ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

কুমিল্লার কাছে বিধ্বস্ত খুলনা

টানা পাঁচ ম্যাচ ব্যর্থতার পর জ্বলে উঠল লিটন দাসের ব্যাট। ফিফটি না পেলেও তার আগ্রাসী শুরু গড়ে দিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের জুতসই পুঁজির ভিত। দেড়শোর চ্যালেঞ্জ দিয়ে সম্মিলিত বোলিং আক্রমণে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে বড় জয় পেয়েছে তারা। গতকাল বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিপিএলের ম্যাচ কুমিল্লা জিতেছে ৩৪ রানে। আগে ব্যাটিং বেছে কুমিল্লার করা ১৪৯ রানের পুঁজির জবাবে ১১৫ পর্যন্ত থামে খুলনা। দলের দেড়শো ছুঁইছুঁই পুঁজিতে বড় অবদান অধিনায়ক লিটনের। ২ চার, ৪ ছক্কায় ৩০ বলে ৪৫ করেন তিনি। এ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিন নম্বরে উঠে এল বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। প্রথম চার ম্যাচ জেতার পর টানা দুই হারে খুলনা নেমে গেল চারে।

দেড়শো রানের লক্ষ্যে এনামুল হক বিজয় ঝড়ো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন। ৩ চার, এক ছক্কায় ১২ বলে ১৯ করে আলিস আল ইসলামের সোজা বলে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান খুলনা অধিনায়ক। তিনে নেমে আরো একবার ব্যর্থ আফিফ হোসেন। ৯ বল খুইয়ে ৫ রান করে সহজ ক্যাচে বিদায় নেন উইল জ্যাকসের বলে। আকবর আলি ক্রিজে এসেই ক্যাচ দিয়েছিলেন। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে পয়েন্টে খুশদিল শাহ ক্যাচ ফেলে দিলেও বেশি আগানো হয়নি তার। মোস্তাফিজের বলেই ফ্লাই স্লিপে ধরা দেন ৫ রান করে।

তানবীর ইসলামের বলে পারভেজ হোসেন ইমন উইকেটের পেছনে ধরা দিলে ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে কুমিল্লা। এক পাশে উইকেট পতনের স্রোতে স্ট্রাইক পাচ্ছিলেন না এভিন লুইস। স্ট্রাইক পেয়ে এক ছক্কা মেরেই থেমে যান ক্যারিবিয়ান বিস্ফোরক ব্যাটার। নবম ওভারে ১৪ বলে ১০ রান করে আমির জামালের বলে ক্যাচ তুলে দেন বাঁহাতি ওপেনার। তার বিদায়ে ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় খুলনা। বাকিটা সময়ে ম্যাচে ছিল না কোনোই উত্তাপ। খুলনার বাকি ব্যাটাররা হারের ব্যবধান কমিয়েছেন।

দুপুরে টস জিতে ব্যাটিং বেছে ভালো শুরু পায় কুমিল্লা। আগের পাঁচ ম্যাচে ৩৭ রান করেছিলেন লিটন। চরম রান খরায় থাকা কুমিল্লা অধিনায়ক এদিন ফিরে পান ছন্দ। চার-ছয়ের ঝলকে পাওয়ার প্লে কাজে লাগান তিনি। আরেক প্রান্তে রিজওয়ান ছিলেন মন্থর। ফলে লিটন ঝড়ের পর রানের চাকা যেভাবে চলার কথা সেভাবে চলেনি। লিটন থামেন দশম ওভারে। নাসুম আহমেদের আর্ম বলে বোল্ড হয়ে ৩০ বলে ৪৫ রান করে বিদায় নেন ডানহাতি ওপেনার। খানিক পর বিদায় নেন রিজওয়ানও। ২৮ বল খুইয়ে ২১ রান করা পাকিস্তানি ব্যাটারকেও ফেরান নাসুম। ইংলিশ ব্যাটার উইল জ্যাকস আগের রাতে দলে যোগ দিয়ে খেলতে নেমেও সুবিধা করতে পারেননি। ২৭ বলে ২২ রান করে বিদায় নেন ওয়াসিম জুনিয়রের বলে। এদিন তাওহিদ হৃদয় ব্যাটও ছিল নিষ্প্রভ। কুমিল্লার রান দেড়শোর কাছে যায় মূলত জাকের আলি অনিক আর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ছোট দুই ক্যামিওতে। জাকের ৮ বলে করেন ১৮, অঙ্কন ১০ রান আনেন ৫ বলে। শেষ পর্যন্ত এ পুঁজিই হয়ে যায় ম্যাচ জেতার জন্য যথেষ্ট।

এদিকে বিশাল অঙ্কের পারিশ্রমিক দিয়ে পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ানকে এবারও দলে নিয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এ আসরে কুমিল্লার হয়ে পাঁচ ম্যাচ খেললেন তিনি, কিন্তু একটি ম্যাচেও রাখতে পারেননি অবদান। মন্থর ব্যাটিং ও রান না পাওয়া মিলিয়ে তার বেহাল দশা ভুগিয়েছে দলকে। পিএসএলের জন্য পাকিস্তান ফিরে যাওয়ার আগে বুধবারই শেষ ম্যাচ খেলেন রিজওয়ান। খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে আউট হন ২১ রান করে। এ ২১ রান করতে তিনি খুইয়ে ফেলেন ২৮ বল।

পাকিস্তানি টপ অর্ডার ব্যাটার পাঁচ ম্যাচে করেন ৮৫ রান। একবার অপরাজিত থাকায় তার গড়টা হয়েছে ২১.২৫। কিন্তু স্ট্রাইকরেট মাত্র ৮২.৫২ বলে দেয় তার দুর্দশা। বিপিএলের ড্রাফটের বাইরের খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকের অঙ্ক কখনই প্রকাশ করে না ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, এবার প্রতি ম্যাচের জন্য রিজওয়ানের সঙ্গে ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের চুক্তি ছিল। অর্থাৎ পাঁচ ম্যাচ খেলে দেড় লাখ মার্কিন ডলার পাচ্ছেন তিনি। কিন্তু মাত্র ৮৫ রান করায় প্রতি রান প্রতি হিসেবে প্রায় ২ লাখ টাকা করে মূল্য দাঁড়াচ্ছে তার। গত বিপিএলে অবশ্য বেশ ভালোই অবদান রেখেছিলেন তিনি। ১০ ম্যাচে ৫০.১৪ গড় আর ১২৬.২৫ স্ট্রাকরেটে করেন ৩৫১ রান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close