নিজস্ব প্রতিবেদক
খিলগাঁওয়ে জমির বিরোধে শিশু খুন : ভ্যানে মিলল লাশ
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ৮ বছরের শিশু সাফওয়ান নিনাদকে হত্যা করে বেকারির ভ্যানের ভেতর লাশ গুম করে রাখা হয়েছিল। শিশুরা খেলার সময় ভ্যানে লাশটি দেখতে পায়। তবে এই হত্যাকান্ডের কারণ খুঁজে পাচ্ছে না নিহতের পরিবার। এ ঘটনায় গত রোববার খিলগাঁও থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন শিশুটির বাবা স্বপন ব্যাপারী। তবে পুলিশ সন্দেহ করছেÑ দুই পরিবারের মধ্যে জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে এই খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
খিলগাঁও থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, নিনাদের লাশ উদ্ধারের পর শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। গলায় ফাঁসের চিহ্ন, পায়ে ও হাতে মারধরের দাগ দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ওসি আরো জানান, শিশুটি নিখোঁজের পর জিডি করেছিল তার পরিবার। এরপর লাশ উদ্ধারের পর হত্যা মামলা হয়েছে। মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে। তবে এখনো কোনো আসামিকে শনাক্ত করা যায়নি। পরিবারের সঙ্গে অন্য পরিবারের দ্বন্দ্ব ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে, নিহত নিনাদের পরিবার জানিয়েছে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমি নিয়ে তাদের বিরোধ চলছে। মামলা আছে। সেই বিরোধ থেকে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
গত শনিবার দুপুরে খিলগাঁওয়ের ভুঁইয়াপাড়া কাঁচাবাজার বাইতুন নূর জামে মসজিদের পাশের একটি বেকারি ভ্যান থেকে সাফওয়ান নিনাদের লাশ উদ্ধার করে স্বজনরা। চাঁদ রাতে শিশুটি তার সহপাঠী ও প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়েছিল। এরপর থেকেই সে নিখোঁজ ছিল। নিনাদের মামা সাংবাদিক এস এম মুন্না মিয়া জানিয়েছেন, শুক্রবার চাঁদ রাতে নতুন জামা, জুতা পরে রাত ৯টার দিকে প্রতিবেশী শিশুদের সঙ্গে খেলার কথা বলে বাসার সামনে যায়। বাসার বাইরে অন্য শিশুরা যখন আতশবাজি ফোটাচ্ছিল তখন তাদের সঙ্গেই ছিল। তবে রাত ১০টা পার হওয়ার পরও সে বাসায় ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি শুরু করি। রামপুরা, বনশ্রী, খিলগাঁওয়ের সব এলাকায় খুঁজেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর স্বজনদের বাড়িতেও খোঁজ নেয় নিনাদের পরিবার। তবে কোথাও তার সন্ধান না পেয়ে জিডি করেন তারা।
ঈদের দিন সকাল থেকে আবার খোঁজাখুঁজি করে নিনাদের পরিবার। দুপুর সোয়া ১টার দিকে তারা খবর পায় ভুঁইয়াপাড়া এলাকার একটি পরিত্যক্ত প্লটে রাখা বেকারির ভ্যানের ভেতরে এক শিশুর লাশ রয়েছে। এরপর সেখানে তারা দৌড়ে যায়। সেখানে গিয়ে গলায় পলিথিন প্যাঁচানো অবস্থায় নিনাদের লাশ শনাক্ত করেন। সেখান থেকে নিনাদের বাসার দূরত্ব প্রায় ৫০০ গজ। পরবর্তীতে পুলিশ ও স্বজনরা তার লাশটি নিয়ে যায়। নিনাদ বাবা-মায়ের সঙ্গে মেরাদিয়ার ভুঁইয়াপাড়া এলাকার ২১৫/৫ নম্বর বাসায় থাকত। সে বনশ্রীর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সে ছিল বড়।
"