ক্রীড়া ডেস্ক

  ১৮ আগস্ট, ২০১৯

একূল-ওকূল দুই-ই গেল মাইক হেসনের

ঈদের আগে-পরে মিলিয়ে দুই দফা মাইক হেসনের বাংলাদেশে আসার কথা শোনা গিয়েছিল। তবে হেসন শেষ পর্যন্ত আর এলেন না। উল্টো ভারতের প্রধান কোচের লোভনীয় চাকরির আশায় সাক্ষাৎকার দিতে ঠিকই গেলেন মুম্বাইয়ে বিসিসিআইয়ের সদর দফতরে। তাতে কিছুটা নাখোশ হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

অবশ্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই কোচকে নিয়ে দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে চলছিল জোর আলোচনা। হেসন কোচ হলে দেশের ক্রিকেট কোন গতিতে এগোতে পারেÑ কেউ কেউ সেই হিসাব-নিকাশও করে ফেলেছিলেন। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে হেসন কিনা ভারতে যাওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ রাখতে চাইলেন বাংলাদেশকে।

সেই হেসন বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের গুরু হতে পারেননি। শুক্রবার সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা কোচ প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার শেষে রবি শাস্ত্রিকেই বহাল রেখেছে ভারতের ক্রিকেট উপদেষ্টা কমিটি (সিএসি)। পেশাদারিত্বের দিক থেকে বিসিসিআই নিজেদের জায়গায় ঠিক থাকলেও এতে কপাল পুড়েছে হেসনের। কাল বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে রাসেল ডমিঙ্গোর নাম ঘোষণা করেছে বিসিবি। ফলে হেসনের জন্য বাংলাদেশের দরজাটিও বন্ধ হয়ে গেছে।

মূলত হেসনের ‘পিছুটান’ বিসিবিকে ডমিঙ্গোর সঙ্গে ‘অন্তরঙ্গ’ হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সাবেক প্রোটিয়া কোচ ডমিঙ্গো- যিনি কিনা জাতীয় দলের কোচ হতে খুব একটা আগ্রহই নাকি দেখাননি (সন্তুষ্ট হতেন ‘এ’ দল বা এইচপি দলের মতো দ্বিতীয় সারির দলকে কোচিং করানোর সুযোগ পেলেই), তার সঙ্গেই সম্পর্ক পাকাপোক্ত করেছে বোর্ড।

ডমিঙ্গোকে সাকিব-তামিমদের গুরু বানানোর পেছনে বিসিবিকে ভাবিয়েছে আরেকটি বিষয়। শাস্ত্রিকে সরানোর জন্য ভারতের ক্রিকেট অঙ্গনে একটি পক্ষ বেশ সোচ্চার ছিল। কিন্তু সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা অন্য কাউকেই শাস্ত্রির চেয়ে ভালো মনে হয়নি বিসিসিআইয়ের। কোচদের সেই দৌড়ে হেসন ছিলেন দ্বিতীয়। ভারত যেহেতু হেসনকে বেছে নেয়নি, বাংলাদেশ নিবে কী করে? এই অদ্ভুত ভাবনাও হেসনকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশের কোচ হওয়ার দৌড়ে।

বিশ্বকাপের পর ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তান নামে নতুন কোচের সন্ধানে। তাতে সাবেক কিউই কোচ হেসনের মতো হাইপ্রোফাইলের মূল্য চড়া হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে বাংলাদেশকে ‘দ্বিতীয় পছন্দ’ হিসেবে রেখে ভারতে ছুটে যাওয়া হেসন বাংলাদেশের কাছে কিছুটা মর্যাদা হারিয়েছেন বটে। তাই তাকে কোচ করার ব্যাপারে আর কোনো আলাপচারিতায় যেতে চায়নি বিসিবি।

অবশ্য হেসন বাংলাদেশে না এলেও ঈদের আগে তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বোর্ডের। তাতে খুব একটা সন্তুষ্ট হতে পারেননি স্টিভ রোডসের উত্তরসূরি খোঁজার কাজে ন্যস্ত কর্তারাÑ শোনা যাচ্ছে এমন কথাও। তা সত্যি হলেও এটি স্বীকার করতেই হচ্ছেÑ বাংলাদেশকে ব্রাত্য রেখে ভারতে ছুটে যাওয়াই বোধহয় সাকিব-তামিমদের কোচ হওয়ার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল সম্প্রতি আইপিএলের দল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হেসনের।

সব মিলিয়ে ভারতের পর বাংলাদেশেও ঠাঁই না হওয়ায় এবার একূল-ওকূল দুই কূলই হারালেন হেসন। তাতেও হয়তো খুব একটা অসুবিধায় পড়বেন না ৪৪ বছর বয়সি ক্রিকেট প্রশিক্ষক। তাকে নিতে যে উঠে-পড়ে লেগেছে পাকিস্তান। এশিয়ার এই পরাশক্তি দলের বোর্ডও হেসনকে কোচ করতে মরিয়া। সেক্ষেত্রে তার বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারেন মিসবাহ উল হক। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ-মোহাম্মদ আমিরদের প্রধান কোচ হওয়ার দৌড়ে আপাতত এগিয়ে। এরই মধ্যে তাকে ১৭ দিন মেয়াদে নিয়োগও দিয়েছে পিসিবি। হেসন কি তবে সব কূলই হারাতে বসেছেন?

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close