reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৬ মার্চ, ২০১৯

খেলাপিমুক্ত দেশ চাই

চাইলেই কি সব পাওয়া যায়! যায় না। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের মানুষ খেলাপিদের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে এসেছেন। এখনো তারা সেই উচ্চারণ থেকে সরে আসেননি। সম্ভবত তাদের উচ্চারিত শব্দাবলি কর্তৃপক্ষের কানে যায়নি। খেলাপি ঋণ বাড়তে বাড়তে লক্ষ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে। ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও উচ্চারিত হয়েছে বহুবার। কিন্তু বাস্তবে তার কোনো চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঠিক এ রকম বাস্তবতায় যখন খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে; তখন সাধারণ মানুষের আকাক্সক্ষা কিছুটা হলেও নড়েচড়ে বসবেÑ এটাই স্বাভাবিক।

মিডিয়া বলছে, বেসিক ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচটি ব্যাংকে ‘বিশেষ অডিট’ কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। দেশ থেকে অবৈধভাবে টাকা পাচারের ঘটনা ও খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখার জন্য এ সিদ্ধান্ত। ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এসব ব্যাংকের কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হবে এ বিশেষ নিরীক্ষা (অডিট)।

সম্প্রতি সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে তিন ধরনের তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। তিন সপ্তাহের মধ্যে এসব তথ্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কাছে পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে এসব নির্দেশনার ইতিহাস বেশ সমৃদ্ধ হলেও নির্দেশনার কার্যকারিতা তেমন একটা সমৃদ্ধ নয়। আর সে কারণেই বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, সরকারের এ উদ্যোগ অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসেবে ভালো। কিন্তু ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে পরিচালিত হলে অতিরিক্ত এ অডিটের প্রয়োজন হয় না। কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি ব্যাংকের নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নিজস্ব অডিট ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। এ ছাড়া বছর শেষে ব্যালান্সশিট তৈরির সময় এক্সটার্নাল অডিটের প্রচলন রয়েছে। এর বাইরে সরকারের অডিট ডিপার্টমেন্ট তো আছেই। স্বাভাবিক কারণেই এখানে প্রশ্ন করা যায়, এসব অডিট ডিপার্টমেন্টের কাজ কী! এসব প্রতিষ্ঠান কেন ব্যাংকিং খাতে এসব ঘটনা চিহ্নিত করতে পারেনি। তার মতে, কাজ না বাড়িয়ে ব্যাংকিং খাতের জন্য সরকারের প্রয়োজন

স্বচ্ছ ও জবাবদিহি।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের বক্তব্য এবং মতামতের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বলা যায়, সরকার সম্ভবত আরো একটি ক্রস চেক করে দেখতে চায়। সেখানে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। তবে আপত্তি অন্যত্র। কাগজ চালাচালির মধ্য দিয়ে যেন দেশবাসীকে আরো একটি বছর অপেক্ষার কষ্টদায়ক সময়ের মধ্যে থাকতে না হয়। আমরা মনে করি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। যত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে; তত দ্রুতই বাংলাদেশের অর্থনীতি পঙ্কিলমুক্ত হতে সক্ষম হবে। এখানেই সমাধান এবং আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close