ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি

  ১২ জানুয়ারি, ২০২২

স্ত্রীর গলা কেটে স্বামীর আত্মহত্যা

প্রতীকী ছবি।

পারিবারিক কলহের জের ধরে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা সদর ইউনিয়নের টানমেউহারী গ্রামে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ধর্মপাশা থানা পুলিশ।

বুধবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বেলা সোয়া একটার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

খবর পেয়ে নিজেদের বসতঘরের ভেতর থেকে স্ত্রী শাদিনা বেগমের (৪৯) গলাকাটা ও স্বামী বাচ্ছু মিয়ার (৫৬) ঝুলন্ত মরদেহ বিকেল তিনটার দিকে উদ্ধার করেছে ধর্মপাশা থানা পুলিশ।

ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার টানমেউহারী গ্রামের বাসিন্দা বাচ্ছু মিয়া (৫৬) ও তাঁর স্ত্রীর শাদিনা বেগমের (৪৯) দাম্পত্য জীবনে তাদের পাচ মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। বাচ্ছু মিয়া জলমহালের ইজারাদারদের কাছ থেকে ডোবা ক্রয় করে এর মাছ তিনি আহরণ করে তা অন্যত্র বিক্রি করার ব্যবসা করে আসছিলেন। এই ব্যবসায় তেমন লাভ হচ্ছিল না। এ অবস্থায় তিনি আর্থিকভাবে ঋণগ্রস্ত হয়ে হতাশায় ভোগেন। ঋণগ্রস্ত হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে এ নিয়ে প্রায়ই কলহ চলে আসছিল।

বাবা মায়ের সঙ্গে একই বাড়িতে বেশ কিছুদিন ধরে বড় মেয়ে রিপা আক্তার (৩৩) স্বামী সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছেন। আজ সকালে নয়টার দিকে রিপার বাবা মায়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। সকাল ১০টার দিকে রিপা আক্তার (৩৩) তার ছোট ভাই অনিক মিয়া (১৪)কে নবম শ্রেণিতে ভর্তি করার জন্য উপজেলা সদরের জনতা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে যান। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রিপার ভাগ্নে ১০ বছর বয়সী আবু রায়হান রিপাকে মোবাইল ফোনে জানান যে, তার নানা নানীর মধ্যে দরজা বন্ধ করে ঝগড়া শুরু হয়েছে। তাড়াতাড়ি তিনি যাতে বাড়িতে চলে আসেন। রিপা তাৎক্ষণিকভাবে ৯৯৯ কল করে পুলিশের সহায়তা চান। বেলা একটার দিকে রিপা বাড়িতে গিয়ে তার বাবা মায়ের ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান।

খবর পেয়ে বেলা পৌনে দুইটার দিকে ধর্মপাশা থানার ওসি মো. খালেদ চৌধুরী থানা পুলিশ নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন। এ সময় সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান। পরে এলাকাবাসির সহায়তায় প্রথমে টিনের চালা খুলে ও পরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে থানা পুলিশ ঘরে প্রবেশ করে বেলা তিনটার দিকে তাদের নিজেদের ঘরের ভেতর থেকে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন।

মেয়ে রিপা আক্তার (৩৩) কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার আব্বা বিল বাদারের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায় তেমন লাভ হচ্ছিল না। সব মিলে এই বছর আব্বার ৮৫ হাজার টাকা ঋণ হইছে। এই ঋণের টাকা লইয়া আমার আম্মার সাথে আব্বার প্রায়ই ঝগড়া হতো। আজ সকালেও ঝগড়া হইছে। দরজা লাগাইয়া ঝগড়া শুরু হইছে শুনে আমি সঙ্গে সঙ্গে ৯৯৯কল দিছি। আমার মনে হয়, ঘরে থাকা ধারালো দা দিয়ে আব্বা প্রথমে আম্মার গলা কাটছে। পরে নিজের গলায় রশি দিয়া ফাঁস লইয়া মরছে।

ধর্মপাশা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচেছ।

খবর পেয়ে বেলা পৌনে দুইটার দিকে উপজেলার টানমেউহারী গ্রামের ঘটনাস্থলে যাই। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় ওই বসতঘরের ভেতর থেকে বিকেল তিনটার দিকে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ধর্মপাশা,স্ত্রীর গলা কেটে,স্বামীর আত্মহত্যা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close