ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪

খেলায় মনোযোগ দেওয়াই ভালো : মাশরাফি

মাশরাফি বিন মুর্তজা দেশের সবচেয়ে সফল ওয়ানডে অধিনায়ক। দেশের ক্রিকেট নায়কদের একজন। সব ফরম্যাটের নেতৃত্ব ছেড়েছেন এখনো দেননি অবসরের ঘোষণা। জাতীয় দলে তার আর সুযোগ হবে না এটা নিশ্চিতই। বয়স ৪০ ছুঁয়েছে, এরপরও ক্রিকেট চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। খেলছেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল) দল সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক হয়ে। একের পর এক ইনজুরি এই পেসারকে দমাতে পারেনি। এখনো মাঠে বল করেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। বিপিএলে এই দৃশ্য দেখার পর দেশের দুই সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান ও মোহাম্মদ আশরাফুল করেছেন কঠিন সমালোচনা। তাদের মতে মাশরাফির এভাবে খেলা বিপিএলের মান নষ্ট হচ্ছে! এমন সমালোচনার পর কী করবেন মাশরাফি? ধারণা করা হচ্ছিল সিলেট পর্বে তিনি খেলবেন না।

কিন্তু গত শুক্রবার তিনি খেলেছেন। এরপর সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন নিজের ক্রিকেট ভবিষ্যতের কথা। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন পা ঠিক থাকলে খেলবেন পরের বিপিএলেও। তিনি বলেন, ‘আমার পা যদি ঠিক থাকে হতে (আগামী আসরে খেলা) পারে। আমি আমার মতো করেই করতে চাই। এ বছর যদি ফুল লাস্ট ইয়ারের মতো যদি ফুল খেলতে পারতাম তাহলে চিন্তা করব। যেহেতু ফুল করতে পারছি না, আমি চিন্তা করব পরে। আর টপিক শুধু আমার বিষয় না। আপনার খেলার জন্য হয়তো কিন্তু ছয়টা প্রশ্ন পেলাম আমাকে নিয়ে। মাশরাফি এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটের কিছু না। আপনাদের চিন্তা করতে হবে। বাংলাদেশ ক্রিকেটে যারা সামনের দশ বছর সার্ভিস দেবে। মানুষ যা খায়, তা খাওয়াইতে গেলে হবে না। বাংলাদেশ ক্রিকেটে কী উন্নতি হবে সেগুলো চিন্তা করতে হবে আপনাদের। এছাড়াও সেগুলোই মানুষকে জানাতে হবে।’

মাশরাফি বিন মর্তুজা নিজের ওয়ানডে অধিনায়কের নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকেই। কিন্তু ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেননি। তারপর থেকেই অপেক্ষা মাশরাফি কবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলবেন। কিন্তু সেটি করেননি। খেলে যাচ্ছেন বিশেষ করে বিপিএলে। তাই ঘুরেফিরেই চলে আসে তার অবসর প্রসঙ্গ। যা নিয়ে তিনি আবারও নিজের পরিকল্পনার কথা জানালেন স্পষ্ট করে। তিনি বলেন, ‘আমি এই প্রেস কনফারেন্স রুম থেকেই অবসরে গিয়েছি। তখনো আমি বলেছি, আমি কিন্তু খেলব। আন্তর্জাতিক তো সেদিনই স্টপ করেছি। ঘরোয়া বা ফ্র্যাঞ্চাইজিতে দল কী চায়, সেটার ওপর নির্ভর করে। এখানে তো ক্যারিয়ারের বিষয় না। এখানে আপনি এনজয় করছেন। টিম ম্যানেজম্যান্ট যদি আপনাকে চায় তাহলে দলে নেবে।’ মাঠের বাইরের কোনো সমালোচনা এখনই গায়ে মাখতে নারাজ দেশের অন্যতম সেরা এই সাবেক অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘এগুলো নিয়ে চিন্তা করার সময় আমার নেই। পারফরম্যান্স এমন একটা জিনিস আমি তো লাস্ট দুই ম্যাচ বোলিংই করিনি, অলমোস্ট। ক্লিয়ারলি মেসেজ ছিল যে আমি পারব না। আজ একটু ভালো লাগছিল বলে করেছি। এটা আমি যেহেতু খেলছি, আমাকে এভাবেই খেলতে হবে। আমার কাজ হচ্ছে বোলিং করা, বোলিং খারাপ করলে মাথায় নিতে হয় যে আমি খারাপ করছি। ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স খারাপ হতেই পারে। বাইরের আলোচনায় আপনি কামব্যাক করতে পারবেন না। আপনাকে নিজেকেই ফাইন্ড আউট করতে হবে। আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেও এমন না যে আমি সবসময় পারফর্ম করেছি। খারাপ গিয়েছে, কোনোদিন ভালো গিয়েছে। সব খেলোয়াড়কেই সমালোচনা নিয়েই খেলতে হবে। এটার জবাব দেওয়ার কিছু নেই। জবাব দেওয়াও যায় না। বরং খেলায় মনোযোগ দেওয়া ভালো।’

জাতীয় সংসদের টানা দুইবার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এবার তিনি সংসদের হুইপও। কিন্তু মাঠের মাশরাফি তার ক্রিকেট মাঠের জীবনটাকেই বেশি উপভোগ করেন। তাকে নিয়ে সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল কঠিন সমালোচনা করলেও তা নিয়ে কোনো মন্তব্যও করতে রাজি নয় তিনি। এমনকি দেখিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও নেই। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো দিনও আমার ক্যারিয়ারে কাউন্টার অ্যাটাক করিনি। অবশ্যই খেলাধুলায় মানুষ ভালোটাই চায়। সবসময় যারা জয়ী হয় তাদেরই চিন্তা করে, ওদেরই মনে রাখে। এটা খুব স্বাভাবিক। শুধু ক্রিকেটে নয়, লাইফের যেকোনো ক্ষেত্রেই দেখবেন, যদি আপনি ভালো করেন, সেটাই মানুষ এসে বলবে। খারাপকে কেউ কখনো গ্রহণ করে না। সুতরাং এখানে উত্তর দেওয়ার কিছু নেই। এখানে আমরা যারা খেলছি, তারা চেষ্টা করছি সাধ্য মতো। এই অবস্থায় যেহেতু বোলিং করতে পারছি না, সেহেতু না খেললেই ভালো হতো। তবে দলের চাওয়া, সব কিছুর একটা ব্যাপার থাকে। সেটা নিয়ে আমি ডিটেইল কিছু বলিনি। আজকে চেষ্টা করেছি, ভালো লাগলে বোলিং করব। পা টা একটু ভালো লাগছিল। আর শর্ট রান আপে তো আমি গত ৫-৬ বছর ধরেই বোলিং করছি। আমার তো আর পেস ম্যাটার করে না। আর ফুল রান আপে করলেও একই পেস হয়। লাস্ট ইয়ারেও আমি শর্ট রান আপে করেছি অথবা এর থেকে একটু বড় রান আপে, ১৫ উইকেট পেয়েছি। এটাই আপনি চেষ্টা করতে পারেন। এর বেশি কিছু না।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close