এম এ বাসেত, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়)

  ১৮ জানুয়ারি, ২০২৪

পঞ্চগড় পাউবো

দুই যুগের অকেজো সেচ প্রকল্প চালুর উদ্যোগ

২৫টি প্রকল্প চালু হবে বলে জানান পাউবো * প্রকল্পগুলো পূর্ণরূপে চালু হলে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদের আওতাভুক্ত হবে

পঞ্চগড়ে দুই যুগ ধরে বিকল ‘ব্যারেজ, ইলেকট্রিক ব্লক ও এলএলপি হালকা সেচ’ এর ২৫টি প্রকল্প চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

জানা গেছে, ১৯৬১ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এই সেচ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হয়েছিল। এই প্রকল্পগুলোর অবস্থানভুক্ত নদীগুলো হলো করতোয়া, পেটকী, নাগর, ভেরসা, তিরনই, রনচন্ডি, পাথরাজ, তালমা ও পাম নদী। তবে প্রায় দুই যুগ ধরে বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ প্রকল্প বিকল হয়েছে। নদীগর্ভের এই সেচ প্রকল্পগুলো পুর্ণরুপে চালু হলে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমি ইরি-বোরোসহ অন্য চাষাবাদের আওতাভুক্ত হবে।

সম্প্রতি বন্ধ হওয়া সেচ প্রকল্পগুলো সংস্কার ও চালুর উদ্যোগ নিয়েছে পঞ্চগড় পাউবো। ইতিমধ্যে জেলার বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের পাম নদী সেচ প্রকল্পটি ২৩ বছর বন্ধ থাকার পর পুনরায় চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি রবি মৌসুম থেকেই কৃষকরা এই প্রকল্পের পানি দিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষ করতে পারবে।

ইতিমধ্যে প্রকল্প এলাকাতেই বীজতলা তৈরী করে ধানের চারা করেছে কৃষকরা। আর কয়েকদিনের মধ্যে সেখান থেকে চারা তুলে জমিতে পানি দিয়ে চারা রোপণ করবেন তারা। এই প্রকল্পের আওতায় ৪০০ হেক্টর জমির কৃষক সেচ সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছে পাউবো কর্তৃপক্ষ। একইভাবে তেঁতুলিয়া উপজেলার ভেরসা, তিরনই ও রনচন্ডি নদীর সেচ প্রকল্পগুলো চালু করার জন্য ১২ সদস্য বিশিষ্ট পানি ব্যবস্থাপনা দল নামে একটি কার্যকরী প্রকল্প কমিটি গঠিত হয়েছে।

পঞ্চগড় পাউবো সূত্রে জানা যায়, পাম নদীটি জেলার সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল থেকে উৎপত্তি হয়ে ৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে করতোয়া নদীতে পতিত হয়েছে। যার প্রস্থ প্রায় ২০ মিটার। বোদা উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম ইউনিয়নের গড়ের ডাঙ্গা এলাকায় ১৯৮৪ সালে বাঁধ, রেগুলেটর ও ডাইভারশন চ্যানেলের মাধ্যমে ৪০০ হেক্টর জমিতে সম্পূরক সেচ সুবিধা দেওয়ার জন্য পাম নদী সেচ প্রকল্পের কাজ শুরু করে পাউবো। প্রকল্পের কাজ শেষ হয় ১৯৮৬ সালে। শুরুতে বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে আমন ধানে সম্পূরক সেচ দেওয়ার জন্য প্রকল্পটি চালু করা হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে ২০০০ সালের দিকে প্রকল্পটি কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। চলতি অর্থবছরে বন্ধ হয়ে থাকা পাম নদী সেচ প্রকল্পটি পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেয় পাউবো। প্রকল্পটি সচল করতে প্রয়োজীয় সংস্কার কাজ করার পর কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়। গত আমন মৌসুমে কৃষকরা এই প্রকল্পের পানি ব্যবহার করে সম্পূরক সেচ দিয়ে ধান চাষ করে। চলতি রবি মৌসুম থেকে এই প্রকল্পের পানি দিয়ে ইরি-বোরো ধান চাষের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

পঞ্চগড় পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আশুতোষ বর্মন বলেন, ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার মেনেজম্যান্ট প্রজেক্টের অধীনে বন্ধ হওয়া ব্যারেজ, ইলেকট্রিক ব্লক ও এলএলপি হালকা সেচ প্রকল্পগুলো পুরোদমে চালুর জন্য উদ্যোগে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট এলাকায় জরিপ কার্যক্রম চলছে। চালু হওয়া সেচপ্রকল্পগুলো বাদে অন্যান্য প্রকল্পগুলো সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close