নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ জুলাই, ২০১৭

পাসের হার বিবেচ্য নয়, মানুষ হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পরীক্ষায় কত পারসেন্ট পাস হলো আর কত পারসেন্ট পাস হলো না, তা বিবেচ্য বিষয় নয়। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হওয়াই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভবিষ্যতে এই শিক্ষার্থীদেরই দেশের নেতৃত্ব দিতে হবে। গতকাল রোববার সকালে গণভবনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এদিকে, উন্নয়নের জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা থাকার ওপর জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশের মানুষের ভেতর একটা আস্থা, বিশ্বাস ফিরে এসেছে। এই আস্থা-বিশ্বাস যেন মানুষের মনে থাকে এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে, সেদিকে সবারই লক্ষ্য রাখতে হবে এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করে দেশকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে হবে।

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের অনুলিপি হাতে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শিক্ষার অনেক সুযোগ সৃষ্টি করেছে। শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে মানুষের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, তার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকার শিক্ষাকে বহুমুখী করেছে। আমরা ক্ষমতায় আসার আগে পাসের হার কী ছিল, আর এখন কী?’ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আমরা শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছিলাম। নিরক্ষরমুক্ত দেশ গড়তে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। আজকে আমাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। আগে কম্পিউটার স্বপ্নের মতো ছিল। অনেকে চিনতোই না। আমরাই প্রথম কম্পিউটারের ওপর থেকে ট্যাক্স তুলে নিয়েছিলাম। এ ছাড়া বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারের জন্য ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় করেছিলাম। আমাদের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, আমি প্রথম করেছি। দেশে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, আমি আরো চারটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করেছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কত পার্সেন্ট পাস করল, কত পার্সেন্ট পাস করল না; সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। পড়াশোনা করবে, পাস করার জন্য প্রত্যেক ছেলেমেয়ের মধ্যে আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকতে হবে। ভালোভাবে পড়তে হবে। পড়াশোনায় মন দিতে হবে, প্রতিদিনের কোন সময়টা পড়াশোনার জন্য ভালো; সে সময়টা বেছে নিতে হবে শিক্ষার্থীদের।

তিনি বলেন, এই বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য বেশি প্রয়োজন হলো সঠিক ‘গাইডলাইন’ দেওয়া। অভিভাবকদের অনুরোধ করব-ছেলেমেয়েদের সমস্যাগুলো উপলব্ধি করা, তাদেরকে আরো একটু বেশি সময় দেওয়া। কোনোভাবেই যেন ছেলেমেয়ে মাদকাসক্তি বা জঙ্গিবাদের পথে না যায়। ছেলেমেয়ে কার সঙ্গে মিশছে, কোথায় যাচ্ছে, কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকছে কি না; এ বিষয়গুলোর দিকে নজর দিতে হবে।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের ভেতর একটা আস্থা, বিশ্বাস ফিরে এসেছে। এই আস্থা বিশ্বাস যেন মানুষের মনে থাকে এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে, সেদিকে সকলকেই লক্ষ রাখতে হবে এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবেলা করে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য খুব সুস্পষ্ট। এই বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হবে। কোনো দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র যেন এখানে স্থান না পায়, যার খেসারত বাঙালি জাতিকে বারবার দিতে হয়েছে, কোনো রকম অপশাসন, দুঃশাসন যেন জায়গা না পায়।

জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান আরো বক্তব্য দেন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম, জনপ্রশাসন সচিব মোজাম্মেল হক খান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে বাংলাদেশে হত্যা-ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরুর মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে যে আস্থাহীনতা এসেছিল, ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় এসে তা দূর করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে। কিন্তু ২০০১ সালে পুনরায় ক্ষমতায় আসতে না পারায় দেশ ‘অনেক ক্ষেত্রে’ পিছিয়ে যায়। তবে ২০০৮ সালে আবার ক্ষমতায় আসার পর তার সরকারে বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের এখন বিশ্বে ‘উন্নয়নের রোল মডেল’।

এ সময় তিনি ভিক্ষুকমুক্ত করতে খুলনা জেলা প্রশাসক সেখানকার সরকারি চাকরিজীবীদের একদিনের বেতন দিয়ে যে তহবিল গঠন করেছেন তার প্রশংসা করেন। এ ‘উদ্ভাবনী’ উদ্যোগে তার ত্রাণ তহবিল থেকে সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান।

উদ্ভাবনী চিন্তা ও জনকল্যাণের জন্য জনপ্রশাসন পদক পাওয়া সরকারি কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলন থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। এ ছাড়া স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর নানা উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist