reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ এপ্রিল, ২০২৪

বাড়ছে তাপপ্রবাহ

স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই

গ্রীষ্মের শুরুতে গোটা দেশেই হাঁসফাঁস অবস্থা। অস্বস্তি বাড়াচ্ছে আর্দ্রতা। এরই মধ্যে দেশের কোনো কোনো এলাকায় তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের গণ্ডি। আবহাওয়ার পরিভাষায় যাকে বলা হয় তীব্র তাপপ্রবাহ। বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, গ্রীষ্মের এ দাবদাহ আগামী কয়েক দিনে অতি তীব্রতে রূপ নিতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৩ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশ জুড়ে কোথাও কোথাও তীব্র তাপপ্রবাহ, কোথাও কোথাও মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে। এরই মধ্যে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাসও দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সেই সঙ্গে শিলাবৃষ্টির কথাও বলা হয়েছে। তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং দিনাজপুর, রাঙামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। আর রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

কড়া রোদ, উষ্ণ বাতাস আর তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজধানীসহ সারা দেশের জনজীবন। প্রচণ্ড গরমে ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তিতে নেই মানুষ। সবার মধ্যেই এক ধরনের হাঁসফাঁস অবস্থা। ঘরের বাইরে বের হলেই ঘেমে অস্থির। তীব্র তাপে শরীর থেকে সব পানি বের হয়ে যাচ্ছে। এতে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষ করে যারা জীবিকার তাগিদে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন তারা আছেন সবচেয়ে বিপাকে। পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে রোদণ্ডগরম উপেক্ষা করে কাজ করতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষকে। তবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এটি ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে বেশি হলেই হিট স্ট্রোক হতে পারে। এ সমস্যায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না পেলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়। এ সময় শরীরের হৃৎপিণ্ড দ্রুত স্পন্দিত হয় এবং রক্ত পাম্প করার জন্য একে বেশি পরিশ্রম করতে হয়। এ কারণে ত্বকে ঘাম তৈরি হয়। আর গরমে অতিরিক্ত ঘামলে শরীর ডিহাইড্রেড হয়ে পড়ে। তাই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমসহ নানা কারণে ডায়রিয়াসহ ঠান্ডা-জ্বর, নিউমোনিয়া এবং বিভিন্ন ধরনের রোগীর চাপ কিছুটা বেড়েছে হাসপাতালগুলোয়। গরমকালে বৃদ্ধ ও শিশুদের ক্ষেত্রে সাবধানতা খুব বেশি প্রয়োজন। বিশেষত নবজাতক, শিশু, গর্ভবতী ও বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে এটি ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয় পানিশূন্যতা থেকে। তাই এ সময়ে সতর্ক থাকার বিকল্প নেই। সরাসরি রোদে কাজ না করা, কাজের সময় মাথায় ছাতা বা তেমন কিছু রাখা এবং প্রচুর পানি পান করতে হবে। এ সময় শিশু ও বয়স্কদের প্রতি অধিক যত্নবান হতে হবে। একই সঙ্গে পরিবেশ সুরক্ষায় সবাই আরো বেশি যত্নবান হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close