তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোন্তা আলিম মাদরাসা
পরীক্ষা স্থগিতের কথা বলে গোপনে চার পদে নিয়োগ
মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের না জানিয়ে ৪টি পদে চার জনকে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের গোন্তা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল শনিবার গোন্তা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান জানান, নিয়োগ বোর্ডের সভাপতির নির্দেশে উপাধ্যক্ষ পদে মো. আইবুর রহমান, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে সেলিম রেজা, নিরাপত্তা কর্মী পদে সাগর আহমেদ ও আয়া পদে স্বপ্না খাতুনকে নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার তালম ইউনিয়নের গোন্তা আলিম মাদ্রাসায় গত বছরের ২১ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষায় চলাকালীন অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ তুুলে দুই পরীক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় পরীক্ষা কক্ষে চাকরি প্রার্থী ফাঁসিতে ঝোলার চেষ্টা করেন। অন্যজন বিষপান করেন।
ওই ঘটনায় স্থানীয়দের চাপে ডিজির প্রতিনিধি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আবু নাইম ওই দুটি পদে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করে চলে যান। কিন্তু এর তিন দিন পরেই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আতিকুর রহমান নিয়োগ বোর্ডের কতিপয় সদস্যেদের আর্থিক সুবিধা দিয়ে ওই চারটি পদে নিয়োগ সম্পন্ন করেন। পরে ওই চার ব্যক্তির এমপিও করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রেরণ করলে বিষয়টি অন্যান্য চাকরি প্রার্থীদের নজরে আসে।
এ বিষয় সম্পর্কে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে আব্দুল হান্নান, ঠান্ডু রহমান নিরব, হাদিউল ইসলাম, আরমান সরকার, ওমর ফারুক বলেন, পরীক্ষার প্রবেশপত্র কর্তৃপক্ষ সরবরাহ না করেই টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছেন। আমরা এ ধরনের জালিয়াতি নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় নিয়োগ পরীক্ষার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি আমরা কয়েকজন প্রার্থী মামলার করারও প্রস্তুতি নিচ্ছি।
অনুরূপ অন্য তিনটি পদে একই ঘটনা ঘটেছে বলে জানান, নিরাপত্তা কর্মী পদের প্রার্থী জয় ইসলাম ও আয়া পদের প্রার্থী ফাতেমা খাতুন।
আয়া পদের চাকরি প্রার্থী ফাতেমা খাতুন আরো বলেন, নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বেই ২০২০ সালে অধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান আমার কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। আর ওই টাকার জন্য আমার স্বামী আমাকে তালাক দিয়েছেন। এখন স্বপ্না নামে একজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমাকে বাদ দিয়ে স্বপ্নœাকে নিয়োগ দিয়েছে।
মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আতিকুর রহমান বলেন, স্থগিতের কয়েকদিন পরই ওই ৪টি পদে নিয়োগ সম্পন্ন করেছি। তবে আবেদনকারী অন্যদের নিয়োগের সময় কেন ডাকা হয়নি এ বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি ফোন কেটে দেন।
তাড়াশ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস ছালাম বলেন, মাদ্রাসার আলিম শাখাটি আমাদের মধ্যে পড়ে না।
নিয়োগ বোর্ডের ডিজির প্রতিনিধি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) আবু নাইমের মোবাইলে একাধিকবার কল করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
"