কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ০৮ মে, ২০২৪

কর্তৃপক্ষ ও মেয়রের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

সড়ক সংস্কারে কাটল বিদ্যালয়ের ১৫ গাছ

কুয়াকাটার লতাচাপলী প্রাথমিক বিদ্যালয় : গাছের মালিকানা নিয়েও রয়েছে ধূম্রজাল * তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন ইউএনও

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা ৬০নং লতাচাপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫টি বিশালাকৃতির গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ ওঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এসব গাছ কাটার ক্ষেত্রে সরকারি কোন বিধি বিধান মানা হয়নি বলেও জানা যায়।

কুয়াকাটা পৌরসভার সড়ক সংস্কারের নামে গত শনিবার ও রবিবার এসব গাছ কেটে নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে করাতকলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে গাছ কাটা নিয়ে পৌরসভা এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে এসব গাছ সড়ক সংস্কার কাজের জন্য পৌর মেয়র কেটেছে। অন্যদিকে পৌর মেয়র বলছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেটেছে। গাছের মালিকানা নিয়েও রয়েছে ধূম্রজাল।

জানা যায়, বিদ্যালয়ের গাছ কাটার বিষয়টি কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম জানতে পেরে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামকে তলব করে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, মহিপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার সমন্নয়ে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়।

বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মাহবুব আলম এ বিষয়ে বলেন, তিনি সভাপতি থাকাকালীন ওই গাছ কাটার জন্য বলা হয়েছিল। তখন তিনি গাছ কাটতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘বিদ্যালয়ের গাছ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া কারো কাটার ক্ষমতা নেই। তবে আমি শুনেছি সড়ক সংস্কারের জন্য মেয়র গাছ কেটেছে।’

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কলাপাড়া উপজেলা শাখার সদস্য সচিব সাংবাদিক মেসবাহ্ উদ্দিন মান্নু বলেন, ‘এসব গাছ কাটতে কোনো ধরনের বিধিবিধান মানা হয়নি। উল্টো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দায় এড়াতে এসব গাছ তাদের নয় বলে সাফাই গেয়ে যাচ্ছেন মোটেই কাম্য নয়।’

বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি কাউন্সিলর শহিদ দেওয়ান জানান, গাছ কাটার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। জেনে তারপর সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।

প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘ওই গাছ বিদ্যালয়ের নয়। সড়ক সংস্কারের জন্য পৌর মেয়র এসব গাছ কেটেছে।’ এখানে তাদের কোনো হাত নেই। এসব গাছ প্রায় ২০ বছর আগে তৎকালীন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লাগিয়েছে তাহলে এ গাছ বিদ্যালয়ের নয় কেন? এমন প্রশ্নে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই দেখছি এসব গাছ বাউন্ডারি ওয়ালের বাইরে। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।’

কলাপাড়া উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অচ্যুতা নন্দ দাস বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেছেন ওই গাছ স্কুলের বাউন্ডারির বাহিরে। পৌরসভার গাছ স্কুলের গাছ নয়। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বলেন, গাছগুলো বেশি মোটা হয়ে গেছে। যার জন্য বাউন্ডারি ওয়াল ফেটে ভেঙে গেছে। এজন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেরাই কেটে ফেলেছে। তিনি বা পৌরসভার কেউ ওই গাছ কাটেনি।

কলাপাড়া ইউএনও রবিউল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, এ বিষয়ে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ১ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close