প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ২১ নভেম্বর, ২০২২

নেপালে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোটের জয়ের সম্ভাবনা

নেপালে নির্বাচন : * চূড়ান্ত ফল ঘোষণায় লাগতে পারে দুই সপ্তাহ * নির্বাচনে বেশ কয়েকজন তরুণ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী * এফপিটিপিও প্রোপরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন পদ্ধতি

নেপালে রবিবার (২০ নভেম্বর) সাধারণ নির্বাচনে ভোট হয়েছে। জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের এই নির্বাচনে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফল ঘোষণায় দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার নেতৃত্বাধীন দল নেপালি কংগ্রেস পার্টি এবং কয়েকজন সাবেক মাওবাদী বিদ্রোহীকে নিয়ে গড়ে ওঠা ক্ষমতাসীন জোট এবং নেপাল কমিউনিস্ট ইউনিফাইড মার্ক্সিস্ট লেনিনিস্ট (ইউএমএল) দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

নির্বাচনের আগে কোনো জনমত জরিপ চালানো হয়নি, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ক্ষমতাসীন জোটই ক্ষমতায় টিকে থাকবে। এবারের নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নেপালের পার্লামেন্টের ২৭৫ জন সদস্য এবং ৭টি প্রাদেশিক পরিষদের ৫৫০ জন সদস্যকে বেছে নেবেন ভোটাররা। ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট (এফপিটিপি) এবং প্রোপরশনাল রিপ্রেজেন্টেশনে দুই পদ্ধতির মিশ্রণে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হবে।

এফপিটিপি হলো সরাসরি কোনো নির্বাচনী আসনের ভোটাররা সরাসরি তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেন। আর প্রোপরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন হলো, ভোটাররা সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলকে ভোট দেন।

এক ভিডিও বার্তায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা বলেন, এ নির্বাচন নেপালের সদ্যোজাত গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে। তিনি আরো বলেন, ‘ভোটে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে চলুন গণতন্ত্র উদযাপন করি।’ ২০০৮ সালে ২৩৯ বছরের পুরোনো রাজতন্ত্র অবসানের পর ১০টি সরকার পেয়েছে নেপাল। দরিদ্র দেশটির জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার বিষয়টি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে গেছে। নির্বাচনের আগে দেশব্যাপী বিভিন্ন সমাবেশে রাজনৈতিক দলগুলো দ্রব্যমূল্য কমানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনীতি দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এবার নির্বাচনে বেশ কয়েকজন তরুণ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

ভোটারদের ভয়ভীতি মুক্ত হয়ে এবং গোপনীয়তা বজায় রেখে ভোট দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন আহ্বান জানায়। নেপালের প্রধান নির্বাচন কমিশনার দিনেশ থাপালিয়া ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ভোটদান শুধু তাদের অধিকার নয় বরং গোপন ব্যালটের মাধ্যমে প্রতিনিধি বাছাই করাটাও তাদের দায়িত্ব। বিশ্লেষকরা বলছেন, নেপালের নতুন সরকারকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণের মতো চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে।

করোনা মহামারির কারণে অর্থনৈতিক গোলযোগের মধ্যে পড়ে নেপাল। এরপর থেকেই দেশটিতে জিনিসপত্রের দাম বাড়া শুরু হয়। দুই বছর পর আবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে অন্যান্য দেশের মতো নেপালেও বেড়েছে সব পণ্যের দাম। নেপালে ৬ বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চে ৮ শতাংশের বেশি। এছাড়া গত কয়েক বছরে পর্যটকদের আনাগোনা কমেছে দেশটিতে। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে দেশটি ভ্রমণ করেছেন সাড়ে চার লাখ পর্যটক। এই সংখ্যা ২০১৯ সালে করোনা মহামারি শুরুর আগে পর্যটকদের প্রায় অর্ধেক। দেশটির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ মানুষ ২ ডলারের চেয়ে কম আয়ের মধ্যে জীবনযাপন করছে। এমন পরিস্থিতিতে জিনিসপত্রের দাম কমানোর প্রতিশ্রুতিই ভোটারদের কাছে মুখ্য হয়ে উঠেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close