মাহমুদ আহমদ

  ২৪ জুন, ২০১৭

রোজায় ছোট-বড় সব পাপ যাক মুছে

রমজানের একেবারে শেষ প্রান্তে আমরা। আজ ২৮তম রোজা অতিবাহিত করছি। রমজানে আমরা চেষ্টা করেছি সব ধরনের ছোট-বড় পাপ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে। জানি না, কতটুকু এতে সফল হয়েছি। আমাদের সবার উচিত হবে রমজান চলে যাওয়ার পরও যেন পাপ থেকে দূরে থাকি। কেননা, প্রতিনিয়তই আমরা নানা প্রকারের পাপ কাজে নিমজ্জিত থাকি। অনেক সময় ছোটখাটো পাপ কাজকে আমরা গুরুত্ব দেই না। পাপ ছোট হোক বা বড় সব ধরনের পাপ কাজ করাই ইসলামে নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘এবং তোমরা তোমাদের পাপসমূহকে এই কারণে গোপন করতে না যে, পরকালে তোমাদের কর্ণ, তোমাদের চক্ষু এবং তোমাদের চর্ম তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে, বরং তোমরা ধারণা করিতে যে, আল্লাহ তোমাদের অনেক কার্যকলাপ সম্বন্ধে অবগত নন যা তোমরা করছ’ (সুরা হামিম আস সাজদা, আয়াত : ২২)।

হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, হজরত আব্দুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেছেন, বায়তুল্লাহ্র নিকট দুজন কুরায়শি এবং একজন সাকাফি অথবা দুজন সাকাফি ও একজন কুরায়শি বসেছিলেন। তাদের পেটের চর্বি ছিল খুব বেশি। কিন্তু অন্তরে বুদ্ধি ছিল খুব কম। তাদের একজন বলল, তুমি কি মনে কর আমরা যা বলছি আল্লাহ তা শুনছেন? অপরজন বলল, আমরা জোরে বললে তিনি শুনতে পান, আর চুপে চুপে বললে শুনতে পান না। অপরজন বলল, জোরে জোরে বললে যদি শুনতে পান তবে চুপে চুপে বললেও শুনতে পাবেন। তখন আল্লাহতায়ালা নাজেল করলেন, তোমরা দুনিয়ার অপরাধ করার সময় যখন লুকোতে, তখন তোমাদের এ চিন্তা ছিল না যে, তোমাদের চোখ, কান, চামড়া তোমাদেরই বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে, বরং তোমরা ধারণা করছিলে যে, তোমরা যা জান এর অনেক কিছুই আল্লাহ জানেন না’ (বোখারি)। মূলত যারা পাপ কাজ করবে তাদের অঙ্গ-প্রতঙ্গই বিচার দিবসে সাক্ষ্য দেবে যে তারা কী করেছে। আর মহান আল্লাহতায়ালা সবই দেখেন ও জানেন। সেদিন পাপীদের অপকর্মের ছবি তাদের চোখেমুখেই ফুটে উঠবে, তারা ওইসব পাপকর্ম করেছে কী করেনি, এরূপ প্রশ্নের কোনোই প্রয়োজন হবে না।

ইসলাম আমাদের জীবনকে সুন্দর ও পরিপূর্ণ করতে চায়। পরিপূর্ণ জীবনের জন্য তাকওয়াই হলো পাথেয়। তাকওয়াবিহীন জীবন অসফলতার প্রতীক। মানুষ প্রতিনিয়ত পাপ করে যাচ্ছে। আর এর কারণ হলো, এখন আমাদের অবস্থা এমন হয়েছে যে, পাপ করতে করতে আমাদের কাছে পাপ করাটা কোনো খারাপ বিষয় বলে মনে হয় না। আর মনে করতে থাকি আল্লাহ হয়তো আমার এ সামান্য পাপকে দেখেন নাই বা আমাকে এর জন্য পাকড়াও করবেন না। এসব ছোট ছোট পাপকে তুচ্ছ মনে করি। আসলে যার মাঝে তাকওয়া আছে, সে তার কোনো কর্মকে খাটো করে দেখে না। বরং তার কর্মকে সে খোদার সন্তুষ্টির মাপকাঠিতে মেপে দেখে। সাহাবায়ে কেরাম আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর যুগে ছোট ছোট বিষয়কেও প্রাধান্য দিয়েছেন। তারা ওই সব বিষয়কে খোদার সন্তুষ্টির মাপকাঠিতে মেপে দেখেছেন।

সালাম দেওয়া, প্রতিবেশীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার, মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার, হাস্যবদনে সকলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করাÑএমন সব বিষয়কে তারা অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন। কিন্তু আজ আমরা এসব বিষয়ের দিকে ফিরেও তাকাতে চাই না। সব ধরনের পাপই ইসলামের আদর্শ ও তাকওয়ার পরিপন্থী। আমাদেরকে এমনভাবে জীবন পরিচালনা করতে হবে, আমাদের দ্বারা যেন কোনো ধরনের পাপ কাজ সংঘটিত না হয়। আল্লাহ করুন, রমজান থেকে আমরা যে প্রশিক্ষণ নিয়েছি, তা যেন বছরজুড়ে থাকে এবং সব পাপ থেকে যেন দূরে থাকি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist