এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর 

  ১৮ মার্চ, ২০২৩

সড়কে মাটি ও চৈতালী ফসল বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ইটভাটার মাটিবাহী গাড়ি থেকে সড়কে ছিটকে পড়া মাটির কারণে এলাকার অনেক স্থানের সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আরেক সমস্যা সড়কে গৃহস্থদের চৈতালী ফসল শোকানো। এসব কারণে সড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি। সড়কে হেঁটে চলাচল করাই দুষ্কর। বেড়েই চলছে দুর্ঘটনায় ঝুঁকি।

বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্নস্থানে ১৫টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার জন্য বিভিন্ন ফসলি জমি ও ডোবাসহ বিভিন্নস্থান থেকে অননুমোদিত উপায়ে মাটি কেটে সেগুলো যানবাহনে করে ভাটায় নেওয়া হয়। আর এসব গাড়ি থেকে মাটি পড়ে জমে থাকছে সড়কের ওপরে। বোয়ালমারীর মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কসহ প্রায় সবকটি ইউনিয়নেই চলছে এসব মাটিটানা গাড়ি। এতে সড়কের উপরিভাগে পাকা রাস্তায় মাটির স্তর পড়ে পিচঢালা সড়ক যেন কাঁচামাটির সড়কে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে সৈয়দপুর অংশে আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর পড়ে থাকা মাটি অপসারণ করা হয়েছিল স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে। তবে এখন আবার সেই আগেরই দশা। সেখানে তিনটি ইটভাটার জন্য অবৈধ যানে করে প্রতিদিন টানা হচ্ছে মাটি।

বোয়ালমারীর সাতৈর এলাকার জহিরুল ইসলাম নামে এক যুবক জানান, সকালে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের সৈয়দপুরে তিনি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। বোয়ালমারীর স্থানীয় সাংবাদিক আমির চারু বাবলু বলেন, লাইসেন্সবিহীন ট্রলি, নসিমন, আর খেক্করে (ইঞ্জিনে টানা স্থানীয় এক প্রকার যান) করে এসব মাটি বহন করছে চালকরা। যাদের নিজেদেরও ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এগুলো দেখার জন্য কেউ নেই।

মো. মনোয়ার হোসেন নামে স্থানীয় আরেক যুবক বলেন, খুব ভয়ানক অবস্থা। একটুর জন্য বেঁচে গেছি। তিনবার সিøপ করছে বাশার চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে। খুব বাজে অবস্থা। চাকার প্রতি ঘূর্ণনে মৃত্যুর ঝুঁকি।

ঠাকুরপুর গ্রামের লোকমান বিশ্বাস বলেন, রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এদিকে, এসব সড়কে মাটিবাহী অবৈধ গাড়ি চলাচলের পাশাপাশি সড়কের ওপরে চৈতালি ফসল রেখে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগও করেছেন অনেকে।

হাসিবুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি বলেন, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় মনে হয় যে মানুষের উঠানের ওপর দিয়ে যাচ্ছি। মশুর, ধান, পাট, গম, সরিষাসহ নানা ফসল রাস্তার ওপর ফেলে রাখে। আর মাটিখেকোদের কথা কী বলব। রাস্তাটাই তো ওদের।

বোয়ালমারীর ঠিকাদার শাহিনুজ্জামান খান ডেভিড বলেন, রাস্তা দিয়ে চলার মতো অবস্থা নেই। রাস্তা যেন উঠানে পরিণত হয়েছে। মশুর, ধান, পাট, গম, সরিষাসহ নানা ফসল রাস্তার ওপরে ফেলে রেখেছে গৃহস্থরা। এতে বেড়েছে দুর্ঘটনা। প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন গাড়ির চালকরা।

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারেফ হোসাইন এ বিষয়ে বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই আজ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়েছি। সবাইকে কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close