নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ নভেম্বর, ২০১৭

এসডিজি অর্জনে বাড়াতে হবে জ্বালানি সক্ষমতা

বাংলাদেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে আঙ্কটাডের এক প্রতিবেদনে। বিশ্বের ৪৭টি স্বল্পোন্নত দেশের মধ্যে তুলনা করে বাংলাদেশের অবস্থান প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি বাস্তবায়নে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের বিকল্প নেই বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।

গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিদ্যুৎ বিতরণ পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এমন কথা বলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ বা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। সিপিডি আঙ্কটাডের পক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।

প্রতিবেদন প্রকাশকালে ফাহমিদা বলেন, বাংলাদেশে এখনো যারা বিদ্যুতের আওতায় আসেনি তাদের ৮০ শতাংশই গ্রামে বসবাস করেন। তাদের বাদ দিয়ে উন্নয়ন সম্ভব না।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, গ্রামের মানুষের উন্নয়ন হলেই তা টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। তাদের পেছেন রেখে যথার্থ উন্নয়ন সম্ভব না। তিনি আরো বলেন, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য শিগগিরই জ্বালানি সক্ষমতা অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এসডিজি অর্জনে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হারে জ্বালানি সক্ষমতা বাড়াতে হবে বলেও মনে করেন ফাহমিদা।

আঙ্কটাডের ‘এলডিসি ২০১৭’-তে এসব তথ্য দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার একযোগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। আঙ্কটাডের এবারের প্রতিবেদনের বিষয় হলো রূপান্তরমুখী জ্বালানি প্রাপ্যতা। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ২০১৪ সালের বিদ্যুৎ-সুবিধার তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। তবে সিপিডি বলছে, গত তিন বছরে দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির অগ্রগতি হয়েছে। এ সময় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, এ দেশের জ্বালানি খাতের উন্নয়ন সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্য ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ যেমন লাগবে, তেমনি বিদেশি বিনিয়োগও চাই। এ ছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তাও দরকার।

আঙ্কটাডের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সিপিডি জানায়, এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে বিশ্বব্যাংক এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল, সেই লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বিদ্যুৎ খাতে নেপাল ও ভুটানের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা প্রায় লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছেছে।

বিদ্যুৎ প্রাপ্যতার এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে এলডিসিগুলোর জন্য চারটি সুপারিশ করেছে আঙ্কটাড। এগুলো হলো শক্তিশালী বিদ্যুৎ-কাঠামো ব্যবস্থা গড়ে তোলা, সুশাসন ও অর্থায়ন নিশ্চিত করা, উন্নয়নের কৌশল হিসেবে জ্বালানি খাতকে প্রাধান্য দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা নেওয়া। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এসেছে। কিন্তু ২০৩০ সালের মধ্যে এলডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে বাংলাদেশকে প্রতিবছর কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হারে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ প্রাপ্যতার সুবিধা নিশ্চিত করতে এশিয়ার নেপাল ও ভুটান বেশ এগিয়ে আছে। তবে এলডিসিগুলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিবছর সাড়ে তিনগুণ হারে বেশি মানুষকে বিদ্যুৎ-সুবিধা দিতে হবে। তবে বাংলাদেশকে প্রতিবছর ২০ থেকে ৩০ শতাংশ হারে বিদ্যুৎ-সংযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০৩০ সালে এসডিজি লক্ষ্য অর্জন এবং ২০৪১ সালে যে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার আকাক্সক্ষা রয়েছে, সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতকে বিবেচনা করতে হবে।

কেননা, জ্বালানি খাতের সঙ্গে তিনটি বিষয় সম্পৃক্ত। এগুলো হলো- অর্থনৈতিক রূপান্তর, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজব্যবস্থা এবং পরিবেশগত ভারসাম্য। জ্বালানি উৎপাদন হতে হবে সুলভ মূল্যে, সুশাসনের সঙ্গে এবং পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist