নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩১ অক্টোবর, ২০২৩

বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধভাবে লিবিয়া যাওয়ার দ্বার খুলছে

বাংলাদেশি কর্মীরা এখন থেকে বৈধ পথে লিবিয়া যেতে পারবেন। বৈধ পথে বাংলাদেশি কর্মী লিবিয়ায় পাঠানোর ব্যাপারে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সম্প্রতি স্বাক্ষর করেছে। ফলে বাংলাদেশের মানুষের জন্য দেশটিতে নতুন কর্মসংস্থান খোঁজার সুযোগ তৈরি হবে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, লিবিয়ায় নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশি নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষা করবে এই সমঝোতা স্মারক। সেই সঙ্গে প্রবাসীদের আবাসিক নিরাপত্তা ও আয়লব্ধ অর্থ সহজে দেশে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করবে। এ ছাড়া লিবিয়ায় অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এটি বাংলাদেশ ও লিবিয়ার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করবে এবং দুই দেশের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ বন্ধনকে আরো শক্তিশালী করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

কর্মকর্তারা জানান, এ সমঝোতার আওতায় লিবিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা, বিশেষ করে বেতন-ভাতা, কর্মকাল, আবাসন, খাদ্য, ছুটি ও সার্ভিস বেনিফিট উল্লেখ করে নিয়োগ কর্তার সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তি বাংলাদেশে স্বাক্ষরিত হবে। ফলে লিবিয়ায় আসার ক্ষেত্রে কর্মীরা দেশে থাকতেই তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এ ছাড়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সর্বোত্তম তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করা হবে এবং নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীদের লিবিয়ায় আসা ও মেয়াদ শেষে দেশে ফেরার খরচ নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি বহন করবে।

বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি লিবিয়া সফর করে। এই সফরে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলিতে সেদেশের শ্রম ও পুনর্বাসনমন্ত্রী আলী আবেদ রেজার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বৈঠকের পর এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

বৈঠকে লিবিয়ার শ্রমমন্ত্রী বলেন, এত দিন বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় কর্মী নিয়োগের ব্যাপারে কোনো সমঝোতা স্মারক কার্যকর না থাকায় বিভিন্ন মহল সুযোগ গ্রহণ করে আসছিল। ফলে বাংলাদেশি কর্মীরা বিভিন্ন প্রতারণার শিকার এবং জটিলতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে একটি আইনি কাঠামো তৈরি হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে লিবিয়ায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মীরা সামাজিক নিরাপত্তা ও চিকিৎসা বিমার আওতায় আসবেন। লিবিয়ায় অবৈধভাবে বসবাসরত বিদেশি কর্মীদের নিয়মিত করতে একটি উচ্চপর্যায়ের জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ লিবিয়ার শ্রমমন্ত্রীর তুলে ধরা প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। তিনি লিবিয়ায় আসা কর্মীদের ভিসা সংগ্রহ থেকে শুরু করে যাবতীয় ব্যয় নিয়োগ কর্তা বা কোম্পানির মাধ্যমে বহন করার ব্যবস্থা করে অভিবাসন খরচ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার জন্য লিবিয়ার শ্রমমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে তিনি কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা এবং চিকিৎসা বিমার ব্যয় নিয়োগকর্তার মাধ্যমে পরিশোধের অনুরোধ করেন। মন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত পূর্ব অভিজ্ঞতার সনদ লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি দিতে অনুরোধ জানান। এ ছাড়া প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী লিবিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের বৈধতা অর্জনের প্রক্রিয়া সহজ করা এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর জটিলতা কমানোর ব্যাপারে শ্রমমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

সফরকালে প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ ত্রিপলিতে বিভিন্ন পেশায় কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় তিনি লিবিয়ায় কর্মরত প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close