প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১০ মে, ২০২৪

গরমে চাহিদা বেড়েছে আখের রসের

চলতি মে মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও তাপপ্রবাহ চলছে। প্রখর রোদ আর তীব্র গরমে অতিষ্ঠ মানুষ স্বস্তি খোঁজার চেষ্টা করছেন ফুটপাতের শরবতে। আখের রসসহ বিভিন্ন রকমের শরবতের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় সড়কের ভ্রাম্যমাণ শরবতের দোকানের সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়েছে। মূলত রিকশাচালক, দিনমজুর ও পথচারী ভিড় করছেন এসব দোকানে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

সৈয়দপুর (নীলফামারী) : শহরের বিভিন্ন জায়গায় বসেছে শরবতের দোকান। শহরের প্রায় ১০টি স্থানে শরবত বিক্রি হচ্ছে। অনেক ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা ভ্যানে করে স্কুল-কলেজ ও মহল্লায় গিয়ে বিক্রি করছেন দই, বেল ও আখের রসের শরবত। বেলা ১১টার পর থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত শরবতের দোকানে থাকছে ভিড়। শহরের পোস্ট অফিসের সামনের শরবত বিক্রেতা নাসিম বলেন, প্রায় ১০-১২ দিন থেকে লাগাতার গরম পড়ছে। মানুষ গরম থেকে স্বস্তি পেতে শরবত পান করছে। বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর। দিনে প্রায় ৫০০ গ্লাসেরও বেশি শরবত বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, এক গ্লাস দইয়ের শরবত ১০ টাকা, আখের রসের শরবত ১০ ও বেলের শরবত ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

শহরের ১ নম্বর রেলঘুমটি-সংলগ্ন আজমলের দোকানে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন ফলের শরবত। ইসবগুলের ভুষি ও তোকমার সঙ্গে আপেলসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের জুস মিশিয়ে বিক্রি হচ্ছে শরবত। এই শরবত এক গ্লাস ৩০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে শরবতের মান নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এ বিষয়ে দোকানি আজমল বলেন, ‘আমি শরবতে ফুটানো পানি ব্যবহার করি। এর সঙ্গে বাড়ির ফ্রিজের বরফ মিশ্রণ করা হচ্ছে।’

সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন বলেন, আমরা মাঝে-মধ্যে গরমে নেতাকর্মী ও সাংবাদিকদের নিয়ে ফুটপাতের দোকানে শরবত পান করি। এখন পর্যন্ত নোংরা কিছু চোখে পড়েনি। ডা. ওয়াসিম বারি জয় বলেন, খোলা থাকা পানিতে অল্পতেই জীবাণু সংক্রমিত হয়। ফুটপাতের শরবত পানের ব্যাপারে সবাইকে সাবধানতার থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে প্রচণ্ড গরমে আখের রসের চাহিদা বেড়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকেই সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে এই আখের রসের কেনাবেচা। শহরের এস এস রোডের রস বিক্রেতা হেকমত আলী বলেন, ২৭ বছর ধরে তিনি আখের রস বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, সকাল থেকেই ক্রেতা ভিড় জমালেও দুপুরে রস বিক্রি ব্যাপক বেড়ে যায়। ফেরি করে রস বিক্রেতা আলামিন জানান, প্রচণ্ড গরমে চাহিদা বাড়ায় আমরা ফেরি করে রস বিক্রি করছি এবং লাভবানও হচ্ছি। শিশু ও নারী ক্রেতার সংখ্যা বেশি।

শহরের এস এস রোডে বুলবুল তেলের মিলের গলির মাথায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যান্ত আখ মাড়াই করে রস বিক্রি করেন মজনু । তিনি জানান, প্রতি গ্লাস ১০ টাকা করে বিক্রি করি। এতে প্রতিদিন ৯০০-১২০০ টাকা লাভ হয়। গ্রীষ্মকালীন সময়ে এই রস ব্যাপকভাবে বিক্রি হলেও এবার প্রচণ্ড গরমে বিক্রি আরো বেড়ে গেছে। ঝড়বৃষ্টির দিনে আর শীত মৌসুমে বিক্রি বন্ধ রাখা হয়।

রস বিক্রেতা সঞ্জয় সাহা বলেন, সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা ও গাইবান্ধা থেকে ঢাকাগামী দূরপাল্লার আখ বহনকারী ট্র্যাক থেকে কড্ডার মোড়ে আখ নামানো হয়। যার ফলে দাম অনেকটাই বেশি পড়ে। প্রতি গ্লাস রস বিক্রি করে ৩ থেকে ৮ টাকার মতো লাভ হয়।

রস পানকারী কলেজছাত্র বকুল জানান, গ্রীষ্মের দিনে এক গ্লাস আখের রস শরীরটাকে শীতল রাখে।

গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা) : প্রচণ্ড গরমে লেবুর রস মেশানো ঠান্ডা এক গ্লাস আখের রসের শরবত প্রাণ জুড়িয়ে দেয়। তাইতো পথের ধারে অথবা বিভিন্ন মোড়ে হ্যান্ড ক্রাসার দিয়ে তৈরি আখের রসের শরবত অনেকেই পান করছেন। শরবত বিক্রেতা গোলাম মোস্তফা জানান, এ বছর গরম বেশি পড়ায় বাজারে আখের রস বিক্রি বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পথচারীদের কাছে ফুটপাথের এ শরবতের চাহিদা ব্যাপকহারে বেড়েছে। গরমে অতিষ্ঠ পথচারীদের তৃষ্ণা মেটাতে এক গ্লাস আখের রসের শরবত প্রাণ জুড়িয়ে দিচ্ছে। সঙ্গে যদি থাকে এক টুকরা বরফ আর লেবুর রস। প্রত্যেক দোকানেই সব বয়সের মানুষ ভিড় দেখা গেছে।

স্কুলছাত্র তানভীর জানায়, প্রচণ্ড গরমে প্রতিদিন দুপুরে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার আগে লেবুর রস মেশানো ঠান্ডা এক গ্লাস আখের রসের শরবত খাই। এতে শরীর ঠান্ডা থাকে। ব্যাংক কর্মকর্তা শামছুল আলম বলেন, প্রচণ্ড গরমে হাঁপিয়ে উঠি। তাই লেবুর রস মেশানো এক গ্লাস আখের রস খেয়ে অনেকটাই স্বস্তিবোধ করছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close