ২০১৭

ধানমন্ডিতে ফুটপাত দখল করে বাণিজ্য

রাজধানীর ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ১৫নং সড়কসংলগ্ন ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকানপাট। কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযানের প্রস্তুতি নিলেও কী কারণে থমকে যাচ্ছে উচ্ছেদ কার্যক্রম জানেন না কেউই। ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ সিটি করপোরেশনে কয়েকবার অভিযোগ জানালেও আশ্বাসেই বছর পার। এতে স্থানীয় মানুষ ও স্কুলশিক্ষার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। ওই সড়কের ছায়ানট ও নালন্দা উচ্চ বিদ্যালয় সংস্কৃত ভবনের পাশের ফুটপাত দখল করে বাণিজ্যে মেতে উঠেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। অভিযোগ পাওয়া গেছে, স্থানীয় প্রভাবশালীদের তদারকিতে দোকানগুলো বসেছে। এগুলো থেকে প্রতিদিন ১০০ থেকে ৫০০ টাকা বাগিয়ে নেন পর্যন্ত নিদিষ্ট লাইনম্যানরা।

ছায়ানটের সাড়ে চার দশকের সংস্কৃতির সাধনার বিকাশে স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১৯৯৯ সালে ধানমন্ডিতে এক বিঘা জমি বরাদ্দ দেয় সরকার। ছায়ানটের সংগীত বিদ্যালয়ে শুক্রবার সকাল ৮টা ৩০ থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ পর্যন্ত, শনিবার বিকেল ৫টা থেকে ৮টা পর্যন্ত ও বাকি দিনগুলোয় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার শিক্ষার্থী ও অবিভাবক আসা-যাওয়া করে। এ ছাড়া রবি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা ৩০ থেকে ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নালন্দা বিদ্যালয়ে ৫০০ শিক্ষার্থীসহ ছায়ানটে মোট পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী আসা যাওয়ার সময় চরম ভোগান্তির শিকার হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছায়ানটের সামনের রাস্তায় পার্কিং করা রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাইভেট কার, বামপাশে ৫০টির মতো অবৈধ চায়ের দোকান ও কিছু ডাব বিক্রেতারা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় জমে থাকে এসব চায়ের দোকানগুলোয়। দরদাম করে কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা। এতে পথচারীদের চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে অনেকেই সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলছেন। এ ছাড়া সড়কের দুই পাশে অর্ধশতাধিক ব্যক্তিগত গাড়ি, পিকআপ, ভ্যান ও রিকশা পার্কিং করে রাখা হয়েছে। স্কুলছুটির পর সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।

নুসরাত নামের এক পথচারী বলেন, প্রতিদিন বিদ্যাপীঠে যাওয়ার সময় ফুটপাত খালি না থাকায় রাস্তার ওপর দিয়ে হাঁটতে হয়, এতে দুর্ঘটনার ভয় থাকে। কী আর করা এগুলো দেখার মতো কেউ নেই, এটা খুবই অসহনীয়, এ অভিমত অনেকেরই।

এই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা এবং হকারদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় ফুটপাতে দোকান বসিয়ে প্রতিদিন ১০০-৫০০ টাকা চাঁদা তুলেন স্থানীয় সরকারদলীয় নেতা ও পুলিশ। তাদের ছত্রছায়ায় বসছে এসব দোকানপাট। ফলে ফুটপাত ব্যবহারে বেগ পেতে হয় পথচারীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হকার বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে প্রতিদিন তিনভাগে চাঁদা তুলেন স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশ। আমরা বিক্রি করি বা না করি, প্রতিদিন নির্দিষ্ট একটা অর্থ তাদের দিতে হয়।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছায়ানটের নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ সানা উল্লাহ সানি বলেন, ‘এটা যে কত বড় সমস্যা যা বলে বোঝাতে পারব না। খাবার খেয়ে সবাই আমাদের বাউন্ডারির ভেতরে কলার খোসা, সিগারেটের প্যাকেটসহ অন্যান্য ময়লা-আর্বজনা ফেলে রাখে, যা আমাদের নিজস্ব লোক দিয়ে প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হয়। আমরা অনেকবার ধানমন্ডি থানায় অভিযোগ করেও এর কোনো সমাধান না পেয়ে এখন আর কারো কাছে বলি না। তাই হকারদের কাছ থেকে কিছু না কেনার জন্য বাচ্চাদের নিষেধ করেছি।’

এ বিষয়ে ধানমন্ডি থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল লতিফ বলেন, ‘আমরা অনেকবার উঠিয়ে দিয়েছি কিন্তু পুলিশ না থাকলে আবার বসলে আমরা কী করব। এটা তো শুধু পুলিশের কাজ নয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারও দেখতে পারেন। তবে আবার উচ্ছেদ করার আশ্বাস দেন এই কর্মকর্তা।’

এ বিষয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর জাকির হোসেন স্বপন বলেন, ‘আমি ওসিকে কয়েকবার বলেছি তারা উচ্ছেদ না করলে আমি কী করব বলেন। আপনি সিটি করপোরেশনকে বলেন।’ এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গুলিস্তান, মতিঝিল, নিউমার্কেট ছাড়া অন্য কোথাও অভিযান করতে হলে মেয়রের অনুমতি লাগবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist