ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২৪

উড়ছেন ইমরুল কায়েস

‘পারছি না, এটা আমার ব্যর্থতা’

ব্যাটিং ব্যর্থতার দায় নিচ্ছেন লিটন কুমার দাস তবে অধিনায়কত্বের চাপ এতে প্রভাব ফেলছে বলে মনে করেন না কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক।

স্রেফ দুটি ইনিংস দিয়েই কারো ফর্মহীনতা বিচার করা কঠিন। তবে বিপিএলে এবার দুটি ম্যাচেই লিটন কুমার দাসের ব্যাটিং এতটাই অচেনা ছিল, তা চোখে লাগছে কড়াভাবেই। তিনি নিজেও অনুভব করছেন, ব্যাটিংয়ে সুর-তাল-লয় ঠিক মিলছে না। ব্যর্থতাটুকু মেনে নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স অধিনায়কের আশা, অনুশীলনের পথ ধরে বাজে সময় কাটিয়ে উঠবেন তিনি।

এবারের বিপিএলে প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে একটি করে ছক্কা ও চার মারলেও লিটন ১৩ রান করেন ১৯ বল খেলে। পরের ম্যাচে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ৯ ওভার পর্যন্ত টিকে থেকে আউট হন ১৯ বলে ১৪ রান করে।

দুটি ম্যাচেই যতক্ষণ উইকেটে ছিলেন খুব একটা ছন্দে দেখা যায়নি তাকে। চেনা সেই আগ্রাসী রূপ, স্টাইলিশ সব শট বা সাবলীল ব্যাটিং দেখা যায়নি খুব একটা।

প্রথম ম্যাচে হারলেও পরের ম্যাচে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে বরিশালকে হারিয়ে দেন লিটনরা। তবে ম্যাচের পর নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশাটা লুকালেন না তিনি।

‘না, অবশ্যই পারছি না (গুছিয়ে ব্যাটিং) আমি যে ধরনের ব্যাটিং করি, শেষ দুই ম্যাচে একটুও পারিনি। তবে চেষ্টা করছি। অনুশীলন করছি। দেখা যাক, কী হয়।’

বিপিএলে কুমিল্লার হয়ে খেলছেন ষষ্ঠ মৌসুম চলছে তার। তবে এবারই প্রথম পেলেন নেতৃত্বের গুরুভার। এ ধরনের টুর্নামেন্টে অধিনায়কত্ব মানে এমনিতেই একটি চাপ। কুমিল্লা সেখানে টুর্নামেন্টের সফলতম দল। তিনবারের চ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক ইমরুল কায়েসকে সরিয়ে এবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লিটনকে। চাপ তাই একটু বাড়তিই থাকার কথা তার।

লিটন অবশ্য বলছেন, নতুন এই দায়িত্বের সঙ্গে তার ব্যাটিং ফর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। ‘একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে যখন অধিনায়কত্ব করবেন একটি বড় দলের হয়ে, এ রকম কিছু ম্যাচ থাকে অবশ্যই যে জিততে হবে, সবাই চায় জিততে বড় ইভেন্টে বড় দলের সঙ্গে একটু চাপ তা থাকবেই। তবে এটা এমন নয় যে অধিনায়কত্ব আমার নেতৃত্বে প্রভাব ফেলছে। আমি পারছি না, এটা আমার ব্যর্থতা। চেষ্টা করছি, কোনোভাবে হয়তো বের হয়ে যাব এখান থেকে।’

বের হওয়ার চেষ্টায় লিটনের পরের লড়াই সিলেট পর্বের প্রথম দিনে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে। ইমরুল কায়েসের থেকে এবার নেতৃত্বের ভার সরে গেছে। ব্যাটসম্যান ইমরুলকেও চেনা যাচ্ছে নতুন করে। সাবেক অধিনায়কের এমন ফর্ম দেখে উচ্ছ্বসিত ভিক্টোরিয়ান্সের নতুন অধিনায়ক লিটন কুমার দাস। তার আশা, টানা দুই ফিফটিতে আসর শুরু করা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের ব্যাটে রানের ধারা চলতে থাকবে টুর্নামেন্টজুড়েই।

কুমিল্লাকে তিনটি শিরোপা জয়ে নেতৃত্ব দিলেও এই তিন আসরের কোনোটিতেই ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন না ইমরুল। ২০১৯ বিপিএলে ১৩ ইনিংসে কোনো ফিফটি ছিল না তার। ১৬.৬৩ গড়ে রান করেছিলেন ১৮৩।

পরের আসরে তাকে দলে নেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ক্যারিয়ারের সেরা বিপিএল কাটান তিনি সেবারই। ৪ ফিফটিতে ৪৪২ রান করেন ৪৯.১১ গড়ে। পরের দুই আসরে আবার কুমিল্লায় ফিরে সেই আগের মতোই নেতৃত্ব আর ব্যাটিংয়ের পথ দুদিকে যায় বেঁকে।

২০২২ বিপিএলে কুমিল্লার শিরোপা জয়ের পথে ১১ ইনিংসে ১৯৬ রান করেন তিনি ১৯.৬০ গড়ে। এর মধ্যে এক ম্যাচেই করেন ৮১। গত বিপিএলেও ট্রফি উঁচিয়ে ধরেন তিনি অধিনায়ক হিসেবে। তবে ব্যাট হাতে ১৩ ইনিংসে তার রান ছিল ১৬.৭৬ গড়ে ২১৮।

একটি ব্যাপার অবশ্য তার ঢাল হিসেবে দাঁড় করানো যায়, ব্যর্থতার এই তিন আসরেই প্রিয় পজিশন ওপেনিংয়ে তিনি খেলতে পারেননি। দলীয় সমন্বয়ের দাবি মেটাতে অধিনায়ক হিসেবে বারবার ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তাকেই। তার ব্যাটিং পজিশনও নির্দিষ্ট ছিল না বেশিরভাগ সময়। তিন নম্বর থেকে শুরু করে মিডল অর্ডারের নানা পজিশনে তিনি খেলেন। অনেক ম্যাচেই বড় রান করার যথেষ্ট সময় সুযোগই পাননি।

ব্যাটিং ফর্ম নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণেই এবার তাকে অধিনায়ক রাখেনি কুমিল্লা। সব ম্যাচের একাদশে তিনি জায়গা পাবেন কি না এটা নিয়ে সংশয় ছিল খোদ কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের। কিন্তু প্রথম দুই ম্যাচেই ইমরুল নিশ্চিত করেছেন, তাকে একাদশের বাইরে ঠেলে দেওয়া কঠিন হবে।

এবার প্রথম ম্যাচে ওপেনিংয়ের সুযোগ পান তিনি দীর্ঘদিন পর। সেই ম্যাচে করেন ৫৬ বলে ৬৬। এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ান দলে যোগ দেওয়ায় আবার ইমরুলকে হারাতে হয় তার প্রিয় জায়গা। তবে চারে নেমেও ৪১ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলে সফল রান তাড়ার পথে এগিয়ে নেন দলকে।

আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির পর পাকিস্তান সুপার লিগে খেলতে চলে যাওয়ার কথা রিজওয়ানের। তখন আবার ওপেনিংয়ের সুযোগ আসতেও পারে ইমরুলের সামনে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close