reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ মে, ২০২৪

রেলপথের নিরাপত্তা বাড়ানো হোক

রেলপথে পয়েন্ট এরিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পয়েন্টের মাধ্যমে ট্রেন এক লাইন থেকে অন্য লাইনে প্রবেশ করে। পয়েন্টের নাট-বল্টু বা ক্লিপ না থাকলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। তা সত্ত্বেও রেললাইন থেকে প্রায়ই যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে যায়। নাট-বল্টু বা ক্লিপার (ক্লিপ) না থাকায় তীব্র গরমে রেললাইন বেঁকে গিয়ে বাকলিং হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

গত বুধবার প্রকাশিত প্রতিদিনের সংবাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেট-আখাউড়া রেলপথের শ্রীমঙ্গল থেকে কুলাউড়া পর্যন্ত রেললাইনের শ্রীমঙ্গল, ভানুগাছ, শমশেরনগর, মনু, টিলাগাঁও, লংলা ও কুলাউড়া স্টেশনের মধ্যে অনেক স্থানে ক্লিপ-হুক নেই। ক্লিপ, হুক, ফিশপ্লেটসহ লোহার যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। তবু কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অনেক স্থানে রেললাইনের স্লিপারে নেই নাট-বল্টু। কোথাও নাট থাকলে বল্টুর পরিবর্তে সুতো দিয়ে বাঁধা হয়েছে। মেরামতের জন্য পুরাতন কাট ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক যন্ত্রাংশ চুরি হওয়ার পরও লাগানো হচ্ছে না। এগুলো জোড়াতালি দিয়ে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নাট-বল্টু ও ক্লিপ না থাকার কারণে তীব্র গরমে লাইন বাকলিং হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পুরাতন সেতু ও কালভার্ট ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সংস্কার না হওয়ায় অনেক সময় বড় বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ট্রেন। ২০১৮ সালে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সেতু ভেঙে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। গত বছর লাউয়াছড়ায় গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ট্রেনের কয়েকটি বগি উল্টে যায়। এছ াড়া রেলপথ ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় লাউয়াছড়া উদ্যানের পাহাড়ি এলাকায় নিয়মিত ট্রেন আটকা পড়ে। সিলেট থেকে শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশন পর্যন্ত রেলপথ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কোথাও দ্রুতগতিতে চলে আবার কোথাও ধীরগতিতে।

দেশের পুরোনো রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি হলো বাংলাদেশ রেলওয়ে। সরকার রেলওয়েকে নতুন করে গড়ে তুলতে আন্তরিক। নতুন নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া পুরোনো রেলপথ নতুন করে চালু করা হচ্ছে। কোনো দিন ট্রেন চলেনি এমন অনেক এলাকায় রেললাইন স্থাপনের কাজ চলছে। অনেক এলাকায় এরই মধ্যে রেলপথ স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। ট্রেন চলাচল শুরুও হয়েছে। বর্তমান সরকার রেলওয়েকে আধুনিক করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে নতুন কোচ ও ইঞ্জিন, কিন্তু যাত্রীদের সুরক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিয়ে এখনো প্রশ্ন আছে। রক্ষণাবেক্ষণেও ঘাটতি থাকছে। রেললাইন থেকে ক্লিপ, নাট-বল্টু চুরি হয়ে যায়। রেলের এ সমস্যাগুলো দীর্ঘদিনের। রেললাইনে নাট-বল্টু বা ক্লিপ না থাকলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। এর বাইরে রেলে নাশকতার ঘটনাও ঘটে। কখনো কখনো চলন্ত ট্রেনে পাথর ছুড়ে মারা হয়। এসবের ভয়ে যাত্রীদের তটস্থ থাকতে হয়। এত সব সমস্যাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।

রক্ষণাবেক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনাগতসহ রেলপথে অনেক সমস্যা রয়েছে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। রেলপথে ভ্রমণে যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে সব সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি ভ্রমণ আরামদায়ক ও নিরাপদ করতে হবে। একই সঙ্গে বাড়াতে হবে রেলপথের নিরাপত্তা। ট্রেন ভ্রমণ নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close