জঙ্গি দমন এবং...
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ীর আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানায় সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযান এখনো শেষ হয়নি। অভিযানের দ্বিতীয় দিনে দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে। সেনাসদর দফতরের কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান জানিয়েছেন, জঙ্গিরা বেশ কৌশলী। আর সে কারণে অভিযানে ভালো ঝুঁকি রয়েছে। ফলে বলা যাচ্ছে না কখন এর পরিসমাপ্তি ঘটবে।
গত বছরের ১ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত জঙ্গি হামলা ও জঙ্গি দমনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮ জনে। স্বাধীনতা দিবস সামনে রেখে জঙ্গিদের এ হামলাকে নানাজনে নানাভাবে ব্যাখ্যা করছেন। তবে কোনো ব্যাখ্যাই জঙ্গি দমন প্রশ্নে কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি। জঙ্গি হামলা ক্রমেই বাড়ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারকে হটাতে জঙ্গিদের সম্পর্ক রয়েছে। বিএনপি জঙ্গিদের মদদ দিচ্ছে, পৃষ্ঠপোষকতা করছে। বিএনপির মদদ ছাড়া জঙ্গিরা এতটা আশকারা পাওয়ার কথা নয়। এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্রহীনতার কারণে এ দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তিনি আরো বলেছেন, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সেই ষড়যন্ত্রকারীদের মদদে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে জঙ্গিবাদ।
অপরদিকে দেশের কয়েকজন খ্যাতনামা নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের মতে, বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির চাকাকে থামিয়ে দিতে দেশি-বিদেশি একাধিক চক্র এ কাজে লিপ্ত। এদের মূল লক্ষ্য দেশের শিল্পকারখানায় আঘাত হানা। স্বাভাবিক জনজীবন বিঘিœত করা। দেশ ও দেশের মানুষকে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ঠেলে দিয়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করা।
তারা আরো বলেছেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ চক্র আইএস নাম দিয়ে নানাভাবে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। নিজেদের সাজানো ছকে তৈরি করা কথিত জঙ্গি দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে উসকে দিচ্ছে। বিশেষ উদ্দেশ্যে সম্প্রতি এর মাত্রা বাড়ানো হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও আত্মঘাতী হামলার ঘটনা ঘটছে। যার সঙ্গে প্রকৃত আইএস চরিত্রের কোনো মিল নেই।
মিল থাকুক বা না থাকুক, প্রশ্ন সেখানে নয়। আমরা মনে করি, যারা এ কর্মটি করছে তারা এ দেশেরই সন্তান। বাইরের কেউ নয়। এহেন কুকর্ম করার জন্য টাকা দিয়ে মানুষ সংগ্রহ সম্ভব নয়। শুধু টাকার জন্য তারা এ কাজে এগিয়ে এসে জীবন বিসর্জন দেবেÑএমনটা হতে পারে না। কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে এদের মস্তিষ্কে ইসলাম বিকৃতকারীরা বিকৃত ব্যাখ্যা স্থাপন করে তাদের একেকটি রোবটে পরিণত করেছে। ভবিষ্যতে আর কেউ যেন এ পথে পা বাড়াতে না পারে, সে জন্য তাদের অপব্যাখ্যার বিপরীতে প্রকৃত ব্যাখ্যার কথা জানাতে হবে ১৬ কোটি মানুষকে। আর এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে সরকার ও দলমত নির্বিশেষে শিক্ষিত সমাজকে। সম্ভবত এটাই হবে জঙ্গি দমনের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার।
"