নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৭ মে, ২০১৯

অনলাইনে টিকিট পেতে যত ভোগান্তি

এবার রেলের ছাদে ভ্রমণের সুযোগ নেই

যাত্রী ভোগান্তি কমাতে এবার ঈদুল ফিতর সামনে রেখে বাংলাদেশ রেলওয়ে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু রেলের ওয়েবসাইট ও নতুন তৈরি মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে টিকিট কাটার চেষ্টা করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন অনেকে। অনলাইনে ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কিনতে না পারার অভিযোগ করছেন তারা। বাধ্য হয়ে তাদের ছুটতে হয়েছে কমলাপুর স্টেশনসহ বিভিন্ন গন্তব্যের জন্য নির্দিষ্ট কাউন্টারে। ফলে দ্বিগুণ ভোগান্তির শিকার হয়েছেন টিকিট প্রত্যাশীরা। এদিকে এবারের ঈদে কেউ ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করার সুযোগ পাবে না বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি মনিটরিং করবে বলেও জানানো হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

রেলের আগাম টিকিট বিক্রির শেষদিনেও কমলাপুর স্টেশনে ছিল যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। শুক্র ও শনিবার যারা টিকিট কাটতে ব্যর্থ হয়েছেন তারাও ভিড় করেন কাউন্টারে। তবে ভিড় অন্য দিনের তুলনায় কম।

অনলাইনে টিকিট কাটা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগ ছিল বরাবরের মতোই। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়গুলো স্বাভাবিক। ঈদের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ২৯ মে থেকে।

গতকাল সকালে কমলাপুর স্টেশনে কথা হয় সরকারি তিতুমীর কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। রাজশাহী যাওয়ার সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট মোবাইল অ্যাপে কিনতে ব্যর্থ হয়ে কমলাপুর এসেছেন।

তিনি বলেন, অনেক চেষ্টা করেও মোবাইল অ্যাপে ঢুকতেই পারেননি তিনি। সকাল থেকে অনলাইনে এবং অ্যাপে চেষ্টা করেছি। রেলওয়ের ওয়েবসাইটে তাও ঢোকা যায় কিন্তু অ্যাপে ঢুকতেই পারি না। অ্যাপ ডাউনলোড করেও আবার ডিলিট করে দিয়েছি। পরে লাইনে এসে দাঁড়িয়েছি।

একই অভিযোগ করলেন বাসাবোর বাসিন্দা মাহবুব হোসেন। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মাহবুব বলেন, অগ্রিম টিকিট বিক্রির প্রথম দুই দিন তিনি মোবাইলের অ্যাপে টিকিট কেনার চেষ্টা করে বিফল হয়েছি।

আমার বাড়িতে তো ব্রডব্যান্ড নেই। পাড়ার একটা কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে অনলাইনে টিকিট কেনার চেষ্টা করেছি। একইভাবে মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করেও টিকিট কেনার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি, এখন এখান থেকে টিকিট পাই কিনা দেখি।

রেলওয়ের অনলাইন টিকিট সেবা দিচ্ছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সিএন?এসবিডি। গতকাল দেওয়া হয় ৪ জুনের টিকিট। ঢাকার স্টেশন থেকে অনলাইনে বরাদ্দ আছে ১০ হাজার ৫৬১টি টিকিট। এর মধ্যে দুপুর ১টার ২০ মিনিট পর্যন্ত ছয় হাজার ৫৭৩টি টিকিট বিক্রি হয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে সিএন?এসবিডি। তবে কমলাপুর স্টেশনের মনিটরে প্রদর্শিত সিএনএসবিডির এ তথ্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেন রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কিনতে আসা নাবিল আহমেদ।

তিনি জানান, তারা দেখাচ্ছে কয়েক হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। কিন্তু এই টিকিট পেলেন কারা? আমি এখানে আসার পরও সকাল থেকে ৩৫ থেকে ৪০ বার অ্যাপে টিকিট কেনার চেষ্টা করেছি, পারিনি। এখানে আমার আশপাশে যারা আছেন সবাই চেষ্টা করেছে অ্যাপসে টিকিট কেনার। আমার জানা মতে কেউ পায়নি। অ্যাপে যদি এত টিকিট বিক্রি হতো তাহলে আমরা সবাই এখানে কেন?

এ বিষয়ে সিএন?এসবিডির সিস্টেম এনালিস্ট ফারহান ইশতিয়াক বলেন, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছাড়া আর কারো বক্তব্য দেওয়ার অনুমতি নেই। তিনি এই মুহূর্তে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন।

ঈদের পর ই-টিকেটিংয়ের অব্যস্থাপনার অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, তারা (সিএনএসবিডি) আমাদের বলছে একসঙ্গে প্রায় চার লাখ লোক অনলাইনে টিকিট কিনতে চায়। এ কারণে সবাইকে টিকিট দেওয়া সম্ভব হয়নি। ঈদের পর আমরা বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করে দেখব। তাদের যুক্তি সঠিক প্রমাণ না হলে আমরা অন্য চিন্তা করব।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close