রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

  ১৬ আগস্ট, ২০১৮

সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদ

পাল্টে গেছে রানীশংকৈল গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা

ঠাকুরগাঁয়ের রানীশংকৈল উপজেলার সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদে গ্রামগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। উপজেলার মহারাজা চৌরাস্তা থেকে ভরনিয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলো, নেকমরদ কলেজ থেকে মহারাজা হাট পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার বলিদ্বারা থেকে রাউতনগর বাজার পর্যন্ত প্রায় নয় কিলোমিটার মিরডাঙ্গী বাজার থেকে কাতিহার হাট প্রায় নয় কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল বহ্মপুর, রাতোর শিবদিঘী, জেলখানাপাড়া থেকে বাঁশবাড়ী নয়ানপুরসহ গ্রাম অঞ্চলের সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা পাল্টে দিয়েছে বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের সাড়ে চার বছরে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থায় পাল্টে গেছে। এ উন্নয়ন সার্বিকভাবে বাস্তবায়ন করেছেন স্থানীয় সরকার অধিদফতর (এলজিইডি) রানীশংকৈল উপজেলা কার্যালয়।

উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের দূর্লভপুর গ্রামের আকবর আলী বলেন, একসময় আমাদের গ্রামে আত্মীয়স্বজনরা আসতে চাইত না। ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেওয়া বিশেষ করে মেয়েদের বিয়ের আত্মীয়করণে অনেক সমস্যা হতো শুধু যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে। সামান্য বৃষ্টিতে কাদাপানির সড়কে চলাচল করা যেত না সাইকেল নিয়ে। এখন আমাদের সড়ক পাকা হওয়ায় অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। একইভাবে পারকু-া গ্রামের আতাউর বলেন, সামান্য বৃষ্টিতে কাদা মাড়িয়ে সড়কে চলাচল করতে হতো, বৃষ্টির পানিতে সড়ক এমন পিচ্ছিল হতো যে, কোনো যানবাহন নিয়ে যাওয়া যেত না। বিশেষ করে জরুরি অসুস্থ রোগীদের গ্রাম থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া যেত না। কোনো যানবাহন এ গ্রামে আসত চাইত না। এলেও দিগুণ ভাড়া গুনতে হতো। এখন আর কোনো সমস্যা নেই। গ্রামে বাড়ি থেকে বের হয়ে উপজেলা সদর পর্যন্ত যেতে কোনো কাঁচা রাস্তা পার হতে হয় না।

একইভাবে উন্নয়ন হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন। উপজেলার ভরনিয়া জহরপুর বাসনাহার আলুবাড়ী ভাংবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। নতুন চকচকে দোতলা ভবনে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক মনোযোগ সহকারে ক্লাস করছে।

শারমিন রুমা সোহেল কাউসারসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলে, আমরা স্কুলের নতুন ভবন পেয়ে অনেক খুশি। চকচকে বিল্ডিংয়ে নাকি তাদের চেহারারা সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে হেসে হেসে কথা বলে। এ ছাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে প্রাচীর দেওয়া হয়েছে ভবানন্দপুর গোগড় ঝাড়বাড়ীসহ একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

উপজেলা স্থানীয় সরকার অধিদফতরের (এলজিইডি) উপ-সহকারী মাসুদুল আলম জানান, দ্বিতীয় মেয়াদে সরকারের সাড়ে চার বছরে উপজেলার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৩ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রাচীর, ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৪ কিলোমিটারের অধিক নতুন সড়ক নির্মাণ, ২৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রায় ৪০ কিলোমিটারের সড়ক সংস্কার (রক্ষণাবেক্ষণ), ৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১টি ব্রিজ, ২ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিবি) ও ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন করেছেন উপজেলা স্থানীয় সরকার অধিদফতর (এলজিইডি)।

এ ছাড়া এখনো কয়েক কোটি টাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন ও পুরনো সড়ক নির্মাণে সংস্কারের কাজ চলছে।

উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় এলজিইডির মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়নমূলককাজ হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামের সড়কপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা পাল্টে গেছে। আমরা আশা করছি, এ উপজেলায় সামনে এলজিইডির মাধ্যমে আরো উন্নয়ন হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close