ক্রীড়া ডেস্ক

  ১৫ জুলাই, ২০২০

রিয়াল-বার্সার সমীকরণ

শিরোপাছোঁয়া দূরত্বে রিয়াল

ম্যাচ শেষে জিনেদিন জিদান ডাগআউটে হুঙ্কারই ছাড়লেন একরকম। সাধারণত চরম চাপের মুহূর্তেও ঠা-া থাকেন তিনি। এই হুঙ্কার বোধহয় জিদানের স্বস্তির। ম্যাচের ১৬ মিনিটের ভেতর ২ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর রিয়াল মাদ্রিদ জয়ের পথে এগিয়ে গিয়েছিল অনেকটাই। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে হুট করে গ্রানাডা ১ গোল শোধ করে দিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলে। শেষদিকে থিবো কোর্তোয়ার সেভ আর সার্জিও রামোসের গোললাইন ক্লিয়ারেন্স আর পথ হারাতে দেয়নি রিয়াল মাদ্রিদকে। গ্রানাডার চাপ সামলে নবম জয়ে রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে গেছে শিরোপা জয়ের পথে। আগামী শুক্রবার ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে জয় পেলেই ৩৪তম বারের মতো স্পেনের শিরোপা ঘরে তুলবে রিয়াল মাদ্রিদ। জিদান এখন হুঙ্কার ছাড়তেই পারেন!

জুনে লা লিগা আবার শুরু হওয়ার পর সম্ভবত সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাটা গ্রানাডার মাঠে দিয়ে আসল রিয়াল মাদ্রিদ। অথচ ম্যাচের শুরুতে এমন কোনো ইঙ্গিতই ছিল না। রিয়াল মাদ্রিদ অবশ্য শেষ পর্যন্ত ডিফেন্ড করেছে চ্যাম্পিয়নদের মতোই। তাতে গ্রানাডায় ভর করে ম্যাচের শেষদিকে স্বপ্ন দেখতে থাকা বার্সা সমর্থকরা হতাশই হয়েছেন।

ম্যাচের ১০ মিনিটে ফার্লন্ড মেন্ডির অদ্ভুত গোলে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল। বক্সের ভেতর ঢুকে বাইলাইন থেকে কাছের পোস্টে বুলেট গতির শট নিয়েছিলেন মেন্ডি। গ্রানাডা গোলরক্ষক সেই শট ঠেকাতে পারেননি, প্রায় জিরো ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে মেন্ডি পেয়ে যান রিয়ালের জার্সিতে প্রথম গোল।

মিনিট পাঁচেক পর করিম বেনজেমাও যোগ দেন তার সঙ্গে। লিগের ১৯তম গোলটি করে রিয়ালকে চোখের পলকেই দুই গোলের লিড এনে দিয়েছিলেন তিনি। মিডফিল্ডে লুকা মদ্রিচ আর ইস্কোর দারুণ সমন্বয়ের পর বেনজেমা বল পেয়েছিলেন গ্রানাডার বক্সের বাইরে। কাট করে ভেতরে ঢুকে ডান পায়ের শটে আরো একবার লক্ষ্যভেদ করেন বেনজেমা।

বেনজেমা অবশ্য আরেকবার রিয়ালকে এগিয়ে দিতে পারতেন প্রথমার্ধে। সে দফায় অবশ্য কাছের পোস্টে বেনজেমার শট ঠেকিয়ে কিছুটা পাপমোচন করেছেন গ্রানাডা গোলরক্ষক রুই সিলভা। দাপুটে প্রথমার্ধের পর রিয়াল খেই হারিয়েছিল দ্বিতীয়ার্ধের ৫ মিনিটেই।

কাসেমিরো মিডফিল্ডে স্বভাববিরুদ্ধভাবে বল পজেশন হারিয়ে ফেলার পর আক্রমণে ওঠে গ্রানাডা। দারুণ এক থ্রু পাস ধরে বক্সের ভেতর বাম পাশ দিয়ে ঢুকে পড়ে ডারউইচ মাচিস। এগিয়ে আসা থিবো কোর্তোয়া ৫ ম্যাচ পর গোল খেয়েছেন তার কাছে। কোর্তোয়ার জন্য অবশ্য বেশি হতাশার গোল খাওয়ার ধরনটা। মাচিসের শট কোর্তোয়ার দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে ঢুকে রিয়ালের জালে।

রিয়াল এরপর গ্রানাডার লাগাম টেনে ধরাতেই মন দিয়েছে বেশি। লুকা মডরিচ-টনি ক্রুসরা ছিলেন দারুণ। ৮০ মিনিটের আগ পর্যন্ত তাই রিয়ালের রক্ষণে তেমন ভীতি ছড়াতে পারেনি গ্রানাডা। তবে সময় ফুরিয়ে আসার সঙ্গে কিছুটা চড়াও হয়েছিল গ্রানাডার আক্রমণ। ৮৫ মিনিটে এক আক্রমণ থেকেই দুবার গোল ফেরায় রিয়াল। প্রথমবার কোর্তোয়া করেন দারুণ এক সেভ, এরপর রামস আজিজের শট গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন রামোস।

পুরো ম্যাচে মাত্র দুটি পরিবর্তন করিয়েছেন জিদান। রদ্রিগো আর মার্কো আসেনসিও ৬৪ মিনিটে নেমেছিলেন মাঠেÑ তাতে আক্রমণে গতি বেড়েছিল রিয়ালের। ইডেন হ্যাজার্ড স্কোয়াডেই ছিলেন না। আর গ্যারেথ বেল আরো একবার নানা অঙ্গভঙ্গি করে হাস্যরস জুগিয়েছেন সাইডবেঞ্চে থেকে। আপাতত জিদানের অবশ্য তাতে তেমন কিছুই যায় আসে না। শিরোপা তো ঘরেই আসছে তার!

পরশু রাতে জয়ের পর রিয়াল মাদ্রিদের শিরোপা জয়ের পথ অনেকটাই মসৃণ। আর কোনো ম্যাচ না জিতলেও রিয়ালই চ্যাম্পিয়ন হবে। শেষ দুই ম্যাচ ড্র করলে জিনেদিন জিদানের দলের পয়েন্ট হবে ৮৫। বার্সেলোনা শেষ দুই ম্যাচ জিতলে তাদেরও পয়েন্ট হবে ৮৫।

স্প্যানিশ লা লিগায় চ্যাম্পিয়ন নির্ধারণে গোল ব্যবধান নয়, মুখোমুখি দেখায় জয়-পরাজয় বিবেচনায় আনা হয়। এবারের মৌসুমে রিয়াল বার্সার মাঠে (ন্যু ক্যাম্প) গিয়ে গোলশূন্য ড্র করে এসেছে। আর বার্সা রিয়ালের মাঠে (সান্টিয়াগো বার্নাব্যু) এসে ২-০ গোলে হেরেছে। সমীকরণ অনুযায়ী তাই তর্কাতীতভাবে চ্যাম্পিয়ন হবে রিয়াল মাদ্রিদ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close