reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ অক্টোবর, ২০১৮

থামেনি ইয়াবার বেচাকেনা

ধারাবাহিক মাদকবিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কিছুদিন আগেও মাদকের যে ঝনঝনানি শোনা গিয়েছিল তা এখন আর শোনা না গেলেও চলছে মাদক ব্যবসা। মাদক নির্মূল অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এ যাবৎ নিহত হয়েছেন ৩০০ মাদক ব্যবসায়ী। গ্রেফতারের সংখ্যা ৬০ হাজার। তবু কেন জানি বন্ধ হয়নি মাদক ব্যবসা। কিন্তু কেন?

এ প্রশ্নের জবাব পাওয়া গেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিসংখ্যানে। পরিসংখ্যান বলছে, স্থল ও নৌ-সীমান্ত দিয়ে মাদকের প্রবেশ ঠেকানো যায়নি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর বলেছে, সফলতা নেই, এ কথা বলা যাবে না। মাদক ব্যবসায়ীদের মাঝে যারা গডফাদার হিসেবে পরিচিত তাদের সমূলে উৎপাটন করা সম্ভব হয়নি। তবে এই অভিযানের সফলতাও কম নয়। গডফাদারদের কেউই আজ আর স্বস্তিতে নেই। প্রায় সবাই এলাকা ছাড়া। অথবা বলা যায় গাঢাকা দিয়ে রয়েছেন।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের অভিমত, কোনো বিশেষ অভিযান বিরতিহীনভাবে চলতে পারে না। একটি সীমাবদ্ধ সময় পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয় বা হতে পারে। গডফাদারদের ক্ষেত্রে তাদের বক্তব্য, এদের জিম্মায় ইয়াবা পাওয়া যায় না। এ ছাড়া গডফাদাররা যে ইয়াবা ব্যবস্যা করছেন, এমনটাও প্রমাণ করা সম্ভব নয় বা সম্ভব হয়নি। এদিকে বিজিবির হিসাবমতে, গত বছরের মে থেকে সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি সালের মে-আগস্টে ইয়াবা প্রবেশের পরিমাণ বেশ বেড়েছে। উদ্ধারের পরিমাণ সে কথাই প্রমাণ করে। গত বছর উদ্ধারকৃত ইয়াবার পরিমাণ ছিল ৪০ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪৮ পিস। এ বছর সে সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩১ লাখ ১১ হাজারে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মাদকের প্রবেশ ঠেকানো সম্ভব হলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ইয়াবা ধরা পড়ত না। তাদের মতে, ইয়াবা ধরা পড়লেও ধরা পড়ছে না ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ঢাকা মেট্রো অঞ্চলের কর্মকর্তা বলেছেন, ঢাকার সবচেয়ে বড় মাদক বিক্রেতা মো. ইসতিয়াক ওরফে কামরুল হাসান। তিনি কখনোই গ্রেফতার হননি। তবে এ ক্ষেত্রে ভিন্ন মতও রয়েছে। ভিন্ন মতাবলম্বীরা বলছেন অন্যকথা। তাদের মতে, গ্রেফতার না হওয়ার পেছনে অজ্ঞাত কোনো কারণ রয়েছে। যে কারণ প্রকাশ্যে আনা সম্ভব হচ্ছে না। হচ্ছে না এজন্যই যে, ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসতে পারে’। কর্মকর্তা আরো জানিয়েছেন, তালিকাভুক্ত অন্য গডফাদারদের অনেককে গ্রেফতার করা গেলেও তাদের আটকে রাখা সম্ভব হয়নি। জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলবেই শুধু নয়, এটিকে আরো বেগবান করা হবে। পাশাপাশি একটি কথা না বললেই নয় যে, এ ব্যবসার সঙ্গে পুলিশের নি¤œ এবং উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ সত্য হলে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার এ অভিযান অব্যাহত এবং গতিশীল রাখবেন কার ওপর ভরসা করে! এ প্রশ্ন আমাদের সকলের। আমরা বিষয়টি আমলে নেওয়ার সুপারিশ করতে পারি। আশা করি, কর্তৃপক্ষ বিষয়টি যথাযথ বিবেচনায় নিয়ে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করবেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close