হাসান জাবেদ, আশুগঞ্জ (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

উদ্বোধনের আগেই মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে ধস

উদ্বোধন হয়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন। এর মধ্যেই দেবে গেছে নতুন ভবনটির পার্কিং বেজমেন্ট। হেলে পড়েছে নিরাপত্তা দেয়ালের একাংশ। প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় চুরি গেছে অন্তত ৪০টি পাখাসহ বৈদ্যুতিক ও স্যানিটারি সরঞ্জাম। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মহলে ক্ষোভ বিরাজ করছে। সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে চারতলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটি নির্মিত হয়। দরপত্রের মাধ্যমে ভবনটি নির্মাণে দায়িত্ব পায় স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্টার লাইট সার্ভিসেস এবং মেসার্স উদয়ন বিল্ডার্স (জেবি)। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে দুই কোটি ৪৫ লাখ ৮১ হাজার ১৭৫ টাকা। ২০২০ সালের জুন মাসের প্রথম দিকে উপজেলা প্রশাসন ও এলজিইডির কাছে ভবনটি হস্তান্তর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সরেজমিন দেখা গেছে, ভবনের সামনে যে পাশে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি স্থাপন করা, সে পাশের প্রায় ২৪ বর্গফুট পার্কিং বেজমেন্ট দেবে গেছে। ফাটল ধরেছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির বিভিন্ন স্থানে। দক্ষিণ পাশের নিরাপত্তা দেয়ালের প্রায় ১০ ফুটের একটি অংশও হেলে পড়েছে। দ্রুত মেরামত না করলে পুরো পার্কিং বেজমেন্ট দেবে যাওয়ার আশঙ্কা সংশ্নিষ্টদের।

ভবনটি পরিদর্শন শেষে উপজেলা প্রকৌশলী পৃথুল ভৌমিক জানান, বেজমেন্টের নিচের বালু সরে যাওয়ায় দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া হেলে পড়া অংশ মূল দেয়াল থেকে আলাদা। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হবে। তার নির্দেশ মতো সংস্কার কাজ শুরু হবে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান, উদ্বোধন না হওয়ায় এটি একেবারেই নিরাপত্তাহীন। উদ্বোধন হলে কমপ্লেক্সের দোকান ও হলরুম ভাড়া দেওয়া সম্ভব হতো। এতে ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি এর আয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ দুস্থ মানুষকে সাহায্য করা সম্ভব হতো। মুক্তিযোদ্ধাদের দাবি, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে একাধিকবার সময় চেয়ে না পাওয়ায় ভবনটি এখনও উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি। যুদ্ধকালীন গ্রুপ কমান্ডার মোজাম্মেল হোসেন গোলাপ, আবুল হাসেম আজাদ ও আব্দুল করিম বলেন, আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ হলেও উদ্বোধন না হওয়ায় কোনো কাজে আসছে না। এটি চালু হলে দোকান ও হলরুম ভাড়া দিয়ে যে আয় হতো, তা দিয়ে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগসহ মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয় করা যেত। বারবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েও পাননি। বিষয়টিকে তাদের প্রতি অবহেলা মনে করছেন।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণ পার্কিং বেজমেন্ট ধসে পড়েছে কিনা জানতে চাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল করিম বলেন, এখানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি কিছুটা হলেও আছে। তিনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভবনটি মেরামত করে দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক তোফায়েল আলী। তিনি জানান, তিন বছর আগে ভবনটি হস্তান্তর করা হয়েছে। এখানে তাদের কোনো গাফিলতি নেই। খালের ওপর মাটি ভরাট করে পার্কিং বেজমেন্ট করায় ধসের ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন চাইলে সংস্কার কাজে যতটুকু সম্ভব সহায়তা করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close