নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ মে, ২০২৪

বিদেশে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সম্পদের অনুসন্ধানে রিট

সম্প্রতি ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে’ শিরোনামে দুটি জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে বিপুল সম্পদের যে তথ্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে তা অনুসন্ধান চেয়ে রিট আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।

অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন রিগ্যান জনস্বার্থে গতকাল বৃহস্পতিবার এ রিট আবেদন করেন।

রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, কমিশনার (অনুসন্ধান), কমিশনার (তদন্ত) ও কমিশনের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।

রিগ্যান বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সমকাল পত্রিকায় ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। মানবজমিনেও একই বিষয়ে ওইদিন সংবাদ প্রকাশিত হয়। ‘এই সংবাদ প্রকাশের পরও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান না করায় এ রিট দায়ের করেছি।’ তিনি বলেন, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরও এ বিষয়ে বিবাদীরা কেন অনুসন্ধান করেনি তা জানতে চাওয়া হয়েছে। অনুসন্ধান না করা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহিভূত বলে ঘোষণা করা হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। ‘সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর সাম্রাজ্য যুক্তরাজ্যে’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি রিট আবেদনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ গত জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর ভূমিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সাল থেকে তার মালিকানাধীন কোম্পানি প্রায় ২০ কোটি ব্রিটিশ পাউন্ড (২৭৭০ কোটি টাকা) মূল্যের ৩৫০টিরও বেশি সম্পত্তি কিনে যুক্তরাজ্যে রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে। যুক্তরাজ্যের কোম্পানি হাউস করপোরেট অ্যাকাউন্ট, বন্ধকী চার্জ এবং এইচএম ল্যান্ড রেজিস্ট্রি লেনদেনের ওপর ভিত্তি করে এ পরিসংখ্যান পেয়েছে বার্তা সংস্থা ব্লুমবার্গ।’

ব্লুমবার্গের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের বরাতে এও বলা হয়, ‘মধ্য লন্ডনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের বৃহত্তম আবাস টাওয়ার হ্যামলেটস এবং লিভারপুলে ছাত্রদের আবাসন পর্যন্ত বিস্তৃত তার সাম্রাজ্য। জাভেদের প্রায় ২৫০টি সম্পত্তি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রায় ৯০ শতাংশ নতুন অবস্থায় কেনা হয়।’

গত সংসদ নির্বাচনের আগে ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রিসভার অন্তত একজন সদস্যের নিজ নামে বিদেশে একাধিক কোম্পানি থাকার প্রমাণ রয়েছে, যার প্রতিফলন হলফনামায় নেই। মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর মালিকানাধীন ছয়টি কোম্পানি এখনো বিদেশে সক্রিয়ভাবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করছেন। যেসব কোম্পানির মোট সম্পদ মূল্য প্রায় ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।’

বিদেশে সম্পদ ও ব্যবসা থাকার কথা স্বীকার করে নিলেও লগ্নির টাকা বাংলাদেশ থেকে পাঠানো হয়নি দাবি করেছেন সংসদ সাইফুজ্জামান চৌধুরী। গত ২ মার্চ সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেছেন, তার বাবা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে বিদেশে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি সেই ব্যবসার উত্তরাধিকারী। আর যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সময়ও তিনি ব্যবসা করেছেন। যুক্তরাজ্যে তার আয়কর নথিও আছে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের শেষের নির্বাচনে সাইফুজ্জামানের আসনটি ছিল চট্টগ্রাম-১২। ওই বছর সেখানে জেতেন সাইফুজ্জামানের বাবা। ২০১২ সালের নভেম্বরের শুরুতে তিনি মারা গেলে উপনির্বাচনে নৌকা নিয়ে জয় পান সাইফুজ্জামান। পরের নির্বাচনে আসন পুনর্বিন্যাসে সেটি হয় চট্টগ্রাম-১৩।

২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভায় ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর ২০১৯ সালের শুরুতে নতুন সরকারে ভূমিমন্ত্রী হন তিনি। সবশেষ ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে সাইফুজ্জামান জয়ের মুখ দেখলেও মন্ত্রিসভায় আর তার ঠাঁই হয়নি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close