খেলা ডেস্ক
জকোভিচ নক্ষত্রের পতন
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপাটাকে প্রায় পৈত্রিক সম্পত্তিতে রূপান্তর করে ফেলেছিলেন নোভাক জকোভিচ। বছরের প্রথম গ্র্যান্ড সøামে ছয়টি শিরোপা জিতে রাজত্ব করছিলেন। মেলবোর্ন পার্কে এবার শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণœ রাখতে পারলেই অনন্য উচ্চতায় উঠে যেতেন সার্বিয়ান সেনশেসন। কিন্তু ইতিহাস গড়া হলো না জকোর। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ডেই যে পা হড়কাতে হলো তাকে! এদিন অঘটন ঘটেছে মেয়েদের এককেও। আগ্নেয়েস্কা রাদওয়ানস্কাকে সরাসরি সেটে (৬-৩, ৬-২) উড়িয়ে দিয়েছেন লুসি বারোনি। তবে দুই তারকা পতনের রাউন্ডে প্রত্যাশিত জয় তুলে নিয়েছেন মেয়েদের এককের হট ফেভারিট সেরেনা উইলিয়ামস। চেক প্রজাতন্ত্রের লুসি সাফারোভাকে ৬-৩, ৬-৪ গেমে উড়িয়ে তৃতীয় রাউন্ডে উঠেছেন মার্কিন কৃষ্ণকলি।
জকোর ভক্তকুলকে ধাক্কাটি সামলাতে একটু সময় নিতেই হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডের খেলা হবে ঠিক, কিন্তু ম্যাচগুলোর সূচিতে থাকছে না জকোভিচের নাম। কাল অভাবনীয় সেই ঘটনাই ঘটে গেল। টানা সাতটি শিরোপা জিতে যেখানে ইতিহাস গড়তে এসেছিলেন, সেখানে তাকে বিদায় নিতে হলো দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই। তা-ও আবার বড় কোনো খেলোয়াড়ের কাছে নয়, অখ্যাত একজনের হতেই স্বপ্নের সমাধি হয়েছে তার। র্যাংকিংয়ের ১১৭ নম্বর খেলোয়াড় ডেনিস ইস্তোমিনের কাছে ৭-৬ (১০ /৮), ৫-৭, ২-৬,৭-৬ (৭ /৫), ৬-৪ গেমে হেরে গেছেন বিশ্বের ২ নম্বর টেনিস তারকা।
ডেনিস ইস্তোমিন। নামটা খুব পরিচিত নয় টেনিস দুনিয়ায়। ৩০ বছর বয়সী উজবেকিস্তানের এই টেনিস খেলোয়াড় পেশাদারি টেনিসে শিরোপাই জিতেছেন মাত্র একবার। আর গ্র্যান্ড সøামে সাফল্য? ইউএস ওপেন ও উইম্বলডনে একবার চতুর্থ রাউন্ডে পা দিয়েছিলেন, এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে দুবার তৃতীয় রাউন্ডে খেলেছিলেন তিনি। ২০১০ ও ২০১৪ সালের সে দুটো ম্যাচে ইস্তোমিন হেরেছিলেন এই জকোভিচের কাছেই।
এবার তৃতীয় নয় দ্বিতীয় রাউন্ডেই দেখা হয়ে গেল দুজনের। এর আগে এ দুজন পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছিলেন। একটা সেটও জিততে পারেননি ইস্তোমিন। ২০১৪ সালে শেষ সেটে ৫টি গেম জেতাই ছিল তার সেরা সাফল্য। কাল সেই গল্প যে বদলে যাচ্ছে, সেটি জানিয়ে দিলেন প্রথম সেটেই। টাইব্রেকে জিতে গেলেন প্রথম সেট। তবে জকোভিচ ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন পরের দুই সেটে। কিন্তু চতুর্থ সেটেই আবার ইস্তোমিনের চমক। আবারও টাইব্রেকে জয় তার।
শেষ সেটেও গল্পটা পাল্টাল না। দুর্দান্ত গতির সার্ভ ও জকোভিচের একের পর এক ভুলের সুযোগ নিয়ে ৬-৪ ব্যবধানে জিতে নিয়েছেন শেষ সেট। ৪ ঘণ্টা ৪৮ মিনিটের এই স্নায়ুক্ষয়ী লড়াইয়ে হেরে গেলেন ছয় বারের চ্যাম্পিয়ন। রয় এমারসনকে পেছনে ফেলার স্বপ্নটা তাই অন্তত আরো এক বছর পিছিয়ে দিতে হচ্ছে ১২টি গ্র্যান্ড সøামজয়ী সার্বিয়ানকে। ২০০৮ সালের উইম্বলডনের পর এই প্রথম কোনো গ্র্যান্ড সøামের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিলেন। প্রিয় টুর্নামেন্টে ২০০৬ সালের পর অন্তত চতুর্থ রাউন্ডে উঠেছেন জকো।
"