চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ০৬ জানুয়ারি, ২০১৯

আগের অনেকগুলোই বিকল ও অস্পষ্ট

চমেকে নিরাপত্তায় তৃতীয় ধাপে বসানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরা

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও অপরাধীদের শনাক্ত করতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করতে যাচ্ছে পুলিশ। এ নিয়ে তৃতীয় ধাপে ক্যামেরা বসানো হচ্ছে হাসপাতাল এলাকায়। এর আগে সেখানে দুই দফা ক্যামেরা বসানো হয়েছিল, যার অনেকগুলোই বিকল ও অস্পষ্ট। প্রতিদিনের সংবাদকে এসব কথা জানান চমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম। তিনি বলেন, হাসপাতাল এলাকায় এ পর্যন্ত একশোর মতো ক্যামেরার অনেকগুলো অস্পষ্ট ও বিকল হওয়ায় ফুটেজ শনাক্ত করতে কষ্ট হয়। এবারে গুরুত্বপূর্ণ ১৬টি পয়েন্টে ক্যামেরা স্থাপনে ব্যয় ধরা হয়ে ৩০ লাখ টাকা। চলতি সপ্তাহে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শেষ হবে। ফলে রোগীসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত সম্ভব হবে বলেন উপপরিচালক।

চমেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২০১২ সালে সীমিত পর্যায়ে কয়েকটি ওয়ার্ডে লাগানো হয় ক্যামেরা। কিন্তু এসব ক্যামেরায় কোনোভাবে রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়ার পর ২০১৩ সালে নেওয়া হয় নতুন উদ্যোগ। দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। দ্বিতীয় দফায় মোট ৬০টি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। স্থাপনের কয়েক মাসের মধ্যে নষ্ট হয়ে যায় অধিকাংশ ক্যামেরা। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি সেগুলো দেখভাল করেনি। ক্যামেরাগুলো ছিল স্বল্পমূল্যের ও নিম্নমানের। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে দুই বছরের চুক্তি হয়েছিল কর্তৃপক্ষের। পরে এগুলো সচল করার নির্দেশ থাকলেও পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় তা হয়ে উঠেনি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে একটি ওয়ার্ডে নবজাতক বদল করে ফেলার ঘটনাও ঘটে। পরে ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে এক নবজাতক চুরির ঘটনা ঘটে। শুধু তা-ই নয়, গত বছরের শেষের দিকে জরুরি বিভাগের সামনে পুলিশের ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজের সামনে থেকে এক ব্যক্তির মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাও ঘটে। গত বছরের ২১ জানুয়ারি কথা-কাটাকাটির জেরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে যায়।

এদিকে সিসি ক্যামেরা সচল হলে এ জাতীয় ঘটনার জন্য দোষীদের সহজে শনাক্ত করা সম্ভব মনে করছেন হাসপাতালের রোগী ও দর্শনার্থীরা। হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসা নগরীর বাকলিয়া থানার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এত বড় একটি হাসপাতাল। পর্যাপ্ত ক্যামেরা নেই। তা ছাড়া কোনো রোগীর প্রেসক্রিপশন নিয়ে বের হলেই চার-পাঁচজন এগিয়ে আসে। তাদের পছন্দমতো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করার জন্য। এ ছাড়াও কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলে দোষীদের ধরতে বেগ পেতে হবে।

এদিকে জরুরি বিভাগের সিসি ক্যামেরা নষ্ট থাকায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে যাওয়া ঘটনাটির কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। এতে আসামিরা চলে নাগালের বাইরে। এমনটা জানিয়ে চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহিরুল হক প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে হাসপাতাল এলাকায় অনেক ক্যামেরা নষ্ট হয়ে আছে। কিছু ঘটনা ঘটলেও আসামি ধরা সম্ভব হয় না। কিছুদিন আগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতাল এলাকার একজন অ্যাম্বুলেন্স ব্যবসায়ীর মদদে কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী দায়িত্বরত পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ঘটনার পর তারা গা-ঢাকা দেয়। জরুরি বিভাগের সিসি ক্যামেরা নষ্ট থাকায় আমরা ফুটেজ পাইনি। এতে আসামি শনাক্ত করতে বেগ পেতে হচ্ছে।

এবার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ১০ ক্যামেরা বসানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, হাসপাতাল এলাকায় প্রায় সময় ছোটখাটো চুরি-মারামারির ঘটনা ঘটে। সিসি ক্যামেরা না থাকার কারণে তাদের অপকর্ম শনাক্ত করা হয়নি বলে জানান জহিরুল হক। পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেইন গেট, পূর্ব গেট, পশ্চিম গেট, লাশ ঘরের সামনে, স্টাফ কোয়ার্টার, মর্গসহ ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close