আবু আফজাল সালেহ

  ১৯ এপ্রিল, ২০১৯

পর্যালোচনা

সচল হোক রেল-কারখানা

বাংলাদেশের তিনটি রেল-কারখানা। পাহাড়তলী, সৈয়দপুর আর পার্বতীপুরে অবস্থিত এ কারখানাগুলো। রেলওয়ে সূত্রমতে, ১৮৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রেলওয়ের সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ। আর চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন কারখানার যাত্রা শুরু হয় ১৯৪৭ সালে। এ ছাড়া ১৯৯২ সালে চালু করা হয় পার্বতীপুরে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) কারখানা। কারখানাগুলো প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল রেলওয়ের লোকোমোটিভ, ক্যারেজ ও ওয়াগনের সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণ, আয়ুষ্কাল ঠিক রাখার পাশাপাশি গতিশীলতা বজায় রাখা। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ের কারখানাগুলোতে লোকবল সংকট, বাজেট স্বল্পতা, প্রয়োজনীয় কাঁচামালের অভাব, পুরোনো যন্ত্রপাতি এবং আধুনিক মেশিনারিজের অভাবে কাজের স্বাভাবিক গতি বজায় রাখতে পারছে না; যা যাত্রীসেবা প্রদান ও পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে অন্তরায়। কম অর্থ বরাদ্দ ও দক্ষ লোকবলের অভাবে রেলওয়ের পাহাড়তলী, সৈয়দপুর ও পার্বতীপুরের কারখানার কর্মক্ষমতা প্রায় শূন্যের কোটায় নেমেছে। এসব কারখানায় ট্রেন পরিচালনায় যাবতীয় যন্ত্রপাতি মেরামত করাসহ স্টিম রিলিফ ক্রেন ও দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত রেল কোচ, ওয়াগন ইঞ্জিন মেরামতের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা হয়। এ ছাড়া কারখানাগুলোতে খুচরা যন্ত্রাংশও তৈরি হয়ে থাকে। কিন্তু কাঁচামালের অভাব ও মেয়াদোত্তীর্ণ যন্ত্রাংশের কারণে সংকটাপন্ন পরিস্থিতিতে রয়েছে কারখানাগুলো। এগুলো চলছে ধুঁকতে ধুঁকতে।

প্রায় দেড়শ বছর আগে ইংরেজ বেনিয়ারা সৈয়দপুরে প্রতিষ্ঠা করে বিশাল রেলওয়ে কারখানা; যা আজও বাংলাদেশের বৃহত্তম রেলওয়ে কারখানা হিসেবে পরিচিত। আসাম-বেঙ্গল রেলপথকে ঘিরে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ১১০ একর জায়গার ওপর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা প্রতিষ্ঠা করে। এরপর ১৯০৩ সালে কারখানাটি মিটারগেজ যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়ি এবং স্টিম লোকোমোটিভ মেরামত কারখানায় রূপান্তরিত হয়। পরবর্তীতে ১৯৫৩ সালের দিকে কারখানায় বিভিন্ন মেশিন শপ স্থাপন করে ব্রডগেজ ও মিটারগেজ যাত্রীবাহী গাড়ি মেরামত ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ উৎপাদনের সুবিধাসহ পূর্ণাঙ্গ কারখানা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সৈয়দপুর কারখানায় আছে ২১টি শপ (উপকারখানা)। কারখানাটি পশ্চিম রেলের ব্রডগেজ ও মিটারগেজ রেলপথের যাত্রীবাহী বগি (ক্যারেজ), মালবাহী বগি (ওয়াগন) এবং পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলের স্টিম রিলিফ ক্রেনের সুষ্ঠু পরিচর্যা এবং আয়ুষ্কাল ঠিক রাখার পাশাপাশি কোচের গতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ ছাড়া এখানে ক্যারেজ, ওয়াগন ও লোকোমোটিভের ১ হাজার ২০০ রকমের খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরির ক্ষমতা আছে।

১৯৯১ সালে রেলওয়ে রিকভারি প্রোগ্রামের আওতায় রেলওয়ের লোকবল ৫৮ হাজার থেকে ৩৫ হাজারে নামিয়ে আনা হয়েছে। বর্তমানে সৈয়দপুর রেল-কারখানায় শ্রমিক সংকট তীব্র হয়ে ওঠেছে। জানা গেছে, কারখানায় কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারীর মঞ্জুরিকৃত পদ আছে ৩ হাজার ১৭১টি। কারখানায় মঞ্জুরিকৃত প্রায় ৬০ শতাংশ শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও নতুন লোকবল নিয়োগের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে মামলা চলমান আছে। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়া জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের অধিক আন্তরিক হয়ে মামলার ঝামেলা মেটাতে হবে। অনেক সময় ব্যক্তিগত বা মুষ্টিমেয় কিছু লোকের স্বার্থের জন্য বা সরকারি সিদ্ধান্তে কিছু লোকের আঘাত হানতে পারে ভেবে ইচ্ছাকৃত মামলাও হয়ে থাকে। এতে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীও জড়িত থাকেন। সত্যিকারের সমস্যা বের করে উদ্যোগী হতে হবে। ৩৭০ জন মঞ্জুরিকৃত খালাসি পদে বর্তমানে কর্মরত আছেন ৯৮ জন। শ্রমিকের অভাবে কাজের পরিধি কমে যাওয়ায় যে অল্পসংখ্যক শ্রমিক-কর্মচারী রয়েছেন, তারাও অলস সময় পার করছেন। কারখানায় নিয়োজিত অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বয়স ৫০-এর ওপরে চলে গেছে। এর মধ্যে কর্মকর্তাদের শতকরা ৭০ ভাগ আর কর্মচারীদের প্রায় ৮০ ভাগের বয়স ৫০-এর উপরে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে ১০০, ২০১৯ সালে ১৩০ এবং ২০২১ সালে ১৫০ জন অবসরে যাবেন বলে রেল-কারখানা সূত্রে পাওয়া যায়। এতে করে কারখানায় বিদ্যমান জনবল সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি রেল কোচ চার বছর পর পর পিরিওডিক্যাল ওভারহোলিং (পিওএইচ), ১২ বছর পর পর জেনারেল ওভারহোলিং (জিওএইচ) করার কথা। এ কারখানায় বরাদ্দ, জনবল সংকট ও কাঁচামালের অভাবে কোচ মেরামতে ওভারডিউ হয়ে পড়েছে। প্রাচীন কারখানায় নতুন কোচ উৎপাদনের শপটির নাম ছিল ক্যারেজ কনস্ট্রাকশন শপ বা সিসি শপ। ১৯৮০ থেকে ১৯৯২ সালের মধ্যে ২৩০টি নতুন মিটারগেজ কোচ নির্মাণ করা হয় এ কারখানায়। নতুন কোচ নির্মাণে ব্যবহার করা হতো স¤পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি। দেশীয় মালামাল ব্যবহার করায় খরচ কম হতো। আমদানি মূল্যের অর্ধেক মূল্যে সৈয়দপুর রেল-কারখানায় নতুন যাত্রীবাহী কোচ নির্মাণ করা হতো। কিন্তু ১৯৯৩ সালে অজ্ঞাত কারণে সৈয়দপুর কারখানার ক্যারেজ কনস্ট্রাকশন শপ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান সরকার গণপরিবহনের অন্যতম সেবা খাত হিসেবে রেলওয়েকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। আর এ কারখানার জনবল নিয়োগ দিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিসি শপ পুনরায় চালু করে কম খরচে অত্যাধুনিক নতুন ক্যারেজ নির্মাণ করা সম্ভব। এতে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ দেশের অর্থও সাশ্রয় হবে। তিনি সিসি শপ চালু ও কারখানায় জরুরিভিত্তিতে জনবল করা দরকার। কারখানা চাঙা রাখতে হলে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সরবরাহ এবং পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রকল্প নিলে ২০১২ সাল থেকে কারখানায় আধুনিকায়নের কাজ হয়। ১৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের অধীন কারখানার ১৭টি শপ সংস্কার, ওয়াটার পাম্প স্থাপন, কারখানার ভেতরের রেলপথ সংস্কার, বিভিন্ন শপে পান্টস ও মেশিন এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপনের কাজ শুরু হয়। গত ডিসেম্বরে আধুনিকায়নের কাজ শেষ হয়েছে বলে জানা যায়। তবে কারখানা শতভাগ উৎপাদনক্ষম হয়নি। তড়িঘড়ি করতে গিয়ে লালমণি এক্সপ্রেসের কোচের (ক্যারেজ) মান আশানুরূপ হয়নি। অথচ বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে বলে জানা যায়। উৎপাদন করতে গেলে কাঁচামাল দরকার এবং তা কিনতে প্রয়োজন টাকার। এ ছাড়া দরকার শ্রমিক। এটিও টাকার ওপর নির্ভরশীল।

নেই পর্যাপ্ত লোকবলও। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা প্রতিষ্ঠার সময় শত শত মেশিনের শব্দ ও কয়েক হাজার শ্রমিক-কর্মচারীর পদচারণায় মুখর ছিল। শুরুতে ওই কারখানাটিতে মঞ্জুর করা পদ ছিল ৪ হাজার। সরকার ২০০৩ সালে ওই সংখ্যা কমিয়ে ১ হাজার ৬২১ জনে দাঁড় করায়। পাহাড়তলীতে ২ হাজার ১২৮ জনের বিরপীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১ হাজার ৫০ জন। অর্থাৎ সব কারখানাই প্রায় ৫৫ শতাংশ কম লোকবল নিয়ে চলছে। শুধু বিনিয়োগ ও লোকবল ঘাটতির কারণেই ইঞ্জিন, ক্যারেজ ও ওয়াগন মেরামতের সুযোগ থাকলেও অতিরিক্ত অর্থ খরচ করে বাইরে থেকে আমদানি ও মেরামত করতে হচ্ছে। আমাদের কারখানাগুলো আজ ধ্বংসের মুখে।

সৈয়দপুর ওয়ার্কশপে বছরে ৯০০ কোচ ও ২ হাজার ৫০০ ওয়াগন মেরামতের সক্ষমতা থাকলেও ২০১২-১৩ অর্থবছরে মাত্র ১৪৭টি কোচ ও ১৬৮টি ওয়াগন, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১৩২টি কোচ ও ১৪৮টি ওয়াগন, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১২৬টি কোচ ও ১৫১টি ওয়াগন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১২৬টি কোচ ও ১৪৭টি ওয়াগন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১২৩টি কোচ ও ১১৯টি ওয়াগন মেরামত করা হয়। অথচ ২০০৬-০৭ অর্থবছরে ওয়ার্কশপটিতে ৩২০টি কোচ ও ২৫৪টি ওয়াগন মেরামত করা হয়েছিল। এতেই বোঝা যায় কারখানাগুলোর কার্যক্ষমতা কতটা কমছে। সৈয়দপুরের এ কারখানাটিতে ২ হাজার ৮৩৪ জন জনবলের স্থলে বর্তমানে ১ হাজার ১৩ জন রয়েছেন। ২০১৮ সালের মধ্যে অবসরে যাবে আরো প্রায় সাড়ে ৫০০ জনবল। এ ছাড়া ১৫৬ কর্মকর্তার পদের বিপরীতে কাজ করছেন ৬৬ জন। ৮৪২টি মেশিনের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে ৮৭ শতাংশ মেশিন। মাত্র ১৩ শতাংশ মেশিন মেয়াদের (২০ বছরের মধ্যে) মধ্যে রয়েছে। বাকিগুলোর অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর পেরিয়ে ২০০ বছরে গিয়ে ঠেকেছে! একই অবস্থা পাহাড়তলী ও পার্বতীপুর রেলওয়ে কারখানায়ও। ১৯৮৭ সালে যাত্রার সময় পাহাড়তলী রেলওয়ে ওয়ার্কশপ যে অবস্থায় ছিল, এখনো যেন তেমন! আধুনিকায়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। এ কারখানায় ৪৪৯টি যন্ত্রপাতির মধ্যে ২৭১টির বয়স ৫০ থেকে ৮০ বছর পেরিয়ে গেছে। যন্ত্রপাতির আয়ুষ্কাল ২০ বছরের হিসাব অনুযায়ী মাত্র ১২ শতাংশের মেয়াদ রয়েছে। এ অঞ্চলে ৯৩০টি কোচ ও ৬ হাজার ওয়াগন রয়েছে।

রেলওয়ের সব ট্রেনের ইঞ্জিন মেরামত করা হয় পার্বতীপুর লোকোমোটিভ কারখানায়। সম্ভাবনাময় কারখানাটির অবস্থা আরো নাজুক। কারখানাটি রেলওয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিন মেরামত করছে। একের পর এক ইঞ্জিন আমদানি করলেও ইঞ্জিন মেরামতের একমাত্র এ কারখানাটি কারো চোখে পড়ে না। এখানে প্রতি অর্থবছরে ২৪ থেকে ৩০টি ইঞ্জিন মেরামত করার কথা থাকলেও গত অর্থবছরে মাত্র ১৪টি ইঞ্জিন মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। পার্বতীপুর রেলওয়ে কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা সূত্রে জানা যায়, ইঞ্জিন মেরামতের কাজে ব্যবহৃত ৯৯ শতাংশ যন্ত্রাংশই আমদানি করতে হয়। কোনো যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হলে জানাতে হয় চট্টগ্রামের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে। ফলে যন্ত্রাংশ পেতেও দীর্ঘ সময় লাগে। এ ছাড়া জনবল সংকট আছেই। ৫৪৫ জন জনবলের স্থলে ২৩৭ জন নিয়ে কাজ চলছে। ইঞ্জিন মেরামত খুবই টেকনিক্যাল কাজ। এ ক্ষেত্রে দক্ষ শ্রমিক দরকার। দক্ষ শ্রমিকরা অবসরে যাচ্ছেন। লোক নিয়োগ না করলে নতুনদের দক্ষ করতে অন্যের দ্বারস্থ হতে হবে। ফলে ব্যয় বাড়বে। কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যাবে না। আরো জানা যায়, দেশের সব ইঞ্জিন এখানে মেরামত করা হয়। কম বরাদ্দ, লোকবলের সংকট ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ পেতে দীর্ঘসূত্রতার কারণে উৎপাদন দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। যথাসময়ে কোনো কাজই করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি করতে গিয়ে মান কমে যাচ্ছে।

সৈয়দপুর কারখানায় প্রায় ১২০০ প্রকার খুচরা যন্ত্রাংশ উৎপাদনে সক্ষম। এগুলো আমদানি করতে গেলে খরচ ও সময় অনেক বাড়ে। কাজের অভাবে শ্রমিকরা অলস পড়ে থাকেন এবং তখন মাথায় খারাপ বুদ্ধিও আসে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পার্বতীপুরের কারখানার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি-যন্ত্রাংশ পাহাড়তলী থেকে আনতে হয়। টেন্ডার প্রক্রিয়া করতে হয়। এতে সময় ও খরচ বাড়ে। সামান্য একটা জিনিসের অভাবে কার্যক্রম বন্ধ থাকে। এতে দীর্ঘসূত্রতা হয় ও খরচ বাড়ে। রেলসেবা বিঘিœত হয়। সরকারের বদনাম হয়। এসব বিষয়ে সরকারকে সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

লেখক : কবি ও কলামিস্ট

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close