প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক

  ১৯ আগস্ট, ২০১৯

পরিবেশবান্ধব মুদ্রা

বাঙ্কসির মতো আঁকিয়ে, হিপ্পি ভাইব বা নাগরিক খামারের মতো নানা কিছু নিয়ে খ্যাতি জুটিয়েছে যুক্তরাজ্যের শহর ব্রিস্টল। তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে, শহরটির নিজস্ব মুদ্রা। ব্রিটিশ পাউন্ডের বদলে তারা ব্যবহার করছে ‘ব্রিস্টল পাউন্ড।’

পুরো বিশ্বের বেশির ভাগ জনপদই এখন পরিবেশসচেতন। সেই ধারাবাহিকতায় ব্রিস্টল শহরে স্থানীয় মুদ্রা চালু করেছে গ্রিন পার্টি। অর্গানিক শাকসবজিনির্ভর শহরটিতে মুদ্রাটির ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। এক কফি বিক্রেতা বললেন, ‘আপনি যদি অর্থনীতির কথা বলেন, তবে কোথাও যদি অর্থ রাখেন, সেই অর্থ চারপাশ ঘুরে আসে।’

শহরটির একটি খামারের প্রশিক্ষক সারাহ ফ্লিন্ট বলেন, ‘দিনে দিনে এর পরিসর বাড়ছে। মানুষও ভাবছে তারা একটি মুদ্রা পেয়েছে, যা স্থানীয় পরিসরে ব্যবহার করতে পারে।’

পরিসর এখনো অনেক ছোট। হাজার দুয়েক মানুষ মিলে ব্যবহার করছে এই মুদ্রা। ব্রিস্টল পাউন্ড তৈরির একজন কারিগর হলেন সিরিয়ান মান্ডি। তিনি বলেন, একটি সবুজ আচ্ছাদিত সমাজের স্বপ্নপূরণে অবকাঠামোতে পরিবর্তন আনতে হয়, কিছু বদল দরকার মানুষের আচরণেও।

খাদ্য ও অন্য পণ্যের স্থানীয়করণ এবং বিশ্বজুড়ে পণ্য পরিবহনের বদলে এনার্জি সাশ্রয় এবং অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এসব চিন্তা থেকেই ব্রিস্টল পাউন্ডের জন্ম, বললেন মান্ডি। ২০১১ সালে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বড় সুপার মার্কেট চেইন ‘টেসকো’-এর একটি শাখা খোলাকে কেন্দ্র করে স্টোকস ক্রফটের বাসিন্দাদের সঙ্গে বিত-া শুরু হয়। সেই বিত-ার মধ্যেই এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে মুদ্রাটি চালু করা হয়।

দোকানের সংখ্যার হিসেবে গ্লুচেস্টারকে যুক্তরাজ্যের দীর্ঘ সড়ক বলা হয়। বেশির ভাগ দোকানি স্থানীয় মুদ্রা ‘ব্রিস্টল পাউন্ড’ দিয়ে বিকিকিনির কাজটি সারেন। তবে সব বাসিন্দা এই মুদ্রা ব্যবহারে এখনো অভ্যস্ত নন। শহরটিতে সদ্য আসা ক্যারলোটা জানালেন, ‘ভেবেছি বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু নিত্যদিনের নানা ঝুট ঝামেলায় এখনো স্থানীয় মুদ্রার ব্যবহারটা হয়ে ওঠেনি।’

তার বন্ধু ফাতিমা জানালেন, মুদ্রাটি নিতে হলে আগে জানতে হবে কোথায় পাওয়া যায়? আবার অনেকে এই মুদ্রা সম্পর্কে বেশ সচেতন। লরা জানালেন, ‘যেভাবেই হোক আমি আমাদের নিজস্ব মুদ্রায় পণ্য কিনি।’

শহরের অনেক দোকানি আর ব্যবসায়ীরা মুদ্রাটি ব্যবহার শুরু করেছেন। পাশাপাশি ব্রিটিশ সিটি কাউন্সিলের কর্মীরাও যাতে এই মুদ্রা ব্যবহার শুরু করেন, তার পক্ষে জনমত বাড়ছে। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল মেয়াদে তৎকালীন মেয়র জর্জ ফার্গুসন নিজের পারিশ্রমিকটা ব্রিটিশ পাউন্ডের পরিবর্তে ব্রিস্টল পাউন্ডে নিতেন।

প্রতিষ্ঠাতারা বলছেন, ২০১৫ সালে মুদ্রাটির কারণে ‘ইউরোপীয় গ্রিন ক্যাপিটাল’ খেতাব জিতেছে ব্রিস্টল। স্থানীয় মুদ্রা গবেষক কোকো কান্টার্স বলেন, ব্রিস্টল পাউন্ড ইউরোপের সবচেয়ে বড় এবং প্রাতিষ্ঠানিক স্থানীয় মুদ্রা। যুক্তরাজ্যের লুইস ও টটনেস, যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেটার ও বাল্টিমোর এবং গ্রিসের কয়েকটি স্থানে স্থানীয় মুদ্রার প্রচলন রয়েছে। সূত্র : ডয়েসে ভেলে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close