নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০৫ মে, ২০২৪

নাগেশ্বরীতে অভিযোগ

চিকিৎসার ভুলে রোগীর মৃত্যু, লাশ নেওয়ার চাপ কর্তৃপক্ষের

ছবি: সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ভুলে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ তোলায় স্বজনদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মরদেহ দ্রুত নিয়ে যেতে চাপ দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের বিন্নাবাড়ী এলাকার মেকাইল মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৬) ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। এর মধ্যে গলায় সমস্যা দেখা দিলে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে চলে আসেন। পরে গত ২৮ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে আবারও ভর্তি হন নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকালে হাসপাতালে চিকিৎসক পরিদর্শনকালে রোগীকে রাতে সিডিল ইনজেকশন দেওয়ার নিদের্শনা দেন। নির্দেশনা অনুযায়ী রাত সাড়ে ৭টার দিকে রফিকুলকে ইনজেকশন দেন নার্স (সেবিকা)। আধা ঘণ্টা পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা সাহেব আলী পরিদর্শনে এসে ওই রোগীকে ইনজেকশন মাইলাম ও ইনজেকশন পারকিনিল দিতে বলেন। রাত সাড়ে আটটায় ইনজেকশন দুটি তার দুই হাতে দেওয়া হয়। এর কিছুক্ষণ পরে রোগী মারা যায় বলে জানা যায়।

মারা যাওয়া রফিকুলের স্ত্রী সালেহা জানান, গলার সমস্যায় রফিকুলকে নাগেশ্বরী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইনজেকশন দেওয়ার পর সে মারা যায়। অভিযোগ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে মামলা হবে। রোগী কাটাছেঁড়া করবে। পরে মরদেহ নিয়ে চলে আসেন বলে জানান তিনি।

রফিকুলের বড় ভাই আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমি ওখানে ছিলাম। ডাক্তার আসার পর রফিকুলকে ইনজেকশন দিল। ১৫ মিনিট পর সে মারা গেল। সে ওতোটা অসুস্থ ছিল না।’

বোন জামাই আশরাফ আলী বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ করায় লাশ দেওয়া হবে না এবং লাশের পোস্টমোর্টেম করা হবে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রফিকুলের বাবা মেকাইল হোসেন বলেন, ‘ডাক্তার তিনটা ইনজেকশন কেন দিল। ডাক্তারের বিচার চাই আমি।’

নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক সাহেব আলী বলেন, ‘তাকে আগে সিডিল ইনজেকশন দেওয়া ছিল আমি দেখিনি। রোগীর পেটে ব্যথা ছিল। এ কারণে পরে দুটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। এতে রোগী মারা যাওয়ার কথা নয়। হয়তো অন্যকোন সমস্যা ছিল। রোগীর লোকজন সেটি গোপন রেখেছে হয়তো।’ ইনজেকশনের কারণে রোগী মারা যায়নি বলে দাবি এ চিকিৎসকের।

নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কেন তিনি এ ধরণের চিকিৎসা দিয়েছেন সেটা ওই চিকিৎসকই বলতে পারবে। রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন মনজুর-ই-মুর্শেদ বলেন, রোগীর স্বজনরা অভিযোগ দিয়ে থাকলে কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রোগীর সকল কাগজপত্র না দেখে এ বিষয়ে কিছু বলা ঠিক হবে না বলে জানান তিনি।

পিডিএস/আরডি

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কুড়িগ্রাম,নাগেশ্বরী
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close