আরিফুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম

  ২০ জানুয়ারি, ২০২০

কৃষি কার্ড কিনে গুদামে ধান দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা!

কুড়িগ্রামের উলিপুরে অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে প্রকৃত কৃষকগণ সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে পারছেন না কৃষকের পরিবর্তে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গুদামে ধান নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার বিকাল ৫টায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা খাদ্য গুদামে গিয়ে এর সত্যতাও পাওয়া গেছে। ফলে কৃষকদের কাছে ন্যায্য মূল্যে ধান ক্রয়ের মাধ্যমে প্রকৃত কৃষককের লাভবান করার সরকারি উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে।

জানা গেছে, সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষক যেন ভালো মুনাফায় ধান দিতে পারেন সে লক্ষ্যে সারাদেশের মত উলিপুরেও খাদ্য অধিদফতর ইউনিয়ন পর্যায়ে লটারির ব্যবস্থা করে, এতেও কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরছে না। লটারিতে বিজয়ী কৃষকদের কাছ থেকে ১ টন করে ধান ক্রয় করার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু লটারিতে তালিকাভুক্ত কৃষকের কৃষি কার্ড ১ থেকে দেড় হাজার টাকায় কিনে নিচ্ছেন প্রভাবশালী মহলের আর্শিবাদপুষ্ট ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা। আর খাদ্য বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় এই অনিয়মন হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফলে প্রকৃত কৃষকদের লাভবান করা সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যহত হচ্ছে।

উপজেলা খাদ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে গত বছরের ২০ নভেম্বর থেকে আমন ধান সংগ্রহ শুরু হলেও এ উপজেলায় তা শুরু হয় ১৯ ডিসেম্বর থেকে। উপজেলায় সরকারিভাবে আমন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৫৬৪ মেট্রিকটন। এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত ৩৯৯ মেট্রিকটন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। খাদ্য গুদামের একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালী মহলের আর্শিবাদপুষ্ট ও গুদাম কর্মকর্তাদের যোগসাজশে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে ট্রলি বোঝাই ধান এনে গুদামে ঢুকাচ্ছেন।

রোববার বিকালে উলিপুর খাদ্য গুদামে গিয়ে দেখা যায়, ৮-১০টি ট্রলিতে করে ধান গুদামে ঢুকানো হচ্ছে। এ সময় সেখানে কোন কৃষকের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। কৃষকদেও পরিবর্তে সেখানে ব্যবসায়ীদের দেখা গেছে। ওই সময় সাংবাদিক দেখে মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে অনুরোধ করে বুঝানোর চেষ্টা করেন, এ ধরনের কাজ আর করবেন না। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন ব্যবসায়ী এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন।

খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের কাছে গুদামে ৮-১০টি ট্রলি েেবাঝাই ধানের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রথমে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখবো।’ পরবর্তীতে তিনি মুঠোফোনে জানান, ঘটনার সত্যতা পেয়ে ধান বোঝাই ট্রলি গুলো গুদাম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার বর্মনের মুঠোফোনে বার বার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদের বলেন, ‘বিষয়টি জানা মাত্র উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে এ ব্যাপাওে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামীতে এ ধরণের ঘটনা যেন না ঘটে সে ব্যাপারেও উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close