reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৩ অক্টোবর, ২০২১

চেইনশপে সাজানো হোক টিসিবিকে

নিম্নবিত্তের সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে। কার্যকারণ হলো দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। বাজারে নিত্যপণ্যের দাম এখন সাধারণের নাগালের বাইরে। বিষয়টির সঙ্গে আমাদের দেশের বন্যার এক অদ্ভুত যোগাযোগ। প্রতি বছর এরা মামাবাড়িতে বেড়াতে আসার মতো অন্তত একবার আসবেই। মামাবাড়ি বলে কথা। ৭২ ঘণ্টা এখনো পার হয়নি। বন্যা হাজির। তার আসার কারণে তিস্তা অববাহিকার অর্ধশতাধিক গ্রাম এখন পানিবন্দি। ভাগনি বলেছে, মামা- এবার জলের ফলন ভালো। তাই একটু বেশি করেই নিয়ে এলাম।

তবে দুষ্টজনরা বলছেন, ভারত কর্তৃপক্ষ তিস্তা ব্যারাজের গজলডোবা অংশের সব কটি গেট খুলে দেওয়ায় পানিতে ভাসছে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের অর্ধশতাধিক গ্রাম। এলাকাবিশেষ কর্তৃপক্ষ রেড-অ্যালার্ট জারি করেছে। নিচু এলাকা থেকে মানুষজন ও গবাদি পশু সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নদীভাঙন ঠেকাবে কে? মানুষের দুর্দশা লাঘব! এ প্রশ্নের কোনো জবাব নেই, ছিল না কখনো।

একই অবস্থা নিত্যপণ্যের বাজারেও। দাম সাধারণের নাগালের বাইরে। তেল, চিনি, ডাল, আটাসহ অন্যান্য পণ্যও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এখানকার অবস্থাও তথৈবচ। দেখার কেউ নেই। নাহ্..., বাক্যটি সত্য নয়। প্রকৃত সত্য হলো দেখার লোক আছে। কিন্তু তিনি চোখ থাকিতেও অন্ধ। এই নাটকীয় অন্ধত্বের পেছনে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো কার্যকারণ আছে। এখানেও দুষ্টজনরা বলেছেন, রাজনীতিকরা যখন ব্যবসায়ীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন, তখন সাধারণের স্বার্থ বিপর্যস্ত হবেই। কথাটি সত্য। সমাজবিজ্ঞানও একই কথা বলে।

পৃথিবীতে মানুষ একসঙ্গে সম্মান এবং সম্পদের মালিকানা অর্জন করতে পারেনি। কখনো তা সম্ভবও নয়। একের ভেতরে দুয়ের উপমা খুঁজে পাওয়া ভার। তাই রাজনীতিকরা যখন ব্যবসায়ীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন অথবা ব্যবসায়ীরা যখন রাজনীতিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন, তখন বাজারের উত্তাপ বাড়তেই থাকবে। সম্ভবত এর মধ্য দিয়েই চলতে হবে সাধারণ মানুষকে।

সরকার টিসিবির মাধ্যমে অবস্থা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। মানুষ লাইন দিয়ে তা সংগ্রহের চেষ্টা করছে। ট্রাকের পাশে ক্রমেই মানুষের চাপ বাড়ছে। কারণ একটাই, মূল্য বাজার দরের অর্ধেক। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত এই বিপন্ন ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। তারপর একসময় বলা হবে বাজার স্থির।

তবে এ ব্যবস্থাপনায় খুব কমসংখ্যক মানুষ এই সুবিধা পেয়ে থাকেন। আমরা অপেক্ষায় থাকি, আবার কবে তিস্তার পানিতে গ্রাম ভাসবে। বাজার অস্থির হয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়াবে। এ যেন এক চোর-পুলিশ খেলার মতো। চুরি হচ্ছে সবার সামনে। চোরকেও আমরা চিনি। তবে ধরা যাচ্ছে না। চোর না হয়েও পুলিশের হাত-পা বাঁধা। দুষ্টজনরা বলেছেন, সমস্যা একের ভেতরে দুয়ের অবস্থান। এ দুয়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও সম্পূর্ণ বিপরীত। একপক্ষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য জনসেবা। অন্যপক্ষের প্রতারণা।

সুতরাং এই দুই চরিত্র কখনো একের ভেতরে দুই হয়ে বাস করতে পারে না। বাস করাটা হবে সাংঘর্ষিক। তবু বর্তমান সময়ে প্রায়ই একর ভেতরে এই দুই চরিত্রকে এক বিছানায় থাকতে দেখছি। আর সে কারণেই এত বিপর্যয় এবং ধারাবাহিক। আগেই বলেছি, এর মধ্যেই আমাদের বসবাস করতে হবে। তবে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাসের জন্য আমরা একটা পথের সন্ধান দিতে পারি। সরকার যদি বিবেচনা করে, তাহলে কিছুটা হলেও মানুষ পরিত্রাণ পেতে পারে। আমরা মনে করি, দেশের প্রতিটি এলাকায় টিসিবি চেইনশপ গড়ে তোলাই হবে একমাত্র সমাধান। চেক অ্যান্ড ব্যালেন্সের জন্য তা করাটা খুবই জরুরি এবং সরকার নিশ্চয়ই বিষয়টি ভেবে দেখবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close