ক্রীড়া ডেস্ক
ফাইনালে চোখ ইংল্যান্ডের
দীর্ঘ ২৮ বছর পর সেমিফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। ডেভিড বেকহাম, স্টিভেন জেরার্ড, ওয়েইন রুনিদের সোনালি প্রজন্ম যেটা করতে পারেনি তা করে দেখালেন হ্যারি কেন, ডেলে আলিরা। পরশু সামরা অ্যারেনায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী সুইডেনকে ২-০ গোলে হারিয়ে ১৯৯০ সালের পর শেষ চারের টিকিট পেয়েছে ইংলিশরা। বিশ্বকাপে এর আগে চারবারের সাক্ষাতে প্রত্যেকবার ড্র করেছিল দুই দল। কিন্তু এবার জয়ের দেখাটা পেয়েছে ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয়ী থ্রি-লায়নস।
খেলোয়াড় হিসেবে দলকে বড় সাফল্য এনে দিতে পারেননি। এবার কোচ হয়ে সেই অধরা স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে চলেছেন ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আরেকবার সেই কথাটির পুনরাবৃত্তি করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপ জেতার জন্য ইংল্যান্ড যথেষ্ট ভালো দল।’ তবে এই ‘ভালো’ কথাটা তাকে আরেকবার প্রমাণ করতে হবে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। ১১ জুলাই লুঝনিকির সেমিফাইনাটাও অলিখিত ফাইনাল হতে যাচ্ছে ইংলিশদের জন্য।
অথচ রাশিয়া বিশ্বকাপের শুরুতে তাদের ফেভারিট মানতে নারাজ ছিলেন অনেক ফুটবল বোদ্ধা। কিন্তু সব কথাকে মিথ্যা প্রমাণ করে দিলেন সাউথগেট। সুইডিশদের বিপক্ষে ছেলেদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে বলেছিলেন তিনি। ছেলেরা দুর্দান্ত খেলেছে। জয় পেয়েছে। ম্যাচের পর তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জানতাম, আমাদের জন্য ম্যাচটি ভিন্ন ধরনের হতে যাচ্ছে। অতিরিক্ত সময় বা টাইব্রেকারে যাওয়ার আগেই আমরা গোলের জন্য খেলতে চেয়েছিলাম। আমরা তা করতে পেরেছি। ছেলেদের ওপর আমার আত্মবিশ্বাস আছে। জয়ের জন্য আমরা পুরো দল একতাবদ্ধ হয়ে লড়াই করেছি।’
সুইডেন বিশ্বকাপে শেষ সেমিফাইনাল খেলেছিল ১৯৯৪ বিশ্বকাপে। কিন্তু এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হতে হয়েছে সুইডিশদের। দলের প্রাণভোমরা জøাতান ইব্রাহিমোভিচকে ছাড়া এবার এগিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিচ্ছিল তারা। কিন্তু গ্রাঙ্কভিস্ট, লারসন, ফোর্সবার্গরা পারলেন না নিজেদের শেষ চারে নিয়ে যেতে। তবে পরশু তাদের সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছিল ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড। ইংলিশদের এই গোলরক্ষক একটি রেকর্ডও করে ফেলেছেন এই আসরে। বিশ্বকাপে ইংলিশদের সবচেয়ে কম বয়সী গোলরক্ষক এখন তিনি। এমন অব দ্য ম্যাচও হয়েছেন এই ২৪ বছর ১২২ দিন বয়সী গোলরক্ষক।
সুইডিশদের স্বপ্নটা বাস্তবায়ন করতে পারেননি কোচ ইয়ান অ্যান্ডারসন। ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না আমরা কোনো কিছু ভুল ছিলাম। আমরা খুব ভালো একটি দলের বিপক্ষে মাঠে নেমেছি কিন্তু আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারিনি। প্রথম ৩০ মিনিট ম্যাচটা আমাদের অনুকূলে ছিল। এরপরই কর্নার থেকে গোল করে তারা এগিয়ে গেছে। এরপর আমরা অনেক সুযোগ সৃষ্টি করেছি কিন্ত কোনো গোল করতে পারিনি। দ্বিতীয়ার্ধে যদি আমরা কোনো গোল করতে পারতাম তবে ম্যাচে সহজে ফিরতে পারতাম।’
হারলেও ইংলিশদের প্রশংসা করেছেন অ্যান্ডারসন। তিনি আরো বলেন, ‘ইংল্যান্ড অত্যন্ত ভালো দল। তাদের যথেষ্ট সুযোগ আছে বিশ্বকাপ জেতার। এই ক্ষেত্রে তারা অত্যন্ত সংগঠিত। তাদের খেলোয়াড় ও কোচকে অভিনন্দন।’
"