খায়রুল আলম রাজু
রবি ও নীল পরী
এখন গভীর রাত! দূর আকাশে মিটিমিটি করে হাসছে রাতের তারা! আর রুপোর থালার মতো আকাশে ঝুলে আছে চাঁদটি। নদীর পানি কলকল শব্দে ঢেউয়ের তালে তালে ছুটছে নিরবধি। গাছের পাতাগুলো তির তির থরথর করে দোলছে। গ্রামের সবাই গভীর ঘুমে বিভোর। চারপাশে নীরবতা। আহ! কী অপরূপ পরিবেশ। হঠাৎ করেই জেগে ওঠে রবি। ডানে তার দাদু ও বামে দিদা ঘুমিয়ে আছেন। রবি উনাদের মধ্যখানে। রবি চুপিচুপি খাট থেকে নেমে আসে। দক্ষিণের জানালা খুলে চাঁদের আলো দেখে রবি মুগ্ধ। সে চুপিচুপি ঘরের দরজা খুলে ঘরের বাইরে আসে। বাড়ির পেছনে মধু নদী। আর সামনে নান্দনিক ফুলের বাগান। আর চাঁদের আলোয় যেন পরিবেশটা দেখতে স্বর্গোদ্যান। রবি মনে মনে বলে, এ তো আমার মধু গ্রাম নয়! এ যেন এক রূপকার দেশ। রবি ফুলের বাগানের দিকে যায়। সেখানে জবা, গন্ধরাজ, গোলাপসহ হরেক রকমের ফুলগাছ বিদ্যমান। রবি শিউলি ফুলগাছটির নিচে বসে। তখন সে মনে মনে ভাবে আমি যদি কবি হতাম তাহলে এখন কবিতা লিখতাম, যদি শিল্পী হতাম তাহলে গান লিখতাম, যদি চিত্রশিল্পী হতাম তাহলে মনের ক্যানভাসে হৃদয়ের রংতুলিতে এই সুন্দর দৃশ্য আঁকতাম। আর যদি রাখাল হতাম তাহলে এখন সুরে সুরে বাঁশি বাজাতাম। এই ভাবতে ভাবতে রবি দেখে, আকাশ থেকে ডানা মেলে একটি নীল পরী এসেছে। আর সে রবিকে একটি সোনার বাঁশি উপহার দেয়, ছবি আঁকতে শেখায়, কবিতা, গল্প এবং ছড়া লিখতে শেখায়। রবি প্রতি রাতে মধ্য প্রহরে এসে শিউলিগাছের নিচে বসে বাঁশি বাঁজায়। আর তার মিষ্টি বাঁশির সুরে আকাশ থেকে নীল পরী নেমে আসে। তারা সারারাত গল্প করে, ছবি আঁকে, ছড়া-কবিতা লেখে। অতঃপর ভোরবেলা রবি দাদুর সাথে পাঠশালাতে যায়। আর এভাবেই নীল পরীর সাথে ছোট্ট রবির বন্ধুত্ব হয়।
"