নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯

সীমান্তের নিরাপত্তায় ডিজিটাল নজরদারি

সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকায় নিরাপত্তা বাড়াতে স্মার্ট ডিজিটাল বর্ডার সার্ভিল্যান্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্যাল রেসপন্স সিস্টেম স্থাপিত হচ্ছে। এরই মধ্যে ১১৩ কিলোমিটার এলাকায় সার্ভিল্যান্স সিস্টেম স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আরো ৯৬ কিলোমিটারে স্থাপনের জন্য ৩৬০ কোটি টাকা চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদারের কাছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব আবু নাছের ভূঁঞা স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ অনুরোধ জানানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে ২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) কর্তৃক স্পর্শকাতর সীমান্ত এলাকায় স্মার্ট ডিজিটাল বর্ডার সার্ভিল্যান্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্যাল রেসপন্স সিস্টেম স্থাপন শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে যশোরের পুটখালী এবং কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ২৩ কিলোমিটার এলাকায় সার্ভিল্যান্স সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া টেকনাফের দমদমিয়া থেকে উনচিলং, উনচিলং থেকে পালংখালী, পালংখালী থেকে ব্যাইশফাঁড়ি পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার, নওগাঁর হাপানিয়া সীমান্তে ১৫ কিলোমিটার, দিনাজপুরের হিলি-কয়া ১৫ কিালোমিটার, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাসুদপুর-কয়া সীমান্তে ১৫ কিলোমিটারসহ সর্বমোট ৯০ কিলোমিটার এলাকায় সার্ভিল্যান্স সিস্টেম স্থাপনের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে।

এ সিস্টেম স্থাপনের ফলে সীমান্তে নজরদারির মাধ্যম নারী ও শিশু পাচার রোধ; মাদক, অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক দ্রব্য ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জামের চোরাচালান রোধ এবং আন্তঃরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দমন ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে বলে জানায় বিজিবি।

তারা বলছে, উল্লিখিত সার্ভিল্যান্স সিস্টেম স্থাপনের ফলে সীমান্তে যে কোনো ধরনের মুভমেন্ট সম্পর্কিত ছবি ও ভিডিও সার্ভিল্যান্স সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মনিটরে দেখা যাচ্ছে। চোরাচালান ও সন্দেহজনক মুভমেন্ট নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিজিবি অভিযান পরিচালনা করছে। তবে সীমান্ত এলাকায় রাস্তা বা পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় অভিযান পরিচালনায় সময়ের প্রয়োজন হয়। ফলে অপরাধীরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযান সফলতার সঙ্গে পরিচালনার জন্য ট্যাকটিক্যাল রেসপন্স সিস্টেম তথা পার্বত্য এলাকার জন্য বিশেষ যানবাহন, চরাঞ্চলের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ট্রাক্টর এবং হাওর, খাল-বিল ও জলাশয়ের জন্য এয়ারবোট প্রয়োজন মর্মে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বিজিবি বলছে, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গতিবিধি পর্যালোচনা এবং সাম্প্র্রতিক সময়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ এবং রেকর্ডভুক্তি নিশ্চিতের জন্য মিয়ানমার সীমান্ত বরাবর উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ডিজিটাল বর্ডার সার্ভিল্যান্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্যাল রেসপন্স সিস্টেমের প্রয়োজনীয়তা জরুরি। এছাড়া খাগড়াছড়, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানের গহীন দুর্গম পার্বত্য সীমান্ত এলাকার আন্তঃরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দমন, গোষ্ঠীগত সন্ত্রাস মোকাবিলা, একই সঙ্গে সাতক্ষীরার তলুইগাছা থেকে চান্দুরিয়া পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার, যশোরের রঘুনাথপুর থেকেব পুটখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার, রাজশাহীর বকচর থেকে শ্যামনগর পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার এবং কুমিল্লার আমানগন্ডা থেকে জোয়ারকাচার পর্যন্ত ৩৭ কিলোমিটারসহ সর্বমোট ৯৬ কিলোমিটার এলাকায় এ সিস্টেম স্থাপন করা প্রয়োজন।

জানা গেছে, আগে স্থাপিত ১১৩ কিলোমিটার এবং প্রস্তাবিত ৯৬ কিলোমিটার সার্ভিল্যান্স সিস্টেম হতে প্রাপ্ত তথ্যাদির আলোকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ১০০টি বিশেষ যান, দুটি এয়ারবোট, দুটি র‌্যাাপিড রেসপন্স অ্যান্ড পোর্টেবল বর্ডার সার্ভিলেন্স সিস্টেম ক্যারিং যানবাহন, একটি মেনটেইন্যান্স অ্যান্ড ফার্স্টলাইন স্পেয়ার্স ক্রয় করা হলে তা ফোর্স মাল্টিপ্লেয়ার হিসেবে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমকে অনেক গতিশীল করবে।

জননিরাপত্তা বিভাগের সীমান্ত-১ অধিশাখা থেকে বিজিবির আনুমানিক ৯৬ কিলোমিটার এলাকায় বর্ডার সার্ভিল্যান্স অ্যান্ড রেসপন্স সিস্টেম স্থাপন ও সম্প্র্রসারণের বিষয়ে (অর্থ বিভাগ থেকে বাজেট প্রাপ্তির শর্তে) প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এটি অনুমোদন করে নেওয়ার জন্য সীমান্ত-১ অধিশাখা বিজিবি কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close