বিশেষ প্রতিবেদক, রাজশাহী

  ২৯ জুন, ২০১৯

বনলতার প্লট বরাদ্দে কেলেঙ্কারি

রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চেয়ে দুদকের চিঠি

রাজশাহী মহানগরীর বনলতা আবাসিক এলাকার প্লট বরাদ্দে কেলেঙ্কারির ঘটনা তদন্তে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (আরডিএ) কাছে তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই চিঠিতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও নথিপত্র আগামী ১ জুলাইয়ের মধ্যে পাঠাতে আরডিএ চেয়ারম্যান বজলার রহমানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করে রাজশাহী দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, আরডিএর বনলতা বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের ৩১ প্লট কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক। তবে তথ্য হাতে পাওয়ার পর অনুসন্ধানের মূলকাজ শুরু করা হবে। এর আগে বনলতার মূল্যবান ৩১টি প্লট হস্তান্তরে দুর্নীতির অভিযোগে বঞ্চিতরা দুদক চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মূলত এ তদন্তকাজ শুরু হয়েছে। অভিযোগের প্রাথমিক ধরন বিবেচনা ও যাচাই বাছাই শেষে দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে রাজশাহীর উপপরিচালককে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে তারা কাজ করবেন।

জানা গেছে, চলতি জুনের প্রথমদিকে প্লট কেলেঙ্কারির অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিযুক্ত হন রাজশাহী সমন্বিত দুদক অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (এডি) মো. আল আমিন। এরপর উত্থাপিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও নথিপত্র সরবরাহের জন্য গত ২৪ জুন আরডিএর চেয়ারম্যানকে তিনি চিঠি দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের অভিযোগে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তসহ মোট ১৫টি ক্যাটাগরিতে ২০১৩ সালে বনলতা আবাসিক প্রকল্পের ১৯৩টি সরকারি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই সময় প্রতি কাঠার দাম ছিল ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত পরিপত্র অনুযায়ী, শতকরা ৫ ভাগ হিসাবে আরডিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাগে পড়ে মোট ১০টি প্লট। কিন্তু আরডিএ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে মাত্র চারজন প্লটের জন্য আবেদন করেন। ফলে আরডিএ কোটার অবশিষ্ট ছয়টি প্লট রেজ্যুলেশন করে পরে অপেক্ষমাণ তালিকার অন্য কোটার আবেদনকারীদের মাঝে বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এদিকে ২০১৭ সালে একই প্রকল্পের অবশিষ্ট ৩১ প্লটের জন্য আবেদন নিয়ে একই হিসাবে প্লট ভাগ-বণ্টন করা হয়। তবে এবারে রহস্যজনক কারণে ক্যাটাগরির সংখ্যা কমিয়ে মোট ৯টি করা হয়। আর ক্ষতিগ্রস্ত কোটা রাখার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের বাধ্যবাধকতা থাকলেও তাদের বাদ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করলেও তাদের আবেদন করারই সুযোগ দেওয়া হয়নি।

বঞ্চিতদের অভিযোগ, ২০১৭ সালের ৩১ মে আরডিএর চেয়ারম্যান বজলুর রহমান, তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কমলা রঞ্জন দাস ও এস্টেট অফিসার বদরুজ্জামান চেয়ারম্যানের কক্ষে বসে নিজেদের মধ্যে প্লট ভাগ-বাটোয়ারা করে নেন। সরকারি কোটা অনুয়ায়ী শতকরা ৫ ভাগ হিসাবে ৩১টি প্লটের মধ্যে আরডিএর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভাগে পড়ে সর্বোচ্চ দুটি প্লট। কিন্তু এই ৩১ প্লটের মধ্যে চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এস্টেট অফিসারসহ মোট ১০টি প্লট বরাদ্দ নেন।

এ বিষয়ে আরডিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ওই সময় আমি আরডিএতে ছিলাম না। আর যেহেতু বিষয়টি দুদকের অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে সেহেতু এ বিষয়ে মন্তব্য করা যাচ্ছে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close