ক্রীড়া প্রতিবেদক
সুপার সিক্সের পথে খেলাঘর
চলমান প্রিমিয়ার ডিভিশন ঢাকা লিগে শুরু থেকেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। কাল আবারও হেরে বসেছে মতিঝিলের ক্লাবটি। এবার তারা ধরাশায়ী হয়েছে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির কাছে। এদিন ছয় উইকেটে জিতেছে খেলাঘর। ১৮২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৫১ বল বাকি থাকতে জয় তুলে নেয় তারা। লিগে এটা খেলাঘরের চতুর্থ জয়। দারুণ এই জয়ের ফলে সুপার সিক্সের পথটা মসৃণ করে ফেলেছে খেলাঘর। ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে আছে খেলাঘর। সমান ম্যাচে পঞ্চম পরাজয়ের স্বাদ পাওয়া মোহামেডান আছে নয় নম্বরে। একটি টাই আর চারটি জয়ে তাদের পয়েন্ট ৯।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার টস জিতে ব্যাট করতে নেমে এনামুল হক ও জনি তালুকদারের ৭৩ রানের উদ্বোধনী জুটিতে শুরুটা ভালো হয় মোহামেডানের। দুটি করে ছক্কা-চারে ৩২ রান করা অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার এনামুলকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ১২ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙেন তানভীর।
ভালো শুরুর সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরা। বিনা উইকেটে ৭৩ থেকে একসময়ে মোহামেডানের স্কোর হয় ১৩১/৭। ওপেনার জনি ফেরেন ৬৩ বলে ৫৫ রান করে।
৫৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়া দলটি ১৮১ পর্যন্ত যায় তাইজুল ইসলামের ব্যাটে। ৯ নম্বরে নেমে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন তিনি। ৩০ রানে ৪ উইকেট নিয়েছে খেলাঘরের সেরা বোলার তানভীর। দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
রান তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে রবিউল ইসলাম রবিকে হারায় খেলাঘর। আরেক ওপেনার মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ফেরেন থিতু হয়ে। দুই অঙ্কে যেতে পারেননি রাফসান আল মাহমুদ। অমিত ও মেনারিয়ার ৮৯ রানের জুটিতে জয়ের পথে এগিয়ে যায় খেলাঘর। ৮টি চারে ৭৬ রান করে ফেরেন অমিত। বাকিটা নাজিমউদ্দিনকে নিয়ে সারেন মেনারিয়া। ভারতীয় অলরাউন্ডার ৬৬ বলে অপরাজিত থাকেন ৫৪ রানে।
ব্রাদার্স ইউনিয়নকে কম রানে বেঁধে রাখলেন আসিফ হাসান ও মোহাম্মদ শহীদ। দারুণ এক ইনিংসে বাকিটা সারলেন আবদুল মজিদ। সহজ জয়ে সুপার সিক্স নিণ্ডিত করল লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। এই জয়ে পয়েন্টের দিক থেকে আবাহনীকে ধরে ফেলল রূপগঞ্জ। দুই দলেরই পয়েন্ট ১৪। তবে রান রেটে পিছিয়ে নাঈম ইসলামের দল। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের দশম রাউন্ডের ম্যাচে ৭ উইকেটে জিতেছে রূপগঞ্জ। ১৭৯ রানের লক্ষ্য ৭৫ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় তারা।
বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে শুক্রবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ভালো শুরু এনে দেন মিজানুর রহমান ও জুনায়েদ সিদ্দিক। দুই ওপেনারকেই ফেরান বাঁ-হাতি স্পিনার আসিফ।
৫৮ বলে ১০ চার ও দুই ছক্কায় ৬৩ রান করেন মিজানুর। দেবব্রত দাস দলকে নিয়ে যান ৩ উকেটে ১৫০ রানে। এরপর মাত্র ২৮ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে দুইশ’ রানের আগেই গুটিয়ে যায় ব্রাদার্স। দলটির শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। ম্যাচসেরা আসিফ ২৩ রানে নেন ৪ উইকেট। পেসার শহীদ ৪ উইকেট নেন ৪১ রানে।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই সালাউদ্দিন পাপ্পুকে হারায় রূপগঞ্জ। মোহাম্মদ নাইমের সঙ্গে ৭১ ও অধিনায়ক নাঈমের সঙ্গে ৬৯ রানের দুটি জুটিতে মজিদ দলকে নিয়ে যান জয়ের পথে। পারভেজ রসুলকে নিয়ে বাকিটা সারেন এই ওপেনার। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করা মজিদ ১১০ বলে ৭টি ছক্কা ও ৫টি চারে করেন ৯৪ রান। লিগে এটি তার পঞ্চম পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস। এই হারে সুপার সিক্সের পথ অনেক কঠিন হয়ে গেল ব্রাদার্সের। ৮ পয়েন্ট নিয়ে ১০ নম্বরে রয়েছে দলটি। দিনের অন্য ম্যাচে রাকিনের ব্যাটে ৭৩ রানের জয় তুলে নিয়েছে শেখ জামাল। তাদের ২৬৩ রানের জবাব দিতে নেমে ১৯০ রানে গুটিয়ে যায় মোহাম্মদ আশরাফুলের কলাবাগান।
সক্ষিপ্ত স্কোর
শেখ জামাল : কলাবাগান
শেখ জামাল : ৪৯.৫ ওভার ২৬৩ (পিনাক ৪৯, রাকিন ৭১, তানবীর ৬১*, সোহাগ ২৩; হাসান ৩/৪৫, সঞ্জিত ১/২৩, মাহমুদুল ১/৩৩)
কলাবাগান : ৪৭.৩ ওভার ১৯০ (তাইবুর ৫১, মুক্তার ৫১, হাসান ৩২; সোহাগ ১/২৩, কামরুল ২/৪৭, সানি ৪/৩৬, শচিন ১/৭)
ফল : শেখ জামাল ৭৩ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : রাকিন আহমেদ
ব্রাদার্স ইউনিয়ন : লিজেন্ডস অব রুপগঞ্জ
ব্রাদার্স ইউনিয়ন : ৪৮.১ ওভার ১/৭৮ (মিজানুর ৬৩, জুনায়েদ ২৬, দেবব্রত ৩১, কাপালী ২০, ইয়াসির ১৪, শহীদ ৪/৪১, আসিফ ৪/২৩)
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ : ৩৭.৩ ওভার ১৮৩/৩ (মজিদ ৯৪*, নাইম ৩২, নাঈম ৩৬; শুভ ১/৪১, শাখাওয়াত ১/২৯)
ফল : লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : আসিফ হাসান
মোহামেডন : খেলাঘর
মোহামেডান : ৪৫.৪ ওভার ১৮১ (জনি ৫৫, এনামুল ৩২, শামসুর ২০, গুরিন্দর ২০, তাইজুল ৩৪; তানভীর ৪/৩০, মইনুল ২/১৪)
খেলাঘর: ৪১.৩ ওভার ১৮২/৪ (মাহিদুল ২৪, অমিত ৭৬, মেনারিয়া ৫৪*, নাজিম ৮*; গুরিন্দর ২/৩৭, অনিক ২/৩৩)
ফল : খেলাঘর ৬ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : তানভীর ইসলাম
"