দুর্ঘটনা ও যানবাহনের চাপের কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ স্থলবন্দর সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। কিন্তু সেই দাবি বান্তবায়নে নেই কোনো পদক্ষেপ। নতুন একটি প্রকল্পে সড়কের দুই ধারে মাত্র ১০ মিটার প্রশস্ত করা হবে। এটি প্রশস্ত করলেও তেমন একটা ফল পাওয়া যাবে না বলে দাবি স্থানীয়দের। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগের দাবি সড়ক প্রশস্ত হলে দুর্ঘটনা কমবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘কাশিনাথপুর-দাশুড়িয়া-নাটোর-রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-কানসাট-সোনামসজিদণ্ডবালিয়াদিঘী বর্ডার যথাযথ মান ও প্রশস্ত করতে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদণ্ডএকনেক সভায় পাস হয়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।

প্রকল্প প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়কটি ২৮ বছরেরও বেশি পুরাতন। এর পাশেই আছে ঘনবসতি। সড়কটির শেষ মাথায় সোনামসজিদ স্থলবন্দরের অবস্থান। ভারত থেকে আমদানি করা সব ধরনের পণ্যসামগ্রী এ সড়ক দিয়েই পরিবহণ করা হয় রাজধানীসহ দূরবর্তী জেলায়। এ জেলাটি ভারতের সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় সীমান্ত রক্ষার কাজে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে বর্ডার গার্ড-বিজিবি। ব্যস্ততম সড়কটির গড় প্রস্থ ৬ দশমিক ৫০ মিটারেরও কম। এছাড়া সড়কটির বেশ কিছু জায়গায় রয়েছে ‘বিপজ্জনক’ কয়েকটি বাঁকও। গুরুত্ব বিবেচনায় প্রায় ৩১ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে দুটি বাঁক সরলীকরণ, সড়কের একটি কালভার্ট প্রশস্তকরণ, রিজিড পেভমেন্ট বাস-বে ও ট্রাক লেন নির্মাণ করা হবে।

জানা গেছে, এর আগে ২০২২ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়কে ট্রাকচাপায় মুনিরা খাতুন নামে এক স্কুলছাত্রী নিহত হলে ওই দিন সড়কটি চার লেনে উন্নীতের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয়রা।

এদিকে, সচেতন নাগরিক ও যানবাহন চালকরা জানান, সড়কটি দিয়ে পণ্যবাহী প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের কয়েক হাজার যাত্রীবাহী যান চলাচল করে নিয়মিত। অপ্রশস্ত সড়ক হওয়ায় যখন তখন ঘটে দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় মরছেন মানুষ, পঙ্গু হচ্ছেন অনেকে। এসব ঘটনা থেকে মুক্তি পেতেই তারা চার লেন সড়কের দাবি করছিলেন। সম্প্রতি সড়কটি প্রশস্তকরণের জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়। সড়কটি প্রশস্ত হলে কিছুটা দুর্ঘটনা কমবে। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ না হওয়ার শঙ্কা থেকেই যায়।

ট্রাকচালক হাফিজুল ইসলাম জানায়, সড়কের দুই পাশে আছে বাড়িঘর, হাট-বাজার। প্রায় প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা দাবি করেছিলাম সড়কটি যেন চার লেন হয়। এটি সামান্য প্রশস্ত করে তেমন লাভ হবে না। দিনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষ বাড়ছে। একই সঙ্গে সড়কে যানবাহনও বাড়ছে। সড়কটি চার লেন হলে অনেক উপকার হতো। মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারতেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ‘নাগরিক কমিটি’র সদস্যসচিব মনিরুজ্জামান বলেন, ওই সড়কটি চার লেন হওয়া উচিত। রাস্তাটি প্রশস্ত করে দায় সারলে হবে না। প্রশস্তের নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় না করে পরিকল্পিতভাবে একবারই চার লেনের জন্য টাকা খরচ করলে এখানকার মানুষ অনেক উপকৃত হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সড়ক ও জনপথের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মেহেদী খাঁন জানান, সদর উপজেলার বারঘোরিয়া থেকে সোনমসজিদ স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্ত করা হবে। প্রায় সাড়ে ১০ দশমিক ২৫ মিটার। এছাড়া শিবগঞ্জের বহলাবাড়িসহ বেঁকির মোড়টি সোজা করা হবে। প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ হলে কাজ শুরু হবে। আগামী অর্থবছরেই এ প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান হবে ধারণা তার। সড়কটি দুই লেন হওয়ায় প্রায়শই দুর্ঘটনা ঘটে। এখন যেহেতু অনেকটা প্রশস্ত হবে, তাই অনেক দুর্ঘটনা কমে আসবে।

"