প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১০ জানুয়ারি, ২০২৪

নেপথ্য কারণ

নৌকা পেয়েও নৌকাডুবিতে মমতাজ স্বপন ও গোলাপ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে দলীয় অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী ধরাশায়ী হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন মানিকগঞ্জ-২ আসনে লোকগানের তুমুল জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম, যশোর-৫ আসনে গত দুবারের সংসদ সদস্য, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য ও মাদারীপুর-৩ আসনে আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ। এ তিনজনই আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীক নিয়েও বিজয়ের মালা পরতে পারেননি। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সিংগাইর : এ নির্বাচনে সবার চোখ ছিল মানিকগঞ্জ-২ আসনের দিকে। নৌকার টিকিট পেয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থী ট্রাক প্রতীকের দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর সঙ্গে ভোটযুদ্ধে হেরে গেছেন এ জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। বিজয়ী প্রার্থী টুলু পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট। মমতাজ বেগম পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট। নির্বাচনের ফলের বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।

ভোটার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মমতাজের পরাজয়ের নেপথ্যে রয়েছে নানা কারণ। এর মধ্যে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতা, আত্মীয়করণ ও পদবাণিজ্য। এছাড়া নৌকা প্রতীকের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানদের অসম্মান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিনকে কটাক্ষ করে বক্তব্যদান, এমপির বিশেষ বরাদ্দসহ টিআর কাবিখা, কাবিটা নামে-বেনামে লোপাট, বিতর্কিত ব্যক্তিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া এবং দীর্ঘ ১৫ বছরে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন না করা অন্যতম কারণ। সেইসঙ্গে তার পারিবারিক ও ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বও ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। নিজের অনুসারী কর্মী বাহিনী দিয়ে স্বামী ডা. মঈন হাসানের ওপর হামলা ও সর্বশেষ তার বাবা প্রয়াত মধু বয়াতির প্রথম স্ত্রী ও তিন কন্যার প্রতি অবিচারের ঘটনায় মমতাজকে পড়তে হয় বেকায়দায়। তারা মমতাজের পক্ষত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলু গলায় মালা দিয়ে তাকে সমর্থন দেন। এছাড়া নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মমতাজ ও তার অনুসারীদের সভা-সমাবেশে দেওয়া আক্রমণাত্মক বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা নির্বাচনী ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বোঝা যাচ্ছিল, ভোটের হিসাব-নিকাশ একটু অন্যরকম হতে পারে। পাল্টে যেতেও পারে। মানিকগঞ্জ-২ আসনের মানুষের মধ্যে এ নিয়ে কানাঘুষা চলছিল। তারাও মমতাজের কাছ থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলেন। মমতাজের সৎমা ও তিন বোনের মানিকগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুকে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টিও এলাকার মানুষের মনে প্রভাব ফেলে। অনেকে এমনও বলছেন, যিনি পরিবারে সমর্থন পান না, তিনি সবার সমর্থন কীভাবে পাবেন।

সিঙ্গাইর-হরিরামপুর ও মানিকগঞ্জ সদর নিয়েই মানিকগঞ্জ-২ নির্বাচনী আসন। সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন-সাতেক আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মমতাজ বেগমের নিজ গ্রাম পূর্ব ভাকুম এলাকায় নির্বাচনী উঠান বৈঠকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদের গলায় ফুলের মালা দিয়ে তাকে সমর্থন জানান মমতাজের তিন বোন। মমতাজের বোন শাহনাজ বেগম জয়মন্টপ ইউপির সংরক্ষিত নারী সদস্য। তিনি বলেন, পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যায় মমতাজ বেগমকে তারা পাশে পাননি। উল্টো জমিজমা ও সম্পত্তি বণ্টনে বৈষম্য করেছেন। এ কারণে তারা ক্ষোভে বোনের প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন।

মানিকগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কেউ কেউ বলেন, উন্নয়নে কোনো কাজই করেননি মমতাজ। গরিব মানুষকে তিনি অবহেলা করেছেন। সিঙ্গাইরে যা কিছু হয়েছে, সবকিছু তিনি তার আত্মীয়-স্বজন দিয়েই করিয়েছেন। চলচ্চিত্রের খলচরিত্রের সমালোচিত অভিনেতা ডিপজলকেও মমতাজের নির্বাচনী প্রচারণায় দেখা গেছে। হারার পর কেউ কেউ ডিপজলের প্রসঙ্গও এনেছেন। দলের প্রার্থীর পরাজয়ের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে না পারা এবং নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতির কারণে মমতাজ বেগমের হেরে যাওয়ার মূল কারণ। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পরাজয়ের বিষয়ে জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহিদ আহমেদ বলেন, ‘মমতাজ দীর্ঘদিন এ আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কণ্ঠশিল্পী। জনগণ হয়তো নতুন কিছু ভেবে আমাকে জয়ী করেছেন।’

গানের শিল্পী মমতাজ দেড় যুগ আগে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ২০০৯ সালে নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মনোনীত হন। আর ২০১৪ সালে মানিকগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মমতাজ। এবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে নৌকা প্রতীকে লড়েছেন তিনি। মানিকগঞ্জ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে হেরে গেলেন তিনবারের সংসদ সদস্য মমতাজ। মমতাজ বেগমকে হারিয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ। নির্বাচনে ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট পেয়েছেন জাহিদ আহমেদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী মমতাজ বেগম পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট। গত রবিবার রাত ১১টায় রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক রেহানা আকতার এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

যশোর : যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম ইয়াকুব আলীর কাছে ৫ হাজার ১৩৬ ভোটে হেরেছেন নৌকার প্রার্থী স্বপন ভট্টাচার্য্য। তিনি গত দুবারের সংসদ সদস্য ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা স্বপন ভট্টাচার্য্য পেয়েছেন ৭২ হাজার ৩৩২ ভোট। বিপরীতে যশোর জেলা কৃষক লীগের সহসভাপতি ইয়াকুব আলী ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৭৭ হাজার ৪৬৮ ভোট।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী খান টিপু সুলতানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জয়লাভ করেন স্বপন ভট্টাচার্য্য। এর মধ্য দিয়ে তার রাজনৈতিক উত্থান হয়। স্বপন ভট্টাচার্য্য জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ। তিনি ২০০৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সে সময় তার ভাবমূর্তি ছিল পরিচ্ছন্ন। ফলে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠতে তার বেশি সময় লাগেনি। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এ আসনে মনোনয়ন দেয় বীর মুক্তিযোদ্ধা খান টিপু সুলতানকে। বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী (কলস প্রতীক) হন স্বপন ভট্টাচার্য্য। ২০১৭ সালে সাবেক সংসদ সদস্য খান টিপু সুলতানের মৃত্যুর পর শীর্ষ নেতৃত্ব স্বপন ভট্টাচার্য্যরে বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করে। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন।

২০০৯ সালে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পরও জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছিলেন স্বপন ভট্টাচার্য্য। ২০১৮ সালে জয়ী হওয়ার পর সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হন। এরপর থেকেই তার জনপ্রিয়তায় ধস নামতে শুরু করে। অনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য স্বপন ভট্টাচার্য্য প্রতি ইউনিয়নে অযোগ্য ও সুযোগসন্ধানী লোক পুষেছেন বলে মন্তব্য করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মিকাইল হোসেন। প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য তার বিরুদ্ধে ওঠা তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘সারা জীবন আমি মণিরামপুরবাসীর ভাগ্যোন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছি।’ পরাজয়ের বিষয়টিকেও স্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন তিনি। তার মন্তব্য, ‘আমি সবসময় জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। তারা যেটা ভালো বুঝেছেন, সেটাই করেছেন। জনগণের রায়কে শ্রদ্ধা করি।’

মাদারীপুর : মাদারীপুর-৩ আসনে আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। মাদারীপুর-৩ আসনে তিনি ছিলেন হেভিওয়েট প্রার্থী। ২০১৮ সালে এ আসন থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচিত হন তিনি। এরপর থেকেই নেতাকর্মীদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে শুরু করেন তিনি। ভোটারদের ধারণা, নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকায় আওয়ামী লীগের ঘাঁটিতেই স্বতন্ত্র ‘ঈগল’ প্রতীকের প্রার্থীর কাছে ৩৪ হাজার ৬৬২ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন তিনি। আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ ‘নৌকা’ প্রতীকে পেয়েছেন ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী তাহমিনা বেগম ‘ঈগল’ প্রতীকে ৯৬ হাজার ৬৩৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুর-৩ আসনের স্থানীয় রাজনীতি দুই ভাগে বিভক্ত। আওয়ামী লীগের মধ্যে রয়েছে গ্রুপিং। একাংশের নেতৃত্ব দেন আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ, অপরাংশের নেতৃত্ব রয়েছেন কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তাহমিনা বেগম। কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের কমিটির মাত্র ৩ জন ছিলেন গোলাপের সঙ্গে। এছাড়া মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ অধিকাংশ নেতাকর্মীর সঙ্গেই গোলাপের ভালো সম্পর্ক ছিল না। যার কারণে নির্বাচনী প্রচার-প্রচরণায় তার সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগ ও দলটির কোনো অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছিলেন না।

কালকিনি পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন বলেন, টিআর এবং কাবিখাসহ বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দে সংসদ সদস্য গোলাপ এবং তার স্ত্রী গুলশান আরা বেগম ব্যাপক অনিয়ম করেছেন। এসব বিষয় উল্লেখ করে বিভিন্ন অনিয়মের ফিরস্তি তুলে ধরে ৭০ পৃষ্ঠার একটি অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে পেশ করা হয়েছে। কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুজ্জামান শাহীন বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়নি। পরাজিত হয়েছেন গোলাপ। তার বিভিন্ন অন্যায় ও অনিয়মের কারণে জনগণ ফুঁসে উঠেছিল। তার জবাব জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে দিয়েছে। এ কারণেই হেরেছেন তিনি।

মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মাদারীপুরের কালকিনিতে নির্বাচনি জনসভায় এসেছিলেন। এ সময় তার নির্বাচনী সভা মঞ্চে আমাদের ১১ নেতাকে যেতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন কারণেই মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। তবে তার হেরে যাওয়া মানে আওয়ামী লীগের হেরে যাওয়া নয়। যিনি জয়লাভ করেছেন তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এ বিষয় জানতে আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল রিভিস করেননি। গ্রামের বাড়ি গিয়েও তার দেখা পাওয়া যায়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close