reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৫ জানুয়ারি, ২০১৯

সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটুক

দেশের রফতানি আয়ের সবচেয়ে বড় খাত গার্মেন্টশিল্প। যে শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিক। কর্মসংস্থান ও রফতানির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এই শিল্পে কোনো ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, এ বিষয়ে বরাবরই সচেষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গার্মেন্টশিল্পে সাম্প্রতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সব বৈষম্য দূর করে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন এবং তা দ্রুত কার্যকরের নির্দেশনাও দিয়েছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। মজুরি বাস্তবায়ন নিয়ে চলমান এই অস্থিরতা শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য বড় ধরনের হুমকি। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি স্থানে শ্রমিকদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। তাতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। পাশাপাশি বলতে চাই, তার এই রাষ্ট্রনায়কোচিত ঘোষণা শ্রমিক অসন্তোষ প্রশমনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

বলা বাহুল্য, ঘোষিত মজুরি কয়েকটি গ্রেডে যৌক্তিক হারে বৃদ্ধি করে এবং গ্রেডগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে সরকার। তবে ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গ্রেড নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে আপত্তি রয়েছে। তা সত্ত্বেও মোট ছয়টি গ্রেডে মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। মজুরি বৃদ্ধির এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশন। অন্যদিকে, মালিকপক্ষ শ্রমিকদের অভিযোগগুলো সুরাহার আশ্বাস দিয়েছেন, যা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। গত রোববার সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান গ্রেডগুলো সমন্বয়ের ঘোষণা দেন। এতে বলা হয়েছে, পোশাক শ্রমিকরা জানুয়ারি মাসের বেতন নতুন মজুরি কাঠামো অনুসারে পাবেন। নতুন মজুরি কাঠামো অনুসারে ডিসেম্বর মাসে যে পরিমাণ টাকা কম পেয়েছেন, তাও জানুয়ারি মাসের বেতনের সঙ্গে দেওয়া হবে। এত দিন মজুরি কাঠামো নিয়ে যে অসামঞ্জস্য ছিল, প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তা সমাধান হয়েছে। এবার শ্রমিকদের কোনো ধরনের উসকানি কিংবা প্রলোভনে মত্ত না হয়ে দেশের এবং নিজেদের স্বার্থে কাজে যোগ দেওয়াই হবে সঠিক সিদ্ধান্ত। আমরা আশা করি তারা শুভবুদ্ধির পরিচয় দেবে। উল্লেখ্য, বেতন কাঠামোতে বৈষম্যের অভিযোগ এনে পোশাক শ্রমিকদের এক সপ্তাহ ধরে চলা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি সমাধানে মজুরি সমন্বয়ের জন্য শনিবার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গার্মেন্টশিল্পে এ পরিস্থিতি অবশ্যই একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা। দর-কষাকষির চেয়ে বরং জাতীয় স্বার্থে সব পক্ষকে উদার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। ৪০ লাখেরও বেশি শ্রমিকের গার্মেন্ট খাতের অস্থিরতা শুধু সরকার নয় সারা দেশের জন্যও চরম অস্বস্তিকর। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের কোনো ঘটনার উদ্ভব না হয়, এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমরা আশা করি, পোশাক শ্রমিকদের অসন্তোষ নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা সফল হবে। অন্যদিকে স্বার্থের বিবেচনা না করে মালিকপক্ষও সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবেÑ এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close