ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

অনূর্ধ্ব-১৯ উইমেন’স সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ

শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে বাংলাদেশ-ভারত

আজ ফাইনাল

বয়সভিত্তিক এ প্রতিযোগিতার চার আসরে তিনবারই চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ‘চারে চার’ হয়নি, ২০২২ সালে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে হেরে যাওয়ায়। এ দুই দল এবার ফের মুখোমুখি। যদিও কোনো কোচের কণ্ঠে প্রতিশোধের দামামা বাজছে না, কিন্তু শিরোপা লড়াইয়ের উত্তাপ তাতে কমছে না একটুও। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আজ বৃহস্পতিবার সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নামবে দুই দল। ম্যাচটি মাঠে গড়াবে সন্ধ্যা ৬টায়।

এবারের রাউন্ড রবিন লিগে দেখা হয়েছিল দুই দলের, সেখানে বিজয়ের হাসি বাংলাদেশের। সাগরিকার দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের গোলে ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল সাইফুল বারী টিটুর দল। শেষ মুহূর্তের গোলে হারলেও ওই ম্যাচে আক্রমণে ছড়ি ঘুরিয়েছিল ভারতই। অনেক সুযোগ নষ্ট করার কারণেই সেদিন লক্ষ্যপূরণ হয়নি তাদের। এবার ফাইনাল নিয়ে যদিও দলটির কোচ শুক্লা দত্তের কণ্ঠে প্রতিশোধের ঝাঁঝ নেই, কিন্তু ওই হারের ক্ষত যে এখনো শুকায়নি, তা পরিষ্কার।

প্রতিশোধ এ মানসিকতা আমার মধ্যে নেই। খেলতে এসেছি, খেলব। আবার বাংলাদেশের সঙ্গে দেখা হচ্ছে (ফাইনালে), সেটাই বড় ব্যাপার। আমারও ভালো লাগবে বাংলাদেশের সঙ্গে আবারও খেলতে, একটা ম্যাচ ওদের বিপক্ষে খেলেছি (হেরেছি), দেখা যাক, ফাইনালে কী হয়।

২০২২ সালে অনূর্ধ্ব-১৮ বছর বয়সিদের আসরে রাউন্ড রবিন লিগ ও ফাইনাল- দুই ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে একই ব্যবধানে (১-০) হেরেছিল বাংলাদেশ। সেই হারের প্রতিশোধ নেওয়ার হুঙ্কার ছাড়লেন না টিটুও। অতীত প্রসঙ্গ আমি আসলে খুব একটা অনুভব করি না, যেহেতু আমি ওই সময় দায়িত্বে ছিলাম না। আপনি যদি কোথাও না থাকেন, তখন আপনি ওই সময়ের উত্তাপটা অনুভব করবেন না। এটা ভিন্ন টুর্নামেন্ট, তুলনামূলক ভালো দলটিই জিতবে। বাংলাদেশ কোচের পরের কথাগুলো অবশ্য এতটা সাদামাটা নয়। সেখানে ভারতের প্রতি সমীহ থাকলেও তাদেরকে হারিয়ে শেষটা রাঙানোর লক্ষ্য বেশ স্পষ্ট। ভারতের বিপক্ষে প্রথম যে ম্যাচটা খেলেছিলাম, সেখানেই তো বুঝেছিলাম কঠিন প্রতিপক্ষ। খুবই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ হয়েছিল ওটা। ফাইনালেও ভারতকে সমীহ করতে হবে। ওভাবে নিজেদের খেলাটা খেলতে হবে। ফাইনাল এমন একটা বিষয়- আপনার শরীর চলবে না, কিন্তু মন চাইবে ভালো করার। ভারত ক্লান্ত থাকলেও ওভাবেই আসবে, আমাদের ওভাবেই খেলতে হবে। ফাইনালে যে কোনো দলই জিততে পারে। যারাই চ্যাম্পিয়ন হয়, সেরা দলকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হতে হয়।

এবারের আসরে গোলের পরিসংখ্যানে ভারতের আক্রমণভাগ সবচেয়ে শক্তিশালী। তিন ম্যাচে তারা গোল দিয়েছে ১৪টি, হজম করেছে মাত্র ১টি। সেখানে তিন ম্যাচে বাংলাদেশ ৮টি দিয়ে খেয়েছে ১টি। রাউন্ড রবিন লিগে হ্যাটট্রিক উপহার দিয়েছেন ভারতের পুজা, শিবানি দেবি। ৪ গোল নিয়ে পুজা গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ গোল করেছেন সাগরিকা; বাকি পাঁচ গোল করেছেন- ঐশি খাতুন (২টি), মুনকি আক্তার, নুসরাত জাহান মিতু ও তৃষ্ণা রানী। সবশেষ ভুটানের বিপক্ষে ৪-০ গোলে বাংলাদেশ জিতেছে বেঞ্চের ৯ খেলোয়াড় দিয়ে একাদশ সাজিয়ে। তাই ফাইনালে সবাইকে সতেজ অবস্থাতেই পাচ্ছেন কোচ। টিটুর মনে হচ্ছে, অভীষ্ট লক্ষে পৌঁছুতে হলে মাঝমাঠেই ভেস্তে দিতে হবে ভারতের আক্রমণ। পাশাপাশি স্বীকৃতি পাওয়ার তাড়নার বীজও তিনি বুনে দিচ্ছেন মেয়েদের মনে। ওদের আক্রমণভাগে কয়েকজন দ্রুতগতির খেলোয়াড় আছে। মাঝমাঠে ওদের পাসগুলোর জোগান নষ্ট করে দিতে হবে। তবে ফুটবল মজার খেলা (ফানি গেম)। অনেক কিছুই এখানে হতে পারে। কিন্তু শিরোপা যেন আমাদের হাতছাড়া না হয়, আমাদের তো এটার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টাই থাকবে। আপনারা জানেন, মেয়েদের স্বীকৃতিরও একটা ব্যাপার আছে। চ্যাম্পিয়ন হলেই ভালো স্বীকৃতি পায়, প্রধানমন্ত্রীও স্বীকৃতি দেয়; মেয়েরা সেই সুযোগটা তো নিতে চাইবেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close