কক্সবাজার প্রতিনিধি
মহেশখালীর খায়রুল হত্যা : ৩২ বছর পর সাবেক মেয়রসহ ৬ জনের যাবজ্জীবন
কক্সবাজারের মহেশখালীর গোরকঘাটা বাজারে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন তৎকালীন জেলা পরিষদ সদস্য ও তরুণ রাজনীতিক খাইরুল আমিন সিকদার। ৩২ বছর পর এই হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মহেশখালীর সাবেক মেয়র সরওয়ার আজম, তার দুই ভাই মৌলভি জহির উদ্দিন ও নাসির উদ্দিন, ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল আলম ও সাধন নামে এক যুবক। রায় ঘোষণার সময় সাধন ছাড়া বাকি ৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) সুলতানুল আলম জানান, গত ১০ নভেম্বর যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ২৪ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন। তবে সপ্তমবারের মতো রায় ঘোষণার তারিখ পেছনো হয়। পূর্ব নির্ধারিত দিন অনুযায়ী বৃহস্পতিবার আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ২৬ আসামির মধ্যে ৬ জনকে যাবজ্জীবন ও বাকি ২০ জনকে খালাস দেওয়া হয়।
তিনি জানান, এ মামলা চলার সময়ে সাতজন আসামি মারা গেছেন। মারা যাওয়া আসামিদের মধ্যে আছেন মহেশখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুর বক্স, স্থানীয় বাসিন্দা রহিম সিকদার, আমির হোসেন ও আজিজুল হক।
এদিকে মামলার দুই আসামি জহির উদ্দিন ও মো. ইব্রাহিম হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আদালতের পর্যাবেক্ষণের বরাতে এপিপি বলেন, আদালত মনে করছেন এটি একটি রাজনৈতিক বিরোধে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড। যা আদালতে সন্দেহাতিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
১৯৯০ সালের ৯ এপ্রিল বিকেল পাঁচটার দিকে মহেশখালীর গোরকঘাটা বাজারে দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন তৎকালীন জেলা পরিষদ সদস্য ও তরুণ রাজনীতিক খাইরুল আমিন সিকদার (২৮)। তিনি গোরকঘাটার হামজা মিয়া সিকদারের ছেলে। ওই দিন খাইরুল আমিনের বড় ভাই মাহমুদুল করিম বাদী হয়ে মহেশখালী থানায় মহেশখালীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুর বক্স, পুটিবিলার শামশুল আলম, নাসির উদ্দিন, হামিদুল হকসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনার তদন্ত করে এজাহারভুক্ত ২৫ জনসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন ওই বছরের ২২ নভেম্বর।
এরপর ২০০৩ সালের ২৭ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত।